নজর ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পে
করোনা সঙ্কট কাটিয়ে নতুন ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ে তুলতে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০ লক্ষ কোটি টাকার যে আর্থিক ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেন, বুধবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তারই প্রথম কিস্তির তালিকা প্রকাশ করলেন। দেশের শিল্প ও বাণিজ্য মহল এ দিনের ঘোষণাকে দরাজ সার্টিফিকেট দিলেও বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা এই প্যাকেজকে ‘ভাঁওতা’ ছাড়া অন্য কিছু মানতে নারাজ।
বুধবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ১৫ দফার প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকার যে প্যাকেজ ঘোষণা করেন তার সিংহভাগই দেশের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির (এমএসএমই) জন্য। তবে, সংস্থাগুলির জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া সম্ভবত এমএসএমই-এর সংজ্ঞা সংশোধন এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি থেকে তাদের বকেয়া বিলের পেমেন্ট আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে পেয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি।
পাশাপাশি, চাকুরিজীবী নন এমন ব্যক্তিদের টিডিএস এবং চাকুরিজীবীদের এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডে মাসিক অনুদানের হার কমিয়ে তাঁদের হাতে খরচ করার মতো আয় বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন তিনি।
কিন্তু, অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় পরিযায়ী শ্রমিক এবং সমাজের আর্থিক পিরামিডের নিচুতলার মানুষজন, যাঁরা করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে রুজি-রুটি খুইয়ে চরম দুরবস্থার মুখোমুখি, তাঁরা উহ্য থাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনায় সরব হন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেস নেতা শশী থারুর প্রমুখ।
তবে, বিজেপির পাল্টা জবাব, প্যাকেজ ঘোষণার আগেই বিরোধীরা তাদের প্রতিক্রিয়া লিখে রাখে। শুধুমাত্র প্রথম দফার ঘোষণা শুনেই বিরোধীরা এই সমালোচনা করছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং এ দিনের ঘোষণার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, ‘আজ যে ঘোষণা করা হল তাতে এমএসএমই সংস্থাগুলির হাতে নগদের জোগান, তাদের আত্মনির্ভরতা এবং প্রতিযোগিতার মনোবল বাড়াতে প্রভূত সাহায্য করবে।’
সীতারামন এ দিন যে ১৫ দফার প্যাকেজ ঘোষণা করেন তার সিংহভাগ জুড়েই ছিল এমএসএমই। প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের মধ্যে এমএসএমই সংস্থাগুলির জন্যই ঘোষণা করা হয়েছে ৩.৭০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ। যার মধ্যে, চার বছরের মেয়াদে সরকারি গ্যারান্টিযুক্ত ৩ লক্ষ কোটি টাকার বন্ধকহীন ব্যাঙ্ক ঋণ। সীতারামন বলেন, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ওই ঋণ নিতে হবে।