এক সপ্তাহে হাজারের বেশি ফিডার বক্স মেরামত করল পুরসভা
সম্প্রতি জমা জলের কারণে শহরতলিতে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। সেই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই শহরের বাতিস্তম্ভ ও ফিডার বক্সে নজর দিয়েছে পুরসভা। আলোক বিভাগের তত্ত্ববধানে চলছে বিশেষ অভিযান। বিভাগের কর্মীরা পথে নেমে পরীক্ষা করছেন ত্রিফলা সহ সব কটি বাতিস্তম্ভ। যেগুলি খারাপ, এই ধাক্কায় সেগুলিও মেরামত করে দিচ্ছেন তাঁরা। গত এক সপ্তাহে প্রায় হাজারেরও বেশি ত্রিফলা আলো এবং ফিডার বক্স সংস্কার করা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।
গত এক সপ্তাহ ধরেই এই অভিযান চলছে। ভরা বর্ষায় রাস্তার জমা জলে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্যই এই পদক্ষেপ। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, এ জে সি বোস রোড, নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট, চৌরঙ্গি, শরৎ বোস রোড, এলগিন রোড, ডি এল খান রোড, হরিশ মুখার্জি রোড, এস পি মুখার্জি রোড, দেশপ্রাণ শাসমল রোড, কলুটোলা স্ট্রিট, ডালহৌসি, রাজভবন, তারাতলা, বেলেঘাটা, ফুলবাগান, মানিকতলা, কাঁকুড়গাছি সহ একাধিক এলাকায় এই কাজ হয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, মূলত কোথাও ফিডার বক্স খোলা থাকলে তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বর্ষার সময় এমনিতেই শহরের যে সব জায়গায় জল জমে, সেখানে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভে বিদ্যুৎ সংযোগ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু যে সব পোস্টে বিদ্যুতের তার বেরিয়ে রয়েছে, সেগুলি মুড়ে দেওয়া হচ্ছে টেপ দিয়ে। অনেক জায়গায় আবার ফিডার বক্সকে মাটি থেকে কিছুটা উপরে তুলে লাগানো হচ্ছে। যাতে জলের সংস্পর্শে না আসে।
চলতি বছরেই রাজভবনের সামনে তড়িদাহত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সেটাই ছিল এ বছরে শহরের বুকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর প্রথম ঘটনা। সেখানে খোলা ফিডার বক্স থেকে জমা জলে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়ে বিপত্তি ঘটেছিল। তারপর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শুরু হয় অকেজো ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলি সংস্কারের কাজ। গত সপ্তাহে তুমুল বৃষ্টি হয়েছে শহরে। যার ফলে কলকাতার একাধিক জায়গায় কোথাও চারদিন, কোথাও পাঁচদিন পর্যন্ত জল জমে ছিল। বৃষ্টির জলে সম্প্রতি দমদম, টিটাগড় ও আগরপাড়ায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কলকাতার বুকে যেন ফের এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেকারণে সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের সতর্ক করে দিয়েছেন পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। নাগরিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পথে নামানো হয়েছে বিশেষ টিম। সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার থেকে বিশেষ অভিযান চলছে। গ্রুপ ভাগ করে কাজ করছেন তিনশো থেকে চারশো কর্মী। পুরসভার এক সূত্র বলছে, শহরে প্রায় ১৮ হাজার ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজারই খারাপ। সেগুলিও ধীরে ধীরে সংস্কার করছে পুরসভা।