দেশ বিভাগে ফিরে যান

আমাকে মেরে পুঁতে দিলেও কৃষকদের স্বার্থে আওয়াজ তুলবই: লখিমপুর খেরিতে রাহুল গান্ধী

October 7, 2021 | 2 min read

‘আমাকে মেরে পুঁতে দিলেও কৃষকদের স্বার্থে আওয়াজ তুলবই। কেউ আটকাতে পারবে না। আমাদের পরিবারকে ভয় দেখিয়ে কোনও লাভ নেই।’ উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির ঘটনায় বোন প্রিয়াঙ্কার পর বুধবার এই মর্মেই নাম না করে মোদী সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন রাহুল গান্ধী। সকালে তিনি লখনউ পৌঁছন। প্রায় ৫০ ঘণ্টা পর এদিন প্রিয়াঙ্কাকেও মুক্তি দেয় উত্তরপ্রদেশ পুলিস। তারপর দিনভর নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে রাতে লখিমপুরে নিহত কৃষকদের বাড়িতে পৌঁছন দু’জনে। তার আগেই অবশ্য রাহুল হুঙ্কার ছেড়েছেন, ‘দেশে স্বৈরাচারী সরকার চলছে। কৃষকের উপর পরিকল্পনামাফিক অত্যাচার হচ্ছে। আর প্রতিবাদে সরব হলেই হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। তবে প্রিয়াঙ্কা হোক বা আমার এতে কিছু এসে যায় না। আমাদের পরিবারের এসব সহ্য করার বিশেষ ক্ষমতা আছে।’ কংগ্রেসের আগেই অবশ্য লখিমপুরে পা রেখেছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। মঙ্গলবারই রীতিমতো লুকিয়ে তাঁরা পৌঁছন নিহত কৃষকদের পরিবারের কাছে। আশ্বাস দেন সুবিচারের। এদিন দলীয় মুখপত্রের উৎসব সংখ্যা প্রকাশের অনুষ্ঠানে এসে সেকথা তুলে ধরেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘১২ ঘণ্টা কষ্ট করে ঘুরপথে আমাদের প্রতিনিধি দলকে ঢুকতে হয়েছে। দোলা সেনরা পাঞ্জাবীদের মতো পোশাক পরে লুকিয়ে ঢুকেছেন সেখানে। কারণ, পুলিস বাধা দিয়েছে।’ তাঁর সাফ বার্তা, আমরা কৃষকদের পাশে আছি।

গত রবিবার রাতে লখিমপুর খেরি যাওয়ার পথে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটকে দেয় যোগী আদিত্যনাথের পুলিস। সীতাপুরে তাঁকে ‘অন্যায়ভাবে’ গ্রেপ্তার করা হয় বলেও কংগ্রেসের অভিযোগ। এই ঘটনার পরেই মাঠে নামেন রাহুল। এদিন পাঞ্জাব ও ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি এবং ভূপেশ বাঘেলকে সঙ্গে নিয়ে ভাড়া করা বিমানে উড়ে যান লখনউ। সঙ্গে ছিলেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল এবং মুখ্য মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালাও। এদিন নিহত কৃষকদের পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন পাঞ্জাব ও ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী।

লখিমপুর খেরি রওনা হওয়ার আগে বিজেপিকে চাপে ফেলে রাহুল বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ জমা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে শীঘ্রই বিস্ফোরণ হবে।’ তাঁর মতে, গণতন্ত্র হল এক ধরনের সেফটি ভালভ। সেটি রক্ষা করা না হলে বিস্ফোরণ হতে বাধ্য। ‘মানুষের ন্যায়ের প্রশ্নে সরকারকে চাপ দেবই’, সোচ্চার ঘোষণা কংগ্রেস নেতার। তাছাড়া টিএমসি এবং ভীম আর্মিকে লখিমপুরের পরিজন-হারা পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দিলেও তাঁদের কেন আটকানো হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল।

পাল্টা উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়ে দেয়, চাইলে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সহ কয়েকজন লখিমপুর যেতেই পারেন। তবু লখনউ বিমানবন্দরে নেমে খানিক বাধা পেতে হয় রাহুলকে। পুলিস ও আধা সামরিক বাহিনী পথ আটকায়। প্রতিবাদে রাহুলের সওয়াল, ‘এই কি অনুমতির নজির? বলা হচ্ছে যাওয়ার অনুমতি আছে। তাহলে আটকানো হচ্ছে কেন?’

উভয়পক্ষের যখন বচসা চলছে, লখিমপুর থেকে খবর আসে নিহত কৃষক পরিবারের সদস্যদের সৎকার হয়ে গিয়েছে। আর এই খবর পাওয়ার পরেই রাহুল গান্ধীকে বিমানবন্দরের বাইরে বেরতে দেয় পুলিস। রাহুল, চান্নি এবং বাঘেলকে পুলিস তাদের জিপে নিয়ে যেতে চাইলেও তা প্রত্যাখ্যান করেন তাঁরা। নিজেদের গাড়িতেই তাঁরা পৌঁছে যান সীতাপুরে পিএসি অতিথিশালায়। যেখানে রবিবার রাত থেকে এক চিলতে ঘরে আটকা রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। সেখান থেকেই গান্ধী পরিবারের দুই সদস্য রওনা দেন লখিমপুর। যদিও প্রাক্তন বিজেপি এমপি সাবিত্রী ভাই ফুলেকে সেখানে যাওয়া থেকে আটকায় পুলিস। তাঁকে চুলের মুঠি ধরে কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মহিলা পুলিসকর্মীরা জিপে তুলেছেন বলে অভিযোগ। যে ভিডিও হাতে পেয়ে সহমর্মিতা জানান প্রিয়াঙ্কা। সরব হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্রর পুত্র আশিসের গ্রেপ্তারির দাবিতেও।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#yogi adityanath, #Rahul Gandhi, #Farmers Protest, #Lakhimpur Kheri

আরো দেখুন