কলকাতায় কোভিডের সংক্রমণের হারের ভুল পরিসংখ্যান দিচ্ছে কেন্দ্র, অভিযোগ রাজ্যের
দিন দুই আগে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পজিটিভিটি রেটের (Positivity Rate) পরিসংখ্যান রীতিমতো চমকে দিয়েছিল কলকাতাবাসীকে। কেন্দ্রের দাবি অনুযায়ী, গত সপ্তাহে শহরের পজিটিভিটি রেট অর্থাৎ সংক্রমণের হার ৫.১ শতাংশ। কিন্তু রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর বলছে, গত ছ’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কলকাতা সহ পশিমবঙ্গের পজিটিভ রেট ২ এর নিচে। দুই সরকারের দেওয়া দুই তথ্যের মাঝে সংশয়ে শহরবাসী। শহরের প্রকৃত করোনা চিত্রটা কী? সেটা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধন্দ।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের (West Bengal Health Department) বক্তব্য, পজিটিভিটি রেট নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত সমস্যার জন্যই কলকাতায় উদ্বেগজনক এই ছবি উঠে এসেছে। বাস্তব হল, জেলার একটা বড় অংশের নাগরিক কলকাতার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনা পরীক্ষা (Corona Test) করে। তাই কলকাতার পজিটিভ রেট বেশি বলে ধরে নিচ্ছে কেন্দ্র। এই তথ্য দেখে অযথা ভীত হওয়ার কোনোও কারণ নেই বলেই মনে করছে স্বাস্থ্য দপ্তর। স্বাস্থ্য কর্তাদের অভিমত, এই তথ্যের সঙ্গে বাস্তবের কোনোও সম্পর্ক নেই।
১৭-২৩সেপ্টেম্বরের তথ্য দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে কলকাতার পজিটিভিটি রেট প্রায় ৫.১ শতাংশ। রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা অজয় চক্রবর্তীর কথায়,”এই তথ্য শুধু বিভ্রান্তকর তাই নয়। বাস্তবের সঙ্গে কোনোও সম্পর্ক নেই।” এই বক্তব্যের সমর্থনে স্বাস্থ্য অধিকর্তার বক্তব্য, শুধুমাত্র কলকাতা নয় গোটা রাজ্যের বিভিন্ন অংশের বা জেলার মানুষ কলকাতার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনার আরটিপিসিআর (RT-PCR) বা এন্টিজেন টেস্ট করে বাড়ি ফিরে যায়। আর টেস্ট রিপোর্টে দেখা যায় কলকাতার করোনা (COVID-19) সংক্রমণ বাড়ছে। তাই এই তথ্য মেনে অযথা ভীত হওয়ার কারন নেই।” একধাপ এগিয়ে অজয়বাবুর যুক্তি শুধুমাত্র পশিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা নয়। অন্য রাজ্যের নাগরিকও এখন কলকাতায় আসছেন। কয়েকদিন থাকছেন। টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ হলে দেখানো হয় কলকাতার। এক স্বাস্থ্য কর্তার কথায় এমন তথ্য প্রকাশ করার আগে একবারে নিচুতলা থেকে তথ্য সংগ্ৰহ করতে হয়। শুরু থেকেই এমন বিভ্রান্তি চলছে।”
তবে আসল তথ্য কি? জবাবে স্বাস্থ্য ভবনের বক্তব্য, তাঁরা এখন থেকে ঠিকানা পরীক্ষা শুরু করেছে। আর সেই ঠিকানার উপর ভিত্তি করেই রোগীকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। অর্থাৎ কোনোও সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্ত যদি কলকাতা বা কোনোও বড় শহরে করোনা পরীক্ষা করে, তবে পরীক্ষাকেন্দ্রকে রোগের উৎপত্তিস্থল না ধরে রোগী যেখানে বসবাস করে সেই এলাকার পজিটিভ হিসেবে ধরা হবে। অজয়বাবুর কথায়,”এভাবেই কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সঙ্গে থাকছে কঠোর কোভিড বিধি।” এক স্বাস্থ্য কর্তার কথায়, গত ছ’ সপ্তাহ ধরে কলকাতা-সহ রাজ্যের করোনা (Coronavirus) সংক্রমন হার ২ বা ২ এর কম। তাই অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।