শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক হচ্ছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য
এবার শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক হচ্ছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। আগামী ১৭ই মে এই পুরসভার বামফ্রন্ট পরিচালিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার মডেলে এখানে অশোকবাবুকেই প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান হিসাবে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
কদিনের মধ্যেই রাজ্য পুর-নগোরন্নয়ন দপ্তর থেকে এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। বিরোধী দখলে থাকা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়রকে প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান করে অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৫ সালে পুরসভা নির্বাচনে জেতার পর শিলিগুড়ি পুরসভার ক্ষমতা দখল করে সিপিএম নিয়ন্ত্রিত বামফ্রন্ট। ওই বছর ১৭ই মে তারা পুরসভার বোর্ড গঠন করে। মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হন সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য ও ডেপুটি মেয়র হন আরএসপির রামভজন মাহাত। আগামী ১৭ই মে বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির জেরে এখন আর ভোটের মধ্য দিয়ে নতুন করে পুরবোর্ড গঠন করা সম্ভব নয়। তাই এই পুরসভাতেও এবার প্রশাসক নিয়োগ করা হচ্ছে।
কয়েকদিন আগে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক হিসাবে বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে মনোনীত করা হয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার ক্ষেত্রেও সেই পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার। সব পুরসভার ক্ষেত্রেই একই ফরমুলা হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। পুর ও নগর উন্নয়ন দপ্তর সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি পুরসভায় প্রশাসক হিসাবে মেয়রের নাম মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতার মতো এখানেও প্রশাসক বোর্ডে কয়েকজন জনপ্রতিনিধিদের রাখা হতে পারে। এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব সামলাবেন অশোকবাবু।
এব্যাপারে পুর ও নগর উন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব খলিল আহমেদের স্বাক্ষর করা নির্দেশিকা আগামী ১৬ই মে’র আগে পুরসভায় এসে পৌঁছবে বলে জানা গিয়েছে। যদিও মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, এধরনের কোনও নির্দেশিকা এখনও হাতে পাইনি। তা পাওয়ার পর দল ও বামফ্রন্টে আলোচনা করেই যা বলার বলব।
উত্তরবঙ্গের অঘোষিত রাজধানী শহর শিলিগুড়ির ক্ষমতা দখল নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি অনেকদিন ধরেই তৎপর। স্বাভাবিকভাবেই এই পুরসভার ক্ষমতা দখলের জন্য শাসক দল তৃণমূলের অনেক নেতাই সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। প্রশাসক হিসাবে বাতাসেও ভাসছিল কয়েকজন হেভিওয়েট নেতার নামও। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার বিরোধী শিবির পরিচালিত এই পুরসভার মেয়রকে প্রশাসক হিসাবে মনোনীত করতে চলায় রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন উঠেছে।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বামফ্রন্ট পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়রকে প্রশাসক করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছে। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের রঞ্জন সরকার অবশ্য বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে পুরসভার ব্যাপারে রাজ্য সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই মানব।
অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা চাউর হতেই নিজেদের স্ট্যান্ড ঠিক করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিপিএম। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিকালে সিপিএমের দার্জিলিং জেলা কমিটি বিষয়টি রাজ্য কমিটিকে জানায়। রাজ্য কমিটি এব্যাপারে দলের জেলা কমিটিকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।