আশার আলো পর্যটনে, ডুয়ার্সের জঙ্গলে শুরু হল হাতি সাফারি
হাতি সাফারি শুরু জলদাপাড়ায়
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানেই রাজ্যের একমাত্র হাতি সাফারি। একমাত্র এই হাতি সাফারির টানেই দেশ বিদেশের পর্যটকরা আলিপুরদুয়ার জেলার জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে ঢুঁ মারতে চলে আসেন। কোভিভ পরিস্থিতিতে প্রায় ১৮ মাস বন্ধ ছিল জলদাপাড়া জাতিয় উদ্যানের ঐতিহ্যপূর্ণ “এলিফ্যান্ট সাফারি”। তবে শনিবার থেকেই ফের গভীর জঙ্গলে রাজ্যের একমাত্র হাতি সাফারি শুরু হচ্ছে জলদাপাড়ায়।
জঙ্গল খুলেছে, সাফারিও শুরু
বৃহস্পতিবার থেকে জঙ্গল খুলে গেছে। হাতি সাফারি শুরু করার উদ্যোগ কে স্বাগত জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গের পর্যটন মহল। জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন আগে থেকেই তৈরি রাখা হয়েছিল দুই প্রশিক্ষিত কুনকি হাতি চম্পাকলি ও মীনাক্ষিকে। তাদের সাথেই তৈরি আছেন দুই হাতির দুই অভিজ্ঞ মাহুত রবি ও ফারুক। শনিবার ভোরের আলো ফুটতেই জলদাপাড়া হলং বনবাংলোর কাজ থেকেই প্রথম পর্যটকদের দল নিয়ে রওনা হবে চম্পাকলি ও মীনাক্ষি।
কোভিড প্রটোকল মেনেই হবে সব কিছু
গভীর জঙ্গলে জলদাপাড়া কম্পার্টমেন্ট এক ঘন্টার অ্যাডভেঞ্চার শেষে ফিরে আসবেন পর্যটকেরা। জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও দীপক এম বলেন, সরকারি নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই জঙ্গল খুলে গিয়েছে। আগামীকাল থেকেই শুরু হচ্ছে এলিফ্যান্ট সাফারি। তবে কোভিভ প্রোটোকল মেনেই সব কিছু চলবে। একসাথে নির্দিষ্ট সংখ্যায় মানুষ হাতির পিঠে চরতে পারবেন। যা যা বিধিনিষেধ রয়েছে, তা পর্যটকদের মেনে চলার আবেদন করা হয়েছে।
২০২০ –র পর আবার সাফারি
উত্তরবঙ্গে গভীর জঙ্গলে এলিফ্যান্ট সাফারি শুধুমাত্র জলদাপাড়াতেই হয়ে থাকে। শেষ বার ২০২০ সালের ১৩ মার্চ সাফারি হয়েছিল। তারপর কোভিভ পরিস্থিতির জেরে বাধ্য হয়ে সাফারি বন্ধ করে দেয় বনদপ্তর। কারণ হিসেবে দেখা যায়,শুধু মানুষ নয়,মানুষের থেকে বন্যপ্রাণীদের মধ্যে কোভিড ছড়িয়েছে, এমন ঘটনা উঠে এসেছিল দেশ বিদেশ থেকে। এদিকে,মীনাক্ষি ও চম্পাকলি দু’জনেই গত কয়েকবছর একটানা জলদাপাড়ায় সাফারিতে অংশ নিচ্ছে। যথেষ্টই শৃঙ্খলা মেনে চলে তারা।
পিঠ থেকে কিছু পড়ে গেলে তুলে দেয়
প্রচুর চমকপ্রদ ঘটনাও রয়েছে দুজনকে নিয়ে।জানা গেছে,পর্যটকদের অনেকেরই হাতির পিঠ থেকে চশমা,ব্যাগ সহ বিভিন্ন জিনিস আচমকাই হাতির পিঠের ঝাকুনিতে জঙ্গলে পরে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। খুব সহজেই তা মাটি থেকে শুঁড়ে তুলে পিঠে বসা সওয়ারির হাতে তুলে দেয় ওরা। এতে যথেষ্টই খুশি হন পর্যটকেরাও। পাশাপাশি একশৃঙ্গ গণ্ডার দর্শন সহজেই করা যায়।
সাফারিকে ঘিরে আশা
জলদাপাড়া লজ ওনার্স এসোশিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, আমরা হাতি সাফারি বন্ধ হবার পর থেকেই হতাশ ছিলাম।তবে আজ সত্যিই খুশির খবর উঠে এসেছে। দেশ বিদেশের অনেক পর্যটক শুধু হাতি সাফারির টানেই ছুটে আসেন। জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে নিয়ম মেনেই দিনে তিনবার সাফারি হবে।অফলাইনে বুকিং করা যাবে। এদিকে, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন, তাঁর বাহনের পুজোয় মাতলো জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। এই দিনে কুনকি হাতিদের পুজো করা হয় ঘটা করে।সাতসকালে নিজেদের হাতিদের স্নান করান মাহুতরা।সারা গায়ে তেল মাখিয়ে ওই পোষা হাতিদের গায়ে এঁকে দেওয়া হয় রংবেরঙের আলপনা।মেনুতে আনা হয় আমূল পরিবর্তন। খাওয়ানো হয় আখ,নানান ধরনের মিষ্টি ফল ও ছোলা গুড়।বর্তমানে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে ছোটো-বড় মিলিয়ে মোট ৮২ টি কুনকি হাতি রয়েছে।