সুস্থতার হার কি সত্যিই বাড়ছে ভারতে?
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ক্রমাগত দাবি জানাচ্ছেন দেশে করোনা থেকে সুস্থতার হার ক্রমেই বাড়ছে৷ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে দেশে সুস্থতার হার ৩৩.৬৬ শতাংশ৷ প্রতি তিন জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে এক জন সুস্থ হয়ে উঠছেন। কিন্তু সত্যিই কি সুস্থ হয়ে উঠছেন এতজন, নাকি মৃদু উপসর্গের করোনা আক্রান্তদের ১০ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার নয়া নির্দেশিকার সৌজন্যে বাড়ছে ডিসচার্জের তালিকা?
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নতুন ‘ডিসচার্জ নির্দেশিকা’কে হাতিয়ার করেই করোনায় সুস্থতার হার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন চিকিৎসকদের একাংশ৷ প্রশ্ন উঠছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ডাবলিং রেটের দাবি নিয়েও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সময় বেড়েছে। অর্থাৎ, দু’সপ্তাহ আগে ১১.১ দিনে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছিল, তিন দিন আগে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩.৯ দিনে আর বর্তমানে ১৪ দিনে দ্বিগুণ হচ্ছে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।
অথচ পরিসংখ্যান বলছে, নতুন সংক্রমণে নিত্যদিন তৈরি হচ্ছে রেকর্ড! বৃহস্পতিবারের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩,৭২২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণের উপস্থিতি মেলায় দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৮,০০৩। আর ২৪ ঘণ্টায় ১৩৪ জনের মৃত্যুতে করোনা বলি বেড়ে হয়েছে ২,৫৪৯। এই পরিস্থিতি কতটা আশাব্যঞ্জক, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
মূল প্রশ্নটা সুস্থতার হার নিয়ে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৬,২৩৪ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে গত ১ মে থেকে ৭ মে পর্যন্ত সাত দিনে দেশে সুস্থ হয়েছিলেন ৬,৮৯৪ জন৷ এর অর্থ গড়ে প্রতিদিন সুস্থ হয়েছেন ৯৮৫ জন৷ গত ৮ মে নতুন ডিসচার্জ নির্দেশিকা জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃদু উপসর্গযুক্ত কোনও করোনা রোগীর চিকিৎসা পর্বের ১০ দিনের মধ্যে শেষ তিন জ্বর না থাকলে তাকে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এই রোগীকে ছাড়ার আগে কোনও করোনা পরীক্ষারও প্রয়োজন নেই বলে জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়৷ দেখা যাচ্ছে, এই নির্দেশিকা জারির পর রাতারাতি বেড়ে গিয়েছে সুস্থতার হার৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, অন্যান্য দেশের নীতি অনুসরণ করেই ডিসচার্জ নীতিতে এই বদল। কিন্তু তাতে কি দেশের সামগ্রিক করোনা চিত্র স্পষ্ট হচ্ছে? উঠছে প্রশ্ন।