মোদী সরকারের অর্থনৈতিক বঞ্চনা সত্ত্বেও এই ৩ প্রকল্পে এগিয়ে রাজ্য
বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনাই যেন এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। জিএসটি ক্ষতিপূরণের প্রাপ্য বা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি মেটানোর প্রতিশ্রুতি তো ছিলই, এবার বহর বাড়ছে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে চলা বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বকেয়া টাকারও। এই মুহূর্তে তিনটি এমন প্রকল্পে রাজ্যের বকেয়ার পরিমাণ ছুঁয়েছে ১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। শুধু বাংলার বাড়ি প্রকল্পেই বকেয়া ৬৭৫ কোটি টাকা। স্বচ্ছ ভারত মিশন অর্থাৎ মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে রাজ্যের পাওনা ৫৫০ কোটি, আর ‘অম্রুত’ প্রকল্পে কেন্দ্রের থেকে বাংলার প্রাপ্য ৪৩৪ কোটি টাকা। অথচ, টাকা মেটানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত উদাসীন মোদী সরকার। ইতিমধ্যেই বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। তারপরও অবশ্য কোনও প্রকল্পের কাজ বাংলায় থেমে থাকেনি। বরং উল্লেখযোগ্যভাবেই অগ্রগতি হয়েছে তিনটি প্রকল্পেই।
বাংলার বাড়ি প্রকল্পে মূলত শহরাঞ্চলের গরিব মানুষকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশ টাকা দেয় রাজ্য। বাকি অংশের দায় কেন্দ্রের। সেই টাকাই বকেয়া থেকে যাচ্ছে। একইভাবে বকেয়া রয়ে গিয়েছে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পেও। এ ক্ষেত্রে অবশ্য কেন্দ্র দেয় ৬০ শতাংশ টাকা আর রাজ্য সরকার ৪০ শতাংশ। এছাড়া রয়েছে ইউপিএ আমলে শহরাঞ্চলে পরিকাঠামো গড়ার জন্য ‘জেএনএনইউআরএম’ প্রকল্প। এটি অবশ্য নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বদলে যায় অটলবিহারী বাজপেয়ির নামে। নাম দেওয়া হয় ‘অম্রুত’। এই প্রকল্পে রাস্তা, সেতু, পানীয় জল, নিকাশি সহ নানা ধরনের কাজ হতো। কিন্তু রাস্তা, সেতু নির্মাণের কাজকে এই প্রকল্পের আওতার বাইরে রাখা হয়। বর্তমানে এই প্রকল্পে জল সরবরাহ, নিকাশি, পার্ক সহ নগরায়নের অন্যান্য কাজ হয়। ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছর থেকে চালু হওয়া এই প্রকল্পে কেন্দ্র দেয় ৫০ শতাংশ টাকা। বাকি অর্ধেক রাজ্যের। এখনও পর্যন্ত মোদী সরকার এই খাতে রাজ্যকে দিয়েছে ১ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। সমপরিমাণ টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকারও। মূলত এই তিনটি প্রকল্পই চলে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে। সবকটি প্রকল্পে কাজের অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক হলেও কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ স্পষ্ট হচ্ছে।
এই প্রকল্পের অধীনে যে সব স্কিম চলছে, তার অগ্রগতি নিয়ে সম্প্রতি রিভিউ বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। যে কাজগুলি বাকি রয়েছে, তা দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কোন স্কিমের জন্য কত টাকা বকেয়া রয়েছে, সেই তালিকা সেদিনের বৈঠকে পেশ করা হয়েছিল। সেখানেই দেখা যায়, ৪৩৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। বৈঠকে ঠিক হয়, দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বকেয়া টাকা চাওয়া হবে। যে সমস্ত নিকাশি ও জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ চলছে, তা শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।