তাজপুরে সমুদ্র বন্দর নির্মাণে আগ্রহী নয় মোদী সরকার
তাজপুরে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে নিজে থেকে খুব একটা উদ্যোগ যে কেন্দ্রীয় সরকার নেবে না তার ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন বন্দর, জাহাজ ও জলপথ পরিবহণমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তাজপুর সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোনও প্রস্তাব এলে তবেই সেটা বিবেচনা করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের সাগরমালা প্রকল্পে নতুন বন্দর নির্মাণের সুযোগ আছে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের ঘোষিত নীতি হল তাজপুরের গভীর সমুদ্র বন্দরটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করা হবে। এর জন্য ইতিমধ্যেই আগ্রহপত্র আহ্বান করেছে রাজ্য। তবে রাজ্য সফরের প্রথম দিনে জাহাজমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরকেই ঢেলে সাজার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্টের অধীন এই দুটি বন্দরের আগামীদিনে বড় সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ নদী ও সমুদ্রের দুটির কাছে থাকার সুবিধা এই বন্দর পেয়ে থাকে। ফলে অভ্যন্তরীণ জলপথ পরিবহণে কলকাতা-হলদিয়া বন্দরের বিশেষ গুরুত্ব আছে। গঙ্গাকে নিয়ে ১ নম্বর, ব্রহ্মপুত্রকে নিয়ে ২ নম্বর ও উত্তর-পূর্ব ভারতের নদীর ৬০ নম্বর অভ্যন্তরীণ জাতীয় জলপথের সঙ্গে এই দুটি বন্দর যুক্ত। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি এবং নেপাল, ভুটানে পণ্য পরিবহণে এই দুটি বন্দরের গুরুত্ব আগামী দিনে বাড়বে।
তবে এদিন বন্দর কর্তৃপক্ষের অতিথিশালায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের জলের গভীরতা কম থাকার বিষয়টি তুলে ধরে আরও ড্রেজিং করার উপর জোর দেন। বন্দর ব্যবহারকারীদের বক্তব্য শুনলেও তার উপর কোনও প্রতিক্রিয়া জাহাজমন্ত্রী দেননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য তিনি জানিয়েছেন, কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে ড্রেজিংয়ের জন্য কেন্দ্র ভর্তুকি দিয়ে থাকে। আগামী চারবছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, জলের গভীরতা বা নাব্যতা কম থাকার জন্য কলকাতা বন্দরে তো বটেই এমনকি হলদিয়া বন্দরেও খুব বড় জাহাজ ঢুকতে পারে না। রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্য প্রসারের জন্য বড় বড় জাহাজ আসা খুব প্রয়োজন। তাই রাজ্য সরকার তাজপুরে একটি গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে তুলছে। নাব্যতাজনিত খামতি মোকাবিলা করতে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্ট কর্তৃপক্ষ বড় জাহাজ থেকে সাগরদ্বীপের কাছে ও স্যান্ডহেডে সমুদ্রের মধ্যে পণ্য নামানোর ব্যবস্থা চালু করেছে। কিন্তু এই ব্যবস্থার উন্নতি করার বিষয়টি বন্দর ব্যবহারকারীরা বৈঠকে তোলেন।
জাহাজমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম কলকাতায় এসে সর্বানন্দ সোনেওয়াল কলকাতা বন্দর এবং বন্দরের নিজস্ব হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। কয়েকটি নতুন পরিকাঠামো প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। চেয়ারম্যান বিনীত কুমার সহ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে কাজকর্ম পর্যালোচনা করা হয়। আজ, শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলদিয়া বন্দর পরিদর্শনে গিয়ে সেখানেও কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।