পুজোর আগে স্বস্তি, কলকাতায় নিয়ন্ত্রণে করোনা সংক্রমণ
জুলাইয়ে ক্ষান্ত দিলেও আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকেই শহরে দৈনিক করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করে। শুরু হয় প্রশাসনিক তৎপরতা। বাজার ও ঘিঞ্জি এলাকায় আবার নতুন করে শুরু হয় পুরসভা ও পুলিসের অভিযান। পাখির চোখ করা হয় টিকাকরণকে। যার ফল হাতেনাতে মিলছে বলেই মত পুরসভার। গত ২০ দিনের হিসেব বলছে, সংক্রমণের হারে লাগাম পরানো গিয়েছে। পুজোর বাজার যখন তুঙ্গে তখন তুমুল ভিড়েও শহরে সংক্রমণ মোটামুটি নাগালের মধ্যেই রয়েছে। যা স্বস্তি দিচ্ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। তবে, বুধবার আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎই লাফিয়ে বেড়ে হয়েছে ১৫৯। একারণে পথে বেরনো মানুষের খামখেয়ালি আচরণই দায়ী। কারণ, মাস্ক পরার অভ্যাস ত্যাগ করেছেন অনেকেই। এখনই সতর্ক না হলে ফের ঊর্ধ্বমুখী হবে আক্রান্তের সংখ্যা।
কলকাতা পুরসভার দাবি, মাঝে দৈনিক সংক্রমণ ধীরগতিতে বাড়ছিল। তবে, এখন আক্রান্তের হার একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় আটকে রাখা গিয়েছে। তথ্য বলছে, গত ১ আগস্ট শহরে ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০ আগস্ট, যখন পুজোর বাজার মোটামুটি শুরু হয়েছে, সেদিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ৮৮। তড়িঘড়ি নজরদারি বাড়ায় প্রশাসন। ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হয় বিভিন্ন বাজারে মাইকিং। বাড়ে পুলিসি নজরদারি। সেদিন আক্রান্ত হয়েছিলেন ১১২ জন। তারপর থেকে সংক্রমণের হারকে মোটামুটি একটা গণ্ডির মধ্যে বেঁধে রাখা সম্ভব হয়েছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর শহরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ১২৭ জন। আবার ২০ সেপ্টেম্বর সেই সংখ্যাটা খানিকটা কমে হয় ১০৫। ২৭ সেপ্টেম্বর সেটা এক ধাক্কায় নেমে আসে ৭৬-এ। তবে ১ ও ২ অক্টোবর সেটা আচমকা বেড়ে হয় যথাক্রমে ১৪৬ এবং ১৪৯ জন। আবার, ৫ অক্টোবর সেই সংখ্যা খানিকটা কমে হয়েছে ১২৬ জন। অর্থাৎ দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ওঠানামা করছে। এক পুর স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘গত ১৫-২০ দিনে সংক্রমণ ১১৫ থেকে ১৬০-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। সমান্তরাল বা প্লেটো অবস্থায় পৌঁছেছে সংক্রমণ। যা কিছুটা হলেও আমাদের কাছে স্বস্তির।’
কিন্তু কীভাবে লাগাম পরানো গেল সংক্রমণে? সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, প্রচার এবং সচেতনতার পাশাপাশি সবথেকে বেশি কাজ করেছে টিকাকরণ। কলকাতায় ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রায় ৯০-৯৫ শতাংশ বাসিন্দার অন্তত প্রথম ডোজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষের দ্বিতীয় ডোজও সম্পূর্ণ। মাস খানেকের মধ্যেই শহরে আঠারোর্ধ্ব ১০০ শতাংশ বাসিন্দাকেই টিকা দেওয়া হয়ে যাবে। এই টিকাই সংক্রমণকে বাগে নিয়ে আসার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। এক শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, রাস্তায় লোকজন বেরচ্ছেন। ট্রেনে-বাসে বাদুরঝোলা ভিড়। পুজোর বাজারে ভিড় উপচে পড়ছে। কিন্তু, তারপরেও সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়নি। কারণ, ‘হার্ড’ অ্যান্টিবডি তৈরি না হলেও খানিকটা অবশ্যই হয়েছে। তাই, আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে।