ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানে দেশের শীর্ষে বাংলা

ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থাগুলির সর্বভারতীয় সংগঠন মাইক্রোফিনান্স ইনস্টিটিউশনস নেটওয়ার্ক বা ‘অ্যামফিন’ চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিনমাসে নেওয়া ঋণের উপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।

October 7, 2021 | 2 min read

Authored By:

Drishti Bhongi Drishti Bhongi
Published by: Drishti Bhongi

চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিনমাস, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ গ্রাস করেছিল গোটা দেশকে। বাদ যায়নি রাজ্যও। কিন্তু আর্থিক কর্মকাণ্ডে সেই সময়ও চাঙ্গা ছিল পশ্চিমবঙ্গ। ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলির দেওয়া ঋণের অঙ্ক সেই তত্ত্বই প্রমাণ করছে। তারা জানাচ্ছে, ব্যাঙ্ক হোক বা অন্য কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান—ধার করে পুঁজি জোটানোয় সেরা রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। করোনার কঠিন সময়ে ছোটখাট ঘরোয়া ব্যবসা করে বেঁচে থাকার ব্যাপারে দেশকে পথ দেখাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা।

ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থাগুলির সর্বভারতীয় সংগঠন মাইক্রোফিনান্স ইনস্টিটিউশনস নেটওয়ার্ক বা ‘অ্যামফিন’ চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিনমাসে নেওয়া ঋণের উপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, মোট ঋণ এবং মাথাপিছু ঋণের হিসেবে এরাজ্যে সবার আগে রয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত আর্থিক বছরে এরাজ্যে ঘরোয়া কারবারে ইচ্ছুক বাসিন্দাদের মোট ৩৪ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। বাংলার পর জায়গা পেয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে ঋণ দেওয়া হয়েছে ২৯ হাজার ৯৮২ কোটি টাকার। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে বিহার ও কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্র।

এ তো গেল সার্বিক ঋণের অঙ্ক। মাথাপিছু ঋণের হিসেবে চোখ রাখলে দেখা যাবে, বাংলায় গড়ে ঋণ দেওয়া হয়েছে ৫৪ হাজার ১৫৯ টাকা। এই অঙ্কের ধারেকাছে নেই অন্য কোনও রাজ্য। দ্বিতীয় স্থানে আছে অসম। তাদের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ৪৮ হাজার ৬৯৭ টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওড়িশা, যেখানে মাথাপিছু ঋণ মিলেছে ৪০ হাজার ২৬০ টাকার। অ্যামফিনের রিপোর্ট বলছে, ঋণের প্রায় ৪৩ ভাগ এসেছে ব্যাঙ্ক থেকে। বাকি ঋণের বেশিরভাগটাই দিয়েছে ক্ষুদ্র ঋণপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাঙ্ক নয়, এমন আর্থিক সংস্থা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ছোট অঙ্কের ঋণ নিয়ে ব্যবসা করার প্রবণতা সব সময়ই বেশি থাকে গ্রামগুলিতে।

এক্ষেত্রে কোনও রাজ্যে ঋণের টাকা বেশি পৌঁছনোর অর্থ সেখানকার গ্রামীণ অর্থনীতির প্রসার। গ্রামের মানুষের হাতে টাকা আসা মানে অর্থনীতির সুষ্ঠু বিকাশ। হিসেব বলছে, বাংলার জেলাগুলির বাসিন্দাদের হাতে সর্বাধিক ঋণ পৌঁছেছে। তাই আর্থিক কর্মকাণ্ডে দেশকে দিশা দেখাচ্ছে বাংলা।

ক্ষুদ্র ঋণে কতটা এগল গ্রামগুলি? ঋণদানকারী সংস্থাগুলির অপর সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সা-ধন’-এর হিসেব বলছে, দেশের অন্যান্য জেলাগুলির তুলনায় এরাজ্যের ৮৬ শতাংশ জেলায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ অনেক বেশি। এরাজ্যে প্রায় ৩২ লক্ষ মানুষ এখন ছোট অঙ্কের ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু তার মধ্যে ১.২৫ লক্ষ টাকা বা তার বেশি অঙ্কের ঋণ নেওয়ার হার ১.৯৩ শতাংশ।

অথচ দেশের গড় হার ০.৪৬ শতাংশ। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদীয়া, দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলায় সেই হার ২ শতাংশের বেশি। পাশাপাশি সা-ধন জানিয়েছে, গত আর্থিক বছর পর্যন্ত এরাজ্যের ঋণ গ্রহীতাদের ধারের টাকা শোধ করার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম ছিল ১৯টি জেলায়। জুন পর্যন্ত শেষ তিনমাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১টি জেলা। এর থেকেই প্রমাণিত, আর্থিক কর্মকাণ্ডে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলা, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen