করোনার আবহে এবারেও দিল্লিতে দুর্গাপুজো সাদামাটা
করোনায় হারিয়েছে জৌলুুস। দিল্লির বাঙালি পাড়া চিত্তরঞ্জন পার্কে এবারেও পুজোর কুম্ভ কার্যত একাই রক্ষা করছে কালীমন্দির। গত বছরের মতো এবারেও বাকি পুজো কমিটিগুলির অধিকাংশেরই ভাবনায় সেই ঘটপুজো। তবে একেবারে শেষ মুহূর্তে সরকারি নির্দেশিকা খতিয়ে দেখে সামান্য কিছু পরিবর্তনের ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কালীমন্দির সোসাইটির পুজো বাদ দিলে চিত্তরঞ্জন পার্কের অধিকাংশের পুজো গতবারের মতো এ বছরও একদিনের। অর্থাৎ, পুজো শেষ তিন-চার ঘণ্টার মধ্যেই।
অভিজাত এই বাঙালি মহল্লায় যা একপ্রকার নজিরবিহীনই। একটা সময় ছিল, যখন বিসর্জনের আগেই পরের বছরের পুজোর ভাবনায় মেতে উঠতেন সি আর পার্কের উদ্যোক্তারা। হতো মিলনোৎসব। করোনার প্রকোপে বদলেছে সেই চিত্র। চিত্তরঞ্জন পার্ক কালীমন্দির সোসাইটির যুগ্ম-সম্পাদক গোপা বসু বলছিলেন, ‘ভাবতে পারেন, কালীমন্দিরে পুজো হচ্ছে, অথচ কোনও দর্শনার্থী নেই! পুজো দেখতে হচ্ছে অনলাইনে! অন্তত সামনের বছর যাতে করোনার প্রকোপের জেরে পুজোর আনন্দে ছেদ না পড়ে, সেই প্রার্থনাই এবার সকলে মায়ের কাছে করব।’ ঠিকই বলেছেন তিনি। কালীমন্দিরে পুজো হবে চারদিনই। প্রতিমা সহ। কিন্তু ওইটুকুই। বাকি সবটাই ঢাকা পড়ে গিয়েছে কোভিড প্রোটোকলের কাছে। পুজোর বেদিতে পুরোহিত ছাড়া আর কেউই থাকবেন না। গোপাদেবী জানালেন, ‘অনলাইনে ঠাকুর দেখার সুবিধা করে দিচ্ছি আমরা। পুষ্পাঞ্জলিও হবে অনলাইনেই। ভোগের ব্যবস্থা থাকবে। তবে তা মন্দির প্রাঙ্গণে চিত্তরঞ্জন পাকের্র নির্দিষ্ট কয়েকটি পয়েন্টে ভোগপ্রসাদ সংগ্রহ করতে যাবে।’
দিল্লির পুজোর অন্যতম আকর্ষণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এবার তা’ও অনলাইনে। উদ্যোক্তাদের একজন বলেন, ‘প্রতিবার আমরা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। গতবার থেকে তা অনলাইনে হচ্ছে। তবে সাড়া মিলছে বিশ্বব্যাপী। এটুকুই শান্তির।’ সিআর পার্ক বি ব্লক, ডি ব্লক, মেলা গ্রাউন্ড, কো-অপারেটিভের শারদোৎসবে এবার শুধুই ঘটপুজো। কোনও জাঁকজমক নেই। স্তিমিত হচ্ছে উত্তেজনাও।
সি আর পার্ক কো-অপারেটিভ গ্রাউন্ড পুজো কমিটির প্রেস ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা সর্বাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘অষ্টমীতে ঘটপুজো ছাড়া অন্য রাস্তা নেই। কারণ শেষ মুহূর্তে যদি কিছুটা ছাড় পাওয়াও যায়, তাহলেও বড় করে কিছু আয়োজনের সময় আর পাব না। তবে জমায়েতে সামান্য ছাড় পেলে অন্তত সদস্যদের জন্য ভোগের ব্যবস্থা করব।’ মেলা গ্রাউন্ডের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ দে’ও জানালেন, তাঁদেরও ভাবনায় রয়েছে সেই ঘটপুজোই। তবে সি আর পার্ক নবপল্লি পুজো কমিটির সভাপতি ডাঃ সুব্রত কুণ্ডু জানিয়েছেন, তাঁদের মূর্তি পুজোই হবে। তবে ছোট আকারে।