দেশ বিভাগে ফিরে যান

আজ দেশ জুড়ে কৃষকদের ডাকা ভারত বনধ, ইস্যু সমর্থন করলেও বনধে না মমতার

September 27, 2021 | 2 min read

আজ, সোমবার কৃষক সংগঠনগুলির ডাকা ভারত বনধ। তাতে কার্যত অচল হতে চলেছে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য, শহর। ভারত বনধের সমর্থনে দেশ জুড়ে চাক্কা জ্যাম, রেল রোকোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। দিল্লির সীমানাগুলিতে বিক্ষোভকারী কৃষকরা হুঙ্কার দিয়ে বলছেন, ‘যদি সরকার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে পাল্টা প্রতিরোধ হবে।’ একপ্রকার বন্‌ধের এপিসেন্টার হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ভোটরাজ্য উত্তরপ্রদেশকেই। তবে আন্দোলনকারীদের নজরে রয়েছে অন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিও। সবমিলিয়ে কৃষকদের সোমবারের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। তটস্থ রয়েছে পুলিস-প্রশাসন। বিভিন্ন রাজ্যে তো বটেই, দিল্লির সীমানাগুলিতেও বৃদ্ধি করা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। বৃদ্ধি করা হচ্ছে সশস্ত্র পুলিসকর্মীর সংখ্যা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বন্‌ধকে সমর্থন করি না। ইস্যুকে করি। কৃষকদের পাশে সবসময় রয়েছি। তারা বন্‌঩ধের ডাক দিয়েছে। এখানেই আমাদের দাবি কেন্দ্রীয় সরকার ৩টি কালা কানুন প্রত্যাহার করুক। আমি পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক জায়গায় যাব।

দিল্লি পুলিসের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোনও আন্দোলনকারীকে সীমানা পার করে দিল্লিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কৃষকরা অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, তাঁদের পুরো কর্মসূচিই হবে শান্তিপূর্ণভাবে। তবে আজ, সোমবার নয়াদিল্লির যন্তরমন্তরে ভারত বনধের সমর্থনে বিক্ষোভ-অবস্থানের ডাক দিয়েছে সর্বভারতীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি। কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং বিদ্যুৎ বিল বাতিলের দাবিতে গত ২৬ নভেম্বর থেকে দিল্লির সীমানাগুলিতে মোদী বিরোধী আন্দোলনে শামিল হয়েছেন কৃষকরা। রবিবার সেই আন্দোলন দশ মাস পূর্ণ করল। কৃষক সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, এর আগে কৃষকদের ডাকা যে দু’টি ভারত বনধ প্রত্যক্ষ করেছেন দেশের মানুষ, আজ তার থেকেও বড় কিছু হতে চলেছে।

সোমবার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ভারত বনধ কর্মসূচিতে শামিল হবেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। তবে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সবকিছুই বনধের আওতার বাইরে থাকবে বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভরতরা। এদিন ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (বিকেইউ) সর্বভারতীয় শীর্ষ নেতা রাকেশ টিকায়েত বিজেপি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘কৃষকদের সঙ্গে আসলে মজা করা হচ্ছে। এটি কৃষকরা কখনও ভুলবেন না।’ এদিন সংযুক্ত কিষান মোর্চার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যতদিন দাবি না মিটছে, কৃষকরা একইভাবে শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।


মোর্চার দাবি, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং কেরল সরকার ইতিমধ্যেই বন্‌ধ সমর্থন করার কথা জানিয়েছে। সিপিএম তথা বাম দলগুলি ছাড়াও কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, সমাজবাদী পার্টি, তেলুগু দেশম পার্টি, আরজেডি, এনসিপি, বহুজন সমাজ পার্টির মতো একাধিক অবিজেপি দল কৃষকদের পাশে রয়েছে এবং ভারত বনধে শামিল হওয়ার কথা জানিয়েছে। পাঞ্জাবের নতুন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎসিং চান্নিও কৃষকদের পাশে রয়েছেন। শেষমেশ কি এটি বিরোধী জোটমঞ্চে পরিণত হতে চলেছে? প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহল। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, নিত্যদিন কৃষক বিক্ষোভের সম্মুখীন হতে হচ্ছে উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানার বিজেপি নেতাদের। রবিবারও কৃষক বিক্ষোভের জেরে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে বলে দাবি করেছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। পানিপথে আয়োজন হয়েছে কিষান মহাপঞ্চায়েতের। সারা ভারত কিষান সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির পশ্চিমবঙ্গের যুগ্ম-আহ্বায়ক অমল হালদার বলেন, ‘কলকাতা এবং রাজ্যেও ভারত বনধ কর্মসূচি পালন করবেন কৃষকরা। তবে তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনী প্রচারে কোনওরকম বাধার সৃষ্টি করা হবে না।’ আজ কলকাতার মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করবেন বাম নেতারা। জেলায় জেলায় হবে ধর্না, বিক্ষোভ-অবস্থান, সমাবেশ। গোটা কর্মসূচির জেরে সামগ্রিকভাবেই কোণঠাসা হতে চলেছে কেন্দ্র। এমনটাই মত তথ্যাভিজ্ঞ মহলের। 

ভারত বনধের সমর্থনে

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bharat Bandh, #Farmers Protest, #Farmers bill

আরো দেখুন