লকডাউনে কন্ডোম বাড়ন্ত সর্বত্র
লকডাউনে অফিস কাছারি বন্ধ থাকায় সারাদিন স্বামী-স্ত্রী ঘরবন্দি থাকতে বাধ্য হন। অন্যদিন এতটা সময় একসঙ্গে কাটানোর সুযোগই তাঁরা পেতেন না। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ভাবে আমাদের দোকানগুলিতে কন্ডোম, গর্ভনিরোধক পিল, লুব্রিকেটিং জেল এমনকী বিভিন্ন ইরোটিক পণ্যের বিক্রি প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
তবে, লকডাউনের প্রথম দিকে গর্ভনিরোধক কেনার যে হিড়িক দেখা গিয়েছিল, পরের দিকে তা অনেকটাই থিতিয়ে যায়। করোনা মহামারীর সময়টাকে স্মরণীয় করে রাখতে তাঁরাই সংযম কাটিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
লকডাউনের প্রথম দফায় গর্ভনিরোধকের অর্ডার সাময়িক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ম্যানকাইন্ড ফার্মার এক আধিকারিক। ম্যানফোর্স ব্র্যান্ডের কন্ডোমের পাশাপাশি আনওয়ান্টেড ৭২, আনওয়ান্টেড ২১ ব্র্যান্ডে গর্ভনিরোধক বিক্রি করে সংস্থাটি। ওই সময় গর্ভনিরোধকের বিক্রি বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেছেন টিটিকে প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট এবং টিটিকে হেলথকেয়ার লিমিটেডের দুই আধিকারিক। স্কোর ব্র্যান্ডের কন্ডোম বিক্রি করে টিটিকে প্রোটেক্টিভ। অন্যদিকে, কোহিনুর ব্র্যান্ডের কন্ডোম রয়েছে টিটিকে হেলথকেয়ারের।
বিশিষ্ট মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যালের বক্তব্য, ‘প্রথম ৯-১০দিন এই বিক্রি বেড়েছে আর তারপর তা থিতিয়ে গিয়েছে। এর কারণ, সবকিছু ভুলে তাৎক্ষণিক সুখে নিজেদের ডুবিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। যাকে আমরা বলি ইনস্ট্যান্ট গ্র্যাটিফিকেশন। মানুষ সর্বক্ষণ প্রতিযোগিতায় টেক্কা দেওয়ার জন্য গতি বাড়িয়ে চলেছে, যা এক ধরনের উন্মত্ততার জন্ম দিয়েছে। আর সেই উন্মত্ততারই এক ধরনের বহিঃপ্রকাশ হল যৌনতা। তাৎক্ষণিক প্রবৃত্তির তাগিদ।’
তিনি আরও বলেন, ‘মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত, বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের মধ্যে তাৎক্ষণিক ভোগের বিস্তার দেখা গিয়েছে। আগের থেকে বেশী অর্থনৈতিক সক্ষমতা সুখের তাগিদ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফেসবুক খুললেই দেখা যাবে কে কত রকমের রান্না জানে তা ছবি তুলে দিচ্ছে। এটা যেমন একটা তাৎক্ষণিক সুখবোধ, লকডাউনের প্রাথমিক পর্বে যৌনতার মতো সহজাত প্রবৃত্তিতে ডুবে যাওয়াও এক ধরনের সুখবোধ। কিন্তু, লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যা একঘেয়েমিতে পরিণত হয়েছে। তাই গর্ভনিরোধকের বিক্রিও কমেছে।’