উৎসবকে ব্যাহত না করেই পুজোয় জনসংযোগ করবে তৃণমূল
ভবানীপুরের ভোটযুদ্ধ যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই রাজ্যের আরও চার কেন্দ্রে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিল নির্বাচন কমিশন। ভবানীপুর, সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হয়ে যাচ্ছে পুজোর আগেই। কিন্তু ৩০ অক্টোবরের ভোট পর্বে থাকবে পুজোর আবহ, উৎসবের মেজাজ। ফলে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট প্রচার কীভাবে হবে! এখানে বিরোধীরা যখন ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তখন তৃণমূল প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে। পুজোকে ঘিরে জনসংযোগে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে জোড়াফুল শিবির।
আগামী ৩০ অক্টোবর নির্বাচন হবে খড়দহ, গোসাবা, শান্তিপুর, দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে। আগামী ১১ থেকে ১৫ অক্টোবর দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে উঠবে গোটা বাংলা। কিন্তু ৩০ অক্টোবরের ভোটে প্রচার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনাও শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। এখানে বিরোধীদের থেকে অনেক এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস। কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, পুজো ও উৎসব পর্বে মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে নজর দিয়ে প্রচার হবে।
ইতিমধ্যে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিয়েছেন খড়দহ আসনে দলের প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বাকি আসনগুলিতে প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করতে আলোচনা চালাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শীঘ্রই তা প্রকাশ করা হবে। ৬ অক্টোবর মহালয়া। দেবীপক্ষে শুরু হলে ৭ তারিখ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন শোভনদেববাবু। ওই দিন খড়দহের রবীন্দ্র ভবনে একটি কর্মিসভার আয়োজন করা হয়েছে। জেলা নেতৃত্ব থাকবেন ওই সভায়। তার আগে ২ তারিখ খড়দহ বাজারে নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করছেন শোভনদেববাবু। বসবাসের জন্য খড়দহ থানার পাশে একটি বাড়িরও ব্যবস্থা করে ফেলেছেন তিনি।
আগামী ৪ নভেম্বর কালীপুজো। কিন্তু ভোট হয়ে যাচ্ছে তার আগে। কিন্তু দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো তথা উৎসবের পরিবেশে প্রচার চলবে। তৃণমূল নেতৃত্ব বলছেন, ভোটের জন্য যে কোনও সময়ই আমরা প্রস্তুত থাকি। আর সারা বছরই মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে। তবু ভোট-পুজোয় জনসংযোগে আরও গুরুত্ব নিয়েছেন শাসক দলের নেতৃত্ব। শোভনদেববাবু বলেছেন, পুজোর সময় খড়দহের ক্লাব, পুজো মণ্ডপগুলিতে যাব। মানুষের সঙ্গে কথা বলব। তবে পুজো ব্যাহত করে কোনও প্রচার চালানো হবে না। এমনকী পুজো মণ্ডপের আশপাশে কোনওভাবেই মাইকে প্রচারে চালানো হবে না।
বাকি চার আসনের উপনির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের ঘর গোছানোর পালা শুরু হয়ে গেলেও, প্রার্থী বাছাই তো দূরের কথা, বিজেপি ও কংগ্রেস এখনও কমিশনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে চলেছে। অধীর চৌধুরী, শমীক ভট্টাচার্যদের অভিযোগ, দুর্গাপুজো, কালীপুজো, লক্ষ্মীপুজোর ফেস্টিভ মুড বুঝেতে ব্যর্থ কমিশন।
এদিকে ভবানীপুরের উপনির্বাচন নিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূল ওয়ার্ডভিত্তিক এজেন্ট বৈঠক করে। মাথা ঠান্ডা রেখে ভোট সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কর্মীদের। বুথমুখী হতে কেউ যাতে কোনও বাধা না পান, সেদিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, কর্মীদের সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বলা হয়েছে,অঞ্চল ছাড়বেন না। ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। কোনও প্ররোচনায় পা নয়।