কুলিক পক্ষীনিবাসে পাখি গণনার কাজ শুরু হল
রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসে মঙ্গলবার থেকে পাখি গণনার কাজ শুরু হল। বনদপ্তরের উদ্যোগে উত্তর দিনাজপুর জেলার তিনটি পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে এই কাজ শুরু হয়েছে। এবছর রেকর্ড সংখ্যক পাখি আসবে বলে মনে করছে বনদপ্তর। প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পাখি এসেছিল ২০১৮ সালে। সেবছরই এশিয়ার সর্ববৃহৎ পক্ষীনিবাসের স্বীকৃতি লাভ করে কুলিক।
রায়গঞ্জের অতিরিক্ত বিভাগীয় বনাধিকারিক সিতাংশু গুপ্ত বলেন, আশা করছি বিগত বছরগুলির তুলনায় এবছর পাখির সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে। রেঞ্জার প্রমিকা লামা, ডেপুটি রেঞ্জার বরুণ সাহার তদারকিতে এদিন সকাল ৭টা থেকে গণনার কাজ শুরু হয়েছে। গণনার কাজ দু’দিন ধরে চলবে। কীভাবে পাখি গণনার কাজ হয় কুলিকে? বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পক্ষীনিবাসের প্রত্যেকটি গাছে নম্বর দেওয়া রয়েছে। প্রত্যেকটি গাছের একটি ডালের মাথায় একটি করে পাখির বাসা থাকে। প্রতিটি বাসায় পাখিদের বাবা- মা ও দুটো বাচ্চা সহ সাধারণত চারটি করে পাখি থাকে। সেই হিসেবে এই গণনার কাজ হচ্ছে। গাছের সংখ্যার হিসেবে পাখির সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে গড় হিসেব ধরে। এবছর করোনা আবহে দূষণ কিছুটা কম হয়েছে। সেকারণে পরিযায়ী পাখিরা বেশি সংখ্যায় এসেছে। তাই এবছর অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর জুন মাস নাগাদ পরিযায়ী পাখির আগমন হয় কুলিকে। কিন্তু এবছর মে মাস থেকেই পাখি আসতে শুরু করে। তবে করোনার কারণে পক্ষীনিবাস বন্ধ থাকায় পর্যটকরা ঢুকতে পারেননি। এতে পাখিরা বিরক্ত হয়নি। আবার বৃষ্টিও এবার তাড়াতাড়ি শুরু হয়ে যাওয়ায় পাখিদের খাবারের জোগানের ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা হচ্ছে না। বিগত বছরগুলিতে জলের অভাবে কুলিক পক্ষীনিবাসের ভিতরে অবস্থিত ক্যানেলে পাম্পসেট দিয়ে জল দেওয়া হতো। সেই জলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছাড়া হতো পাখিদের খাবার হিসেবে। কিন্তু এবছর সেসবের প্রয়োজনই হয়নি। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে পরিযায়ী পাখি এসেছিল ৯৮ হাজার ৫৬২টি। তবে পরের বছর পাখির সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৮টি। কিন্তু গত বছর পাখি গণনায় সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৭ হাজার ৬৩১। রায়গঞ্জের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক গৌতম তান্তিয়া বলেন, কুলিক পক্ষীনিবাসে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। এতে আমরা গর্ব অনুভব করি।