আসানসোল স্টেশনে যাত্রীদের কথা কাটাকাটি আরপিএফের সঙ্গে
ট্রেন সফরের দু’দিন খাওয়া জোটেনি। পাওয়া যায়নি জল। শৌচাগারের অবর্ণনীয় দশা। সামাজিক দূরত্বের বিধি শিকেয় তুলে যাত্রীদের ট্রেনে তোলা হয়েছে। এমনই অসংখ্য অভিযোগ তুলে রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, যাত্রীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁদের নির্ধারিত স্টেশনে নামতেও দেওয়া হয়নি!
বেঙ্গালুরু-এনজিপি শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনটি বৃহস্পতিবার আসানসোল হয়ে দুর্গাপুরে আসে। তবে তাতে পরিযায়ী শ্রমিকরা ছাড়াও উঠেছিলেন বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা করাতে যাওয়া মানুষজন। দুর্গাপুরে ইঞ্জিন বদলে ট্রেন চলে যায় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের উদ্দেশে। কিন্তু তার আগে আসানসোল ও দুর্গাপুরে স্টেশনে প্রবল যাত্রী বিক্ষোভের মুখে পড়েন রেলকর্তারা। এমনকী, ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ির দিকে চলার সময়ও যাত্রীদের ক্ষোভ এতটুকু কমেনি। বহু যাত্রী চলন্ত ট্রেনে ভিডিয়ো করে নিজেদের দুর্ভোগ ও আতঙ্কের কথা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করেন।
যাত্রীদের অনেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, তাঁদের বলা হয়েছিল, পুরুলিয়াতে ট্রেন থামবে। তাই তাঁরা পুরুলিয়ার টিকিট কেটেছিলেন। এদিন ভোরে পুরুলিয়াতে ট্রেনটির দাঁড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু সেখানে না-দাঁড়িয়ে ট্রেন চলে আসে আসানসোলে। এখানে ২৪ জন যাত্রী নেমে যান। বাকি যাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। ট্রেনের শৌচাগার, পানীয় জল, খাবারের অভাব নিয়ে অভিযোগ তুলে যাত্রীরা মারমুখী হয়ে ওঠেন।
ক্ষিপ্ত যাত্রীদের প্রশ্ন, বেঙ্গালুরু থেকে ৯২০ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে কেন তাঁরা ন্যূনতম পরিষেবা পাবেন না? সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে যাত্রীদের বুঝিয়ে শান্ত করিয়ে সেই ট্রেন আনা হয় দুর্গাপুর স্টেশনে। যাত্রীদের বক্তব্য, রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, ‘দুর্গাপুরে ট্রেন থামবে। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার সমস্ত আয়োজন করা হয়েছে।’
কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। দুর্গাপুরে ইঞ্জিন বদল করার জন্য ট্রেন দাঁড়ায়। সেই সময় ৫৮ জন যাত্রী নেমে পড়েন। যাত্রীদের নামতে দেখে রেল পুলিশ এসে তাঁদের জোর করে ট্রেনে ওঠানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। তখনই যাত্রীদের সঙ্গে রেল পুলিশের হাতাহাতির উপক্রম হয়। খবর পেয়ে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে স্টেশনে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। দুর্গাপুর স্টেশনে ওই ৫৮ যাত্রীকে খাবার ও জল দেওয়া হয়। এর পর প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে গন্তব্যে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করে মহকুমা প্রশাসন।