আফগানিস্তানে তালিবান উত্থান ও আমেরিকার বর্বরোচিত অক্ষমতা
১৯৮৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। আফগানিস্তান থেকে শেষ সোভিয়েত ট্যাংক যখন বিদায় নিল তখনই সে দেশে মুজাহিদীন যুগ আরম্ভ। প্রায় এক দশক ধরে চলা যুদ্ধে এই মুজাহিদীন বাহিনী পর্যুদস্ত করে রুশ সেনাকে। এই মুজাহিদীন বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে শুধু করে অর্থ প্রদান করা কিংবা অনুশীলনে সাহায্য করেছিল মার্কিন ও পাকিস্তানী গোয়েন্দারা। সেই বছরই বার্লিনের দেওয়াল ভেঙে ফেলা হয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়। শীতল যুদ্ধের অবসানের সাথে সাথেই বিশ্বজুড়ে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এক লহমায় কম্যুইনিজমের বদলে বিশ্ব শান্তির প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়ায় ইসলাম। ১১ই সেপ্টেম্বরের পর বিশ্বের রাজনৈতিক মানচিত্রে ঘটে যায় ব্যাপক বদল। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে পাহাড় ঘেরা দেশ – আফগানিস্তান।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলঙ্কময় প্রস্থান আবারও উস্কে দিয়েছে আলোচনা। মার্কিন মুলুকের ক্ষমতাহ্রাস, চীনের শক্তিবৃদ্ধি এবং বদলে যাওয়া বিশ্বের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই ঘটনাক্রমের প্রভাব সম্পর্কে কানাঘুষোগুলি এখন কোলাহলে পরিবর্তিত হয়েছে। ইউরোপ, বিশেষ করে গ্রেট ব্রিটেনের জন্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও আর্থিক প্রতাপ যেন সাংস্কৃতিক বহমানতার আধার ছিল – স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য যা ছিল জরুরি। তাই, পর্দার আড়ালে থাকা এই নতুন, নির্মম, শক্তির উত্থান তাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বের অন্যান্য অংশে – যেখানে এই স্থিতাবস্থা অনুচ্চারণীয় যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল – সেখানে আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সমপরিমাণ ভয়ের উদ্রেক করেনি।
যেদিন তালিবান কাবুলে পদার্পণ করল, আমি ছিলাম তোসা ময়দানে। কাশ্মীরের এই তৃণভূমিকে ভারতীয় স্থল ও বায়ু সেনা বহু দশক ধরে সামরিক প্রস্তুতির জন্য ব্যবহার করছে। এই তৃণভূমির এক প্রান্ত থেকে নীচের উপত্যকা দেখা যায়। কাশ্মীরের আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রামে নিহত হাজার হাজার কাশ্মীরি মুসলমানদের সমাহিত করা হয়েছে সেখানে।
৯/১১ পরবর্তী বিশ্বে যে মুসলমান-বিরোধী হাওয়া উঠেছিল, সেই পালে তরী ভাসিয়ে ক্ষমতায় আসে হিন্দু জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) – এর নেপথ্যে ছিল মুসলমানদের বিরুদ্ধে সংগঠিত এক ন্যাক্কারজনক দাঙ্গা। হাজার হাজার মুসলমানের রক্তে রাঙা এই দল নিজেদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক কট্টর মিত্রশক্তি মনে করে। ভারতের ক্ষমতাসীন কর্তারা জানেন তালিবানের উত্থান উপমহাদেশের অস্বাস্থ্যকর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক পালাবদলের সূচনা করল। ভারত, পাকিস্তান ও চীনের মত তিন পারমাণবিক শক্তিধর দেশের কোন্দলের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে কাশ্মীর। ২০ বছর ধরে চলা ক্ষমতার লড়াইয়ে অবশেষে তালিবানের জয়ের নেপথ্যে যে পাকিস্তানের অবদান আছে তা ভারত বিলক্ষণ জানে। তাই, ভারতের সাড়ে ১৭ কোটি মুসলামানের জন্য তালিবানের জয় অশনি সঙ্কেতই বটে। বহু দশক ধরে অত্যাচারিত, পদদলিত, বৈষম্যের শিকার তারা। কথায় কথ্য ‘পাকিস্তানি’ আখ্যা দেওয়া হয় তাদের (এখন বলা হচ্ছে ‘তালিবানি’)। ভবিষ্যতে যে বৈষম্যমূলক নির্যাতন বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
ভারতের সংবাদমাধ্যমের এক বিরাট অংশ, যারা বিজেপির চাটুকারিতা করতে সিদ্ধহস্ত, তালিবানকে উগ্রপন্থী আখ্যা দিয়েছে। ভারতীয় সেনার বুলেটের চোখরাঙানিতে দশকের পর দশক বেড়ে ওঠা আম কাশ্মীরির দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্য আলাদা। এই খবর তাদের কাছে আশাব্যঞ্জক। অপমানের আঁধারে যেন আলোর এক বিন্দু দেখা দিয়েছে তাদের কাছে।
আফগানিস্তানে কী ঘটছে তার সঠিক খবর তখনও কেউ জানি না। খুঁটিনাটি বিবরণ মাঝে সাঝে পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে আমার যাদের সাথে কথা হল তাদের অনেকেই এই ঘটনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী সেনার বিরুদ্ধে ইসলামের জয় দেখছেন। অনেকের মতে, প্রকৃত স্বাধীনতার লড়াইকে পৃথিবীর কোনও শক্তি পরাস্ত করতে পারবে না। তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করেন, কিংবা করতে চান, তালিবান বদলে গেছে। অতীতের বর্বোরচিত শাসন পন্থা তারা আর অবলম্বন করবে না। এই ঘটনাক্রম যে ভারতীয় উপমহাদেশের আঞ্চলিক রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে, একবাক্যে সকলেই স্বীকার করেছেন সেটা। এর ফলে সাধারণ কাশ্মীরির মর্যাদার লড়াই আরও দৃপ্ত হবে, এমনটাই আশা তাদের।
ভাগ্যের এমনই পরিহাস যে এই কথোপকথন হচ্ছিল যেখানে, সেই তৃণভূমি এখন বোমার গর্তে পরিণত হয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা দিবস পালিত হচ্ছে সাড়ম্বরে। আর তাই, কাশ্মীরে চলছে লকডাউন – যাতে কেউ প্রতিবাদ না করতে পারে। সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনার মধ্যে চলছে টানটান লড়াই। অন্যদিকে লাদাখে সীমানা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছে চৈনিক সেনাবাহিনী। আফগানিস্তান যেন আরও কাছের মনে হচ্ছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সারা বিশ্বে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে একের পর এক দেশে সামরিক অভিযান চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ধ্বংস হয়ে গেছে একের পর এক দেশ। সৈন্য শক্তি ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে তারা, গণতন্ত্র ভুলন্ঠিত হয়েছে, কোথাও আবার দেশের শাসনভার সপে দেওয়া হয়েছে স্বৈরাচারী কিংবা সেনার হাতে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের আধুনিক সংস্করণ হয়ে উঠেছে আমেরিকা। সভ্যতা বিস্তারের নামে চলেছে সাম্রাজ্য বিস্তারের কাজ। ভিয়েতনামেও তাই হয়েছিল। আফগানিস্তানেও সেই কাজই করা হয়েছে।
ইতিহাসের যে কোনও অধ্যায়ই হোক না কেন – সোভিয়েত থেকে শুরু করে মার্কিন-পাকিস্তানি সাহায্য প্রাপ্ত মুজাহিদীন, তালিবান থেকে নর্দার্ন জোট, নানা হিংস্র ও প্রতারক যোদ্ধাগোষ্ঠী হোক বা মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্যদল – এদের সকলের মিলিত প্রভাবে সাধারণ আফগান নাগরিকের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। সকলেই মানবতার বিরুদ্ধে অকল্পনীয় অপরাধ করেছে। আল কায়েদা এবং আইসিসের মত জঙ্গিগোষ্ঠীর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার পেছনে অবদান সকলেরই।
মহিলাদের স্বশক্তিকরণ এবং তাদের পরিবারের হাতে নিপীড়ণ থেকে মুক্তি দেওয়াই যদি এই সামরিক আক্রমণের কারণ হয়, তাহলে, সোভিয়েত এবং আমেরিকা – এই দুইয়েরই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অনিবার্য। কারণ, এক শ্রেণীর আফগান মহিলাকে মুক্ত আকাশে বিচরণ করার স্বাধীনতার স্বাদ পাইয়ে দিয়েই এই দুই শক্তি তাদের আবার অন্ধকার কূপে নিক্ষেপ করেছে। সেখানে বিরাজ করে শুধুই মধ্যযুগীয় বর্বরতা ও নারী বিদ্বেষ। কিন্তু, নারীবাদ বা গণতন্ত্র কোনোটাই বোমার মত কোনও দেশে নিক্ষেপ করা যায় না। নিজেদের স্বাধীনতার স্বার্থে আফগান মহিলারা আগেও লড়েছে, আগামী দিনেও লড়বে। যথাসময়ে, নিজেদের মত করে।
মার্কিন সেনা প্রত্যাহার কি তবে তাদের আধিপত্যের সমাপ্তির সূচনা? আফগানিস্তান সম্পর্কে এক প্রচলিত ধারণা আছে – সাম্রাজ্যের কবরস্থান হল এই দেশ। সেই ধারণাই কি সত্যি হবে? সম্ভবত না। কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ দৃশ্যগুলি সত্ত্বেও, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রভাব যা কল্পনা করা হচ্ছে তার চেয়ে অনেকাংশেই লঘু হবে।
আফগানিস্তানে যে অর্থ ব্যয় করেছে মার্কিন সরকার, ঘুরপথে সেটি ফিরে এসেছে মার্কিন সামরিক শিল্পের কোষাগারেই। অস্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থা থেকে ভাড়াটে সৈন্য, উৎপাদন থেকে রসদ কিংবা পরিকাঠামো প্রস্তুতকারী সংস্থা এমনকি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান – লাভের ফল পেয়েছেন সকলেই। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের মতে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযান ও অধিকরণের এই সময়কালে প্রায় ১৭০,০০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এদের অধিকাংশই আফগান। হানাদারদের চোখে তাদের প্রাণের মূল্য সামান্যই। ২,৪০০ মার্কিন সৈনিকের জন্য কুম্ভীরাশ্রু ব্যয় করলেও, আসলে তাদের জীবনের মূল্যও খুব একটা বেশি নয় রাষ্ট্রের চোখে।
এহেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পুনরুদীয়মান তালিবান পর্যুদস্ত করে ছেড়েছে। ক্ষমতা হস্তান্তরের লক্ষ্যে ২০২০ সালে দোহায় স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তিই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। যদিও, সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ভাবনা থাকতে পারে। বদলে যাওয়া বিশ্বের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিজেদের সৈন্যবলকে হয়তো নতুনভাবে ব্যবহার করার চিন্তাভাবনা করছেন তারা। করোনাভাইরাস আর লকডাউনের সাঁড়াশি আক্রমণে অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। প্রযুক্তি, তথ্য এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আজকের যুগে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। তাই ভূখণ্ড দখল করে রাখার প্রয়োজনীয়তাও কম। আফগানিস্তান দখলের জন্য রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান, ইরান ঝগড়া করুক – ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতি, দুর্ভিক্ষ, এমনকি অদূর ভবিষ্যতে গৃহযুদ্ধের বোঝা বর্তাক তাদের ওপর। মার্কিন সেনা আপাতত বিশ্রাম নিক। পাশাপাশি, প্রস্তুত হোক তাইওয়ানের দখল নিয়ে চীনের সাথে সম্মুখ সমরে যাওয়ার।
আমেরিকার জন্য আফগানিস্তানের বিপর্যয়ের থেকেও বড় লজ্জার ব্যাপার ছিল এই পুরো ঘটনা লাইভ টিভিতে ঘটা। ভিয়েতনামে পরাজয়ের পর যখন আমেরিকা সেনা প্রত্যাহার করে, তখনও দেশজুড়ে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন হয়েছিল। অবশ্য তার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল সেনায় যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক করে দেওয়া। পুঁজিবাদ, বর্ণবিদ্বেষ এবং সাম্রাজ্যবাদের একসূত্রে বাঁধা, এমন দাবি করে নিন্দিত হতে হয়েছিল মার্টিন লুথার কিংকেও। জানায় যোগ দিতে অস্বীকার করে বক্সিংয়ে পাওয়া সকল শিরোপা খোয়াতে হয়েছিল মোহাম্মদ আলিকে। এমনকি তাকে গ্রেপ্তারির ভয়ও দেখানো হয়েছিল। যদিও আফগানিস্তানের সামরিক অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর এই ধাঁচে কোনও আন্দোলন হয়নি, তবুও ‘ব্ল্যাক লাইভ্স ম্যাটার’ গণ আন্দোলনের সাথে যুক্ত অনেকেই এমন মত পোষণ করেছেন।
কয়েক দশক পর হয়তো মার্কিন মুলুকে স্বেতবর্ণের আধিপত্য থাকবে না। কৃষ্ণবর্ণ আফ্রিকানদের ক্রীতদাস বানানো কিংবা নেটিভ আমেরিকানদের গণহত্যা ও উচ্ছেদ – মার্কিন মুলুকের মূলস্রোতের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন এই বিষয়গুলিই বিরাজমান। এমনটা হতেই পারে যে ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রশক্তি দ্বারা সংগঠিত যুদ্ধের পরিণামস্বরূপ যে ধ্বংসলীলা ঘটেছে সেটিও একদিন মার্কিন সমাজের বিচার্য হয়ে উঠবে। জাতীয়তাবাদ কিংবা ব্যতিক্রমীধর্মও তা আটকাতে পারবে না। হয়তো এমন দিন আসবে যখন মেরুকরণ ও বিভেদের কারণে সে দেশে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। এর ঝলক আমরা ইতিমধ্যেই দেখেছি। আরেক প্রান্তে উঁকি দিচ্ছে অন্য এক বিপদ।
বহু শতক ধরে আমেরিকার কাছে সুযোগ ছিল নিজেদের ভৌগোলিক অবস্থানের সদ্ব্যবহার করার। বিশাল ভূখণ্ড, জলের আতিশয্য, শত্রুতাপরায়ন পড়শী দেশ নেই, দুদিকে মহাসাগর। ফ্র্যাকিং এর দৌলতে এখন তেলেরও প্রাচুর্য। কিন্তু, মার্কিন প্রাকৃতিক সম্পদ এখন সঙ্কটের মুখে। মার্কিন জীবনধারণ ও যুদ্ধের রসদ যোগাতে অপরাগ এই সম্পদ। (একইভাবে চৈনিক জীবনধারণের যোগানেও অপারগ চৈনিক বহু-সম্পদ)।
মহাসাগরের স্তর বেড়ে চলেছে; উপকূল এবং উপকূলীয় শহরগুলি নিরাপদ নয়। বন-জঙ্গল জ্বলছে; যেন স্থায়ী সভ্যতার প্রান্তে আগুন লেগেছে, আর তা ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই শহরগুলিকে পুরো গ্রাস করছে। নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। শ্যামলিমা উপত্যকাগুলি দুর্ভিক্ষের তাড়নায় দিন গুনছে। হারিকেন এবং বন্যা শহরগুলোকে ধ্বংস করছে। ভূগর্ভস্থ জল কমে যাওয়ায় ক্যালিফোর্নিয়া ডুবে যাচ্ছে। কলোরাডো নদীর ওপর জনপ্রিয় হুভার ড্যাম, যা ৪ কোটি মানুষকে মিষ্টি জল সরবরাহ করে, তা আশঙ্কাজনক হারে শুকিয়ে যাচ্ছে।
আধিপত্য বিস্তারের জন্য যদি পৃথিবীর সম্পদ ধ্বংস করাই লক্ষ্য হয়, তা সে যেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তিই হোক না কেন – মার্কিন, ইউরোপিয়ান, চৈনিক কিংবা ভারতীয় – আখেরে কোনও লাভ হয় না। এই বিষয়ে কোনওরকমের কথোপকথনই নিষ্ফলা হবে। কারণ, আমরা যখন আলোচনায় ব্যস্ত, পৃথিবী তিলে তিলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।