আক্রান্ত বাড়লেও সুস্থতায় স্বস্তি

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়মিত বাড়ছে রাজ্যে। অবশ্য পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে করোনামুক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার বহরও। বুধবার স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এ দিনও ৯০ জন করোনা আক্রান্ত ‘নেগেটিভ’ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সেই সূত্রেই বুধবার পর্যন্ত করোনামুক্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০২।

May 14, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়মিত বাড়ছে রাজ্যে। অবশ্য পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে করোনামুক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার বহরও। বুধবার স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এ দিনও ৯০ জন করোনা আক্রান্ত ‘নেগেটিভ’ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সেই সূত্রেই বুধবার পর্যন্ত করোনামুক্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০২।

ফলে স্পষ্ট, টেস্টের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, একদিকে যেমন কমছে পজিটিভ আসার হার, অন্যদিকে তেমনই আবার বেড়ে চলেছে হাসপাতাল থেকে ছুটি মেলার হার বা ডিসচার্জ রেটও। মাত্র সপ্তাহ দুয়েক আগে কোভিড ধরা পড়ার হার প্রায় ৫.৫০% থাকলেও কমতে কমতে সেই হার প্রথম চারের নীচে নেমে এল। এ দিন দেখা যাচ্ছে, পজিটিভ হওয়ার হার কমে ৩.৯৭% হয়ে গিয়েছে। আবার রবিবার (২১.৫১%), সোমবার (২৪.১৯%) ও মঙ্গলবারের (২৮.১৬%) পর বুধবারও (৩০.৬৬%) দেখা যাচ্ছে, করোনামুক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে ছুটি মেলার অনুপাত ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে চলেছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোভিড গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার মাঝেও এই পরিসংখ্যান স্বস্তি দিচ্ছে বাংলাকে।

আক্রান্ত বাড়লেও সুস্থতায় স্বস্তি

চিকিৎসক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, নভেল করোনাভাইরাস যখন দুনিয়াজোড়া মহামারীর চেহারা নিয়েছে, তখন বিজ্ঞানের নিজস্ব নিয়মেই এখন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। কিন্তু সেই সংখ্যা দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কেননা, মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি, সে অসুখ থেকে যে দ্রুত সেরেও উঠছেন ব্যাপক হারে, তা পরিষ্কার পশ্চিমঙ্গের সরকারি পরিসংখ্যানে। স্বাস্থ্য ভবনের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘এক সপ্তাহ আগেও প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় টেস্টের হার ছিল ৩৮৩। টেস্ট বাড়তে বাড়তে এখন সে অনুপাত ৬৪০ হয়ে গিয়েছে। টেস্টের বহর বৃদ্ধির সূত্রে সংখ্যার বিচারে বেশি মানুষের রোগ ধরা পড়লেও, সংক্রমণ চিহ্নিতকরণের অনুপাত কিন্তু ক্রমগাত কমতে থাকছে। উল্টো দিকে বেড়ে চলেছে হাসপাতাল থেকে ছুটি মেলার দৈনিক হার।’

গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০১০ জনের সোয়াব নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে কোভিড ধরা পড়েছে ১১৭ জনের শরীরে। এই নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ২২৯০। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এসএসকেএমের এক প্রবীণ চিকিৎসকের পাশাপাশি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের এক নার্স ও দুই স্বাস্থ্যকর্মী। একবালপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক রোগীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসায় আপাতত সেখানে রোগীভর্তি সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে। বর্তমানে করোনা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, অর্থাৎ ‘অ্যাক্টিভ’ রোগীর সংখ্যা বুধবার হয়েছে ১৩৮১। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ন’ জনের মৃত্যুও হয়েছে।

মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক করোনা পজিটিভ হয়ে হোম আইসোলেশনে থাকলেও মঙ্গলবার রাতে তাঁকে স্থানীয়দের বিরোধিতার জেরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার লেকটাউনের একটি নার্সিংহোমে বছর বিয়াল্লিশের এক গৃহবধূ মারা যাওয়ার পর বুধবার জানা যায় তিনি করোনা পজিটিভ ছিলেন। গত রবিবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সল্টলেকের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই মহিলার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এ দিন তার রিপোর্ট আসে। কোভিড সন্দেহ থাকার পরও তাঁর দেহ কী ভাবে মঙ্গলবারই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পরিবার অবশ্য সাধারণ প্রথা মেনেই সৎকার করে শ্মশানে। ফলে প্রশ্ন উঠছেই হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে। খবর জানাজানি হতে পরে অবশ্য মৃতার পরিবারের পাঁচ জনকে রাজারহাটের কোয়ারান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। ঘিরে দেওয়া হয়েছে তাঁদের বাড়ির চারপাশ। স্প্রে করা হয়েছে জীবাণুনাশক।

৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দেব নস্কর বলেন, ‘নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছি, কেন তারা রিপোর্ট না দেখেই দেহ ছেড়ে দিয়েছে?’ বিধাননগর পুর নিগমের মেয়র পরিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘সমর্থনযোগ্য নয়। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে তাঁদের কর্মীদের সুরক্ষার জন্য উপযুক্ত ব্যাবস্থা নিতে বলেছি।’ অভিযুক্ত নার্সিংহোমের বক্তব্য, ‘এখন যাঁরা সেখানে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের সকলেরই করোনা টেস্ট করা হচ্ছে। ওই মহিলার কোনও উপসর্গ ছিল না বলেই দেহ ছাড়া হয়।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen