জোট শরিকের সাম্প্রদায়িক ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলেছে সিপিএম -কংগ্রেসকে
সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও। কার্যত সংকটে ঠেলে দিয়েছে সংযুক্ত মোর্চাকে। পুজো কাটতে না কাটতেই জোটসঙ্গী আইএসএফ বিধায়কের বড় ভাই এমন বক্তব্য রেখেছেন, যা এড়িয়ে যেতে মরিয়া সিপিএম ও কংগ্রেস। এই ভাষণের দায় কাঁধে নিতে নারাজ বাকি দুই দল। অস্বস্তি এমনই যে, এই নিয়ে কথা বলতেও রাজি নয় আলিমুদ্দিন। এই সংক্রান্ত প্রশ্ন এলেই হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে পলিটব্যুরোর বিবৃতি। যদিও প্রকাশ্যে নিন্দা করেছে কংগ্রেস।
সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্নভাবে গন্ডগোল হয়। প্রথমে কুমিল্লাতে শুরু হলেও পরে তা ছড়িয়ে পড়ে এই সাম্প্রদায়িক সমস্যা। ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন চারজন। অন্তত এমনটাই জানাচ্ছে বাংলাদেশ প্রশাসন। প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আজ থেকে পথে নামছে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয়েছে সংযুক্ত মোর্চার অন্দরে।
শনিবার ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি একটি ভাষণ দেন। যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়। ২১শের ভোটের আগেই আইএসএফের প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। পরে ফেব্রুয়ারির ব্রিগেড সমাবেশেও বক্তব্য রাখেন তিনি। ঘটনাচক্রে রাজ্য বিধানসভায় এই মুহূর্তে সংযুক্ত মোর্চার একজন মাত্র বিধায়ক, ভাঙ্গড় থেকে জিতে আসা নওশাদ সিদ্দিকি সম্পর্কে আব্বাসের ছোট ভাই। এই ভিডিওতে আব্বাস বলছেন, ‘সব মেনে নেব কিন্তু ধর্মের অপমান মানব না’।
সঙ্গে আরও কিছু সাম্প্রদায়িক বক্তব্য যা ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তাল নেট দুনিয়া।জোট শরিকের এহেন সাম্প্রদায়িক ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলেছে আলিমুদ্দিনকে। ছোট বড় সব নেতাই বল ঠেলেছেন রাজ্য সম্পাদক ও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের কোর্টে। সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘এককভাবে আমি কাউকে কিছু বলছি না। পলিটব্যুরো বিবৃতি সবাইকে পাঠানো হয়েছে। কে কী কোথায় বলল সেটা আমার বলার কথা নয়। যেখানকার গোলমাল সেটা নিয়ে আমরা বলেছি। আব্বাস সিদ্দিকি সংযুক্ত মোর্চায় নেই। উনি একজন ধর্মগুরু। ওনার ভাই বিধায়ক। তিনি এরকম কিছু বলেননি’।উল্টোদিকে, আব্বাসের এই ভাষণ শুনেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি জানান, ‘গতকাল আব্বাস সিদ্দিকির উক্তি অত্যন্ত নিন্দনীয়। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি কংগ্রেস কোনওদিন বরদাস্ত করেনি। তার বিরুদ্ধে শতাব্দী ব্যাপী লড়াই করে যাচ্ছে আগামী দিনেও করবে। শেষ রক্তবিন্দু অবধি লড়ে যাবে কংগ্রেস, ভোটের অঙ্কের চেয়ে বাংলা তথা দেশের সম্প্রীতি রক্ষা কংগ্রেসের কাছে অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ’।এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আব্বাস সিদ্দিকির বক্তব্য নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তাঁর দলের তরফে শুধু জানান হয়েছে, বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন নওশাদ। তবে আব্বাসের এই ভাষণ ঘিরে যে সংযুক্ত মোর্চা যথেষ্ট বিপাকে, তা স্পষ্ট।