লকডাউনের মধ্যে সোনার বন্ড কেনায় আগ্রহ তুঙ্গে
শেয়ার মার্কেট টালমাটাল। স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প, ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের সুদের হার তলানিতে। মার্কিন সংস্থা ফ্র্যাঙ্কলিন টেম্পলটন হঠাৎ ৬ টি ফান্ড প্রত্যাহার করে নেওয়ায়, মিউচুয়াল ফান্ড মার্কেটও আচমকা চরম অনিশ্চিয়তায়। এমতাবস্থায় অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতে সোনার বন্ড ক্রয়ের ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে দেশজুড়ে।
সেই কারণে আজ নতুন করে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই চলতি আর্থিক বছরে দ্বিতীয়বার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের তরফে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সরকারি গোল্ড বন্ড স্কিম চালু করল। গত মাসেই এই গোল্ড বন্ড স্কিমের আর্থিক বছরের প্রথম পর্বের গ্রাহক নথিভুক্তিকরণ শুরু হয়েছিল। এপ্রিল মাসের ২০ থেকে চারদিনের জন্য ওই স্কিম খোলা হয়েছিল এই লকডাউনের মধ্যেই। আশাতীত সাড়া মিলেছিল। এবং রেকর্ড বিক্রী হয়েছে ওই নির্ধারিত চারদিনের মধ্যে।
২০১৫ সালে শুরু হওয়া এই গোল্ড বন্ড স্কিমে ১৭ লক্ষ ইউনিটের বেশী বন্ড বিক্রী হয়ে সরকারের প্রায় ৯০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। যা রেকর্ড। চাহিদা অব্যাহত দেখে ২৪ এপ্রিল ওই স্কিম বন্ধ হলেও আবার গ্রাহকদের জন্য খোলা হয়েছে আজ। এই স্কিম আপাতত ১৫ মে পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সরকারের এই সোনার বন্ড খোলাবাজারে গ্রাহকদের কাছে বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যেই।
সোনাকে সরাসরি আর্থিক লগ্নি হিসাবে পরিগণিত করার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। এই বন্ড কেনা যায় যে কোনও ব্যাঙ্ক, ডাকঘর, স্টক এক্সচেঞ্জে। যে কোনও ব্যক্তি, ট্রাস্ট, সংগঠন, দাতব্য সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই সোনার বন্ড ক্রয় করতে পারবে। ন্যূনতম লগ্নি এক গ্রাম সোনার মূল্যের বন্ড। যা ধার্য হবে বাজার নির্ধারিত দরে। আর বন্ড ক্রয়ের সর্বোচ্চ সীমা হল, ৪ কিলোগ্রাম সোনার দরের সমতুল।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গাইলডাইন অনুযায়ী, যে কোনও ক্রেতা অনলাইনেই আবেদন করে ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে সরকারের এই সোনার বন্ড ক্রয় করতে পারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ২০২০-২১ আর্থিক বছরে কয়েক মাস অন্তর মোট ৬ দফায় এই গোল্ড বন্ড বাজারে ছাড়া হবে। কিন্তু মাত্র একমাসের মধ্যেই দু’বার বাজারে ছাড়া হল বন্ড। এর কারণ লকডাউনের জেরে সামগ্রিক অর্থনীতির মন্দায় কোনওরকম লগ্নিই আর নিশ্চিত নয়।
এই অবস্থায় শিল্পমহল অথবা সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে একমাত্র সোনা ক্রয়েই লগ্নি করা। সেই প্রবণতার সঙ্গে সমতা রেখেই গোল্ড বন্ড স্কিম দ্বিতীয়বার চালুর সঙ্গে সঙ্গে, আজ থেকে আবার বিপুল পরিমাণ আবেদন জমা পড়তে শুরু করেছে। লকডাউনের আবহে সরকারের রাজকোষও ভরাট হচ্ছে সন্তোষজনকভাবে।