দল বদলের পথে লকেট? কুণালের টুইট ঘিরে জোর জল্পনা
তাহলে কি দল বদলের পথে এবার বিজেপির ‘লড়াকু নেত্রী’ লকেট চট্টোপাধ্যায়! তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের টুইট সেই জল্পনাই আরও একবার উস্কে দিল।
কিছুদিন আগেই ভবানীপুর উপনির্বাচনের তারকা প্রচারকদের তালিকা প্রকাশ করেছিল বিজেপি। তাতে অন্যান্যদের সাথে ছিল বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়দের নামও। বাবুল আগেই রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও সে কথায় ভ্রূক্ষেপ না করেই তাঁকেও সেই তালিকায় রাখা হয়েছিল। তারপরেই সবাইকে অবাক করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বাবুল। একইভাবে তালিকায় লকেটের নাম থাকলেও ভবানীপুরে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালের হয়ে একদিনও প্রচার করতে যাননি লকেট। এমতাবস্থায় বিজেপির হয়ে প্রচার না করায় লকেটকে অভিনন্দন জানিয়ে কুণালের টুইটকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কুণাল টুইটে লিখেছেন, ‘বিজেপির তারকা প্রচারক লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ভবানীপুরে বিজেপির হয়ে প্রচার না করার জন্যে ধন্যবাদ। বিজেপির বহু অনুরোধ সত্ত্বেও আপনি রাজী হননি। বন্ধু হিসেবে আপনি যেখানেই আছেন আপনার সাফল্য কামনা করি। পৃথিবীটা ছোট। আশা করি আপনি যেভাবে আপনার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন সেই দিন আবার ফিরে আসবে।’
এর আগে কুণাল এবং লকেট একে অপরকে আক্রমণ করছেন এটাই দেখতে অভ্যস্ত পশ্চিমবঙ্গবাসী। আচমকা তৃণমূল নেতার এই বন্ধুত্বপূর্ণ উক্তিতে অনেকটাই হতচকিত রাজনৈতিক মহল। পুরনো দিনের ফেরার কথাও বলেছেন কুণাল। তা যে ঘুরিয়ে তৃণমূলে ফেরার কথা বলাই তাতে কোন সন্দেহ নেই।
প্রসঙ্গত, লকেটের রাজনীতিতে হাতেখড়ি তৃণমূল শিবিরে।মতান্তরের জেরে ৭ বছর আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
বঙ্গ রাজনীতিতে দলবদলের কিসসা নতুন নয়। নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িক ছিল। নির্বাচন মিটতেই ঠিক তার উলটো পরিস্থিতি। ঘাসফুল ক্ষমতায় ফিরতেই ফের একবার বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগদান পর্ব শুরু হয়েছে। মুকুল রায়ের মতো বড় নেতারও ঘরওয়াপসি হয়েছে। তবে বাবুলের ফুলবদল রীতিমতো চমক ছিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এরই মধ্যে এবার লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে তৈরি হয়েছে জল্পনা।
২০১৯ সালে হুগলি থেকে সাংসদ হন লকেট। এরপর ২১-এর বিধানসভা ভোটে ফের চূঁচড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তাঁকে প্রার্থী করা হয়। কিন্তু পরাজিত হন তিনি। বিজেপিতে বরাবরই প্রথম সারির মুখ লকেট। দলেও তাঁকে একাধিক বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে সম্প্রতি একাধিক ইস্যুতে দলের তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও বিরোধীতা করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তারপরই গাড়ি বদল করে কালীঘাটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে গোপন বৈঠকের খবর প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় জোর চর্চা। আর কুণাল ঘোষের টুইট সেই জল্পনার যজ্ঞের আগুনেই আহুতির কাজ করল।