গজলডোবার মাঝিদের জীবন বদলেছে করোনা
সময়ে সব বদলে দেয়। তিস্তার স্রোতে ভাসিয়ে দেওয়া জীবনেও যে এমন বদল ঘটতে পারে, ভাবতে গিয়ে নিঃশব্দ কান্না চাপা পড়ে যায় তিস্তার ছলাৎ ছলাৎ শব্দে। তাই তিস্তার পাড়ে বসে খালি নৌকার দিকে তাকিয়ে রবি মালো বলেন, সব ওলট-পালট করে দিল রোগটা। রোজগার কেড়ে নিল। কবে যে হাতে বৈঠা উঠবে, ঈশ্বর জানেন।
নদীর স্রোতে বয়ে যায় মাঝির জীবন। তাই সরকারি খাতায় মৎস্য়জীবীর পরিচয় মালো থেকে গেলেও জীবিকার পরিবর্তনে ওঁদের পরিচয় এখন মাঝি। কিন্তু করোনা মাঝির জীবনেও বদল ঘটিয়ে দিয়েছে। পরিযায়ী পাখিরা তিস্তার জল থেকে আকাশে উড়ে য়েতেই থাবা বসাল করোনা। পর্যটকদের ভিড় জমার আগেই সরকারি লকডাউনে গজলডোবা শুনসান হয়ে পড়ল।
কর্মহীন হয়ে পড়লেন রণজিৎ হালদার, সন্দীপ মালো, নিরঞ্জন হালদাররা। গজলডোবা পর্যটনকেন্দ্রের পরিচিতি পাওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁরা তিস্তায় মাছ ধরতেন। সেই মাছ বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে রোজগার করতেন। পর্যটকদের ভিড় শুরু হতেই মৎস্যজীবীর পরিচয় পালটে গেল মাঝিতে।
লকডাউন কার্যকর হওয়ার পর বেশ কিছুদিন ঘরে বসে থেকে জমানো টাকা শেষ করেছে বেশ কিছু মালো পরিবার। আর রসদে টান পড়তে আবার কার্তিক মালো, জয়ন্ত মালোরা পুরোনো পেশায় ফিরে তিস্তার বুকে জাল ফেলেছেন। নিরাশ করেনি নদীও। দুহাত ভরে তিস্তা থেকে বোরোলি, রুই, বোয়াল সহ একাধিক রকমের মাছ তুলেছেন ওঁরা। কিন্তু মালোরা দাম পাননি পরিশ্রমের। বাজার থাকলেও গাড়ির অভাবে শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়িতে মাছ পাঠানো যায়নি। তাই আবার রোজগারহীন হয়ে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে।