বিশ্বভারতীর ছাত্রকে ‘দলিত’ বলে অপমান? অভিযোগ বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে
পড়ুয়া সোমনাথের অভিযোগ, রাস্তায় চা খেতে গিয়ে অধ্যাপকের সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়ায় সেখানেই সুমিতবাবু সোমনাথকে কটূক্তি করেন। এমনকি জাত তুলে কথা বলেন বলে অভিযোগ। সোমনাথের কথায়, “শুক্রবার বিকেলে শ্যামবাটি এলাকায় চা খেতে যাই। সেই সময় সেখান থেকে যাচ্ছিলেন সুমিতবাবু। আমার সঙ্গে দেখা হওয়ার পরেই সকলের সামনেই আমায় কটূক্তি করতে শুরু করেন। জাতিবিদ্বেষ মূলক মন্তব্যও করেন। বলেন, একজন দলিত ছাত্রের সঙ্গে কথা বললে তাঁর জাত যাবে। তিনি জাত খোয়াতে রাজি নন।”
রবিভূমে রাজনীতির রেশ কাটেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগেই ফের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University) ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ বলে পরিচিত বহিষ্কৃত পড়ুয়া সোমনাথ সৌ-কে ‘দলিত’ বলে অপমান করার অভিযোগ উঠল বিশ্ববিদ্যালয়েরেই এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। ঘটনায় শান্তিনিকেতন থানায় অভিযুক্ত অধ্যাপক সুমিত বসুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন সোমনাথ।
এরপরেই, শান্তিনিকেতন থানায় অধ্যাপকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন সোমনাথ। সূত্রের খবর, অধ্যাপক সুমিত বসু উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ। এর আগে ছাত্রআন্দোলন চলাকালীন উপাচার্যের সুরে সুর মিলিয়ে পড়ুয়াদের ‘মাওবাদী’ বলে তকমা দিয়েছিলেন সুমিত অভিযোগ এমনটাই।
পাল্টা, সোমনাথের বিরুদ্ধে তাঁকে হেনস্থা করার অভিযোগ তুলে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন সুমিত বসু। যদিও, এ ব্যাপারে অধ্য়াপককে ফোন করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়ের (Visva Bharati University) তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কার করার প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রছাত্রীরা। বহিষ্কৃত তিন পড়ুয়ার অন্যতম ছিলেন সোমনাথ। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ জারি করায় তিন পড়ুয়াকে ক্লাসে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। যদিও পরে অভিযোগ ওঠে, সোমনাথ-সহ আরও দুই পড়ুয়া ক্লাস করতে পারছেন না। নোটিস দিয়েই দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ।
অন্য়দিকে, ছাত্র আন্দোলনে উস্কানি ও প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলে ফের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে শোকজ করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপককে আগেই সাসপেন্ড করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। দফায় দফায় সেই সাসপেনশনের মেয়াদও বেড়েছিল। এ বার ফের শোকজ করায় বিতর্কের কেন্দ্রে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্য়ুত্ চক্রবর্তী। শোকজ নোটিসে তিনদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে অধ্যাপককে।
পাঠভবনের অধ্যক্ষ পদে বোধিরূপা সিংহকে নিয়োগের সময় দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন অধ্যাপক সুদীপ্ত। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বিবৃ্তি দেওয়ার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তোলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই অধ্যাপককে সাসপেন্ড করা হয়। সেই সাসপেনশনের মেয়াদ শেষ হয় ৫ সেপ্টেম্বর। ৬ সেপ্টেম্বর থেকে সাসপেনশনের মেয়াদ এক মাসের জন্য বাড়ানো হয়। বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেই সাসপেনশনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা জানানো হয়। ফের নতুন করে অধ্যাপককে শোকজ করায় তাই প্রশ্ন উঠছে।