বারাসতে প্রকাশ্যে বিজেপির কোন্দল, দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝোলালেন বিধায়ক
বিজেপি’র গোষ্ঠী কোন্দল ফের বেআব্রু হল বনগাঁয়। জেলা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দলীয় বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়ার বিরুদ্ধে। ফলে গত পাঁচ দিন ধরে জেলা কার্যালয় কার্যত তালাবন্ধ। এই ঘটনায় দলীয় কর্মীদের মধ্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কোন্দলের ঠেলায় এমনিতেই প্রতিদিন কেউ না কেউ দল ছেড়ে তৃণমূলে ভিড়ছেন। তার উপর জেলা কার্যালয়ে তালা পড়ায় পরিস্থিতি কোন দিকে এগবে, তা ভেবে শিউরে উঠছেন দলের সাধারণ কর্মীরা। যদিও বিধায়ক তালা লাগিয়ে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ শহরের গান্ধীপল্লিতে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়ার তিনতলা বাড়ি রয়েছে। গত ১লা ফেব্রুয়ারি বিজেপি এই বাড়িটি ভাড়া নিয়ে জেলা কার্যালয় করে। মাসে ভাড়া ১৫ হাজার টাকা। ১১ মাসের জন্য বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন জেলার সাংগঠনিক সভাপতি মানসপতি দেব। স্ট্যাম্প পেপারে দু’পক্ষের সইসাবুদও রয়েছে। কিন্তু ছ’মাসের বেশি হল, অশোকবাবু ভাড়া পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। অফিস সেক্রেটারি সুবীর সেনের কাছে ঘরের চাবি থাকে। অভিযোগ, ষষ্ঠীর দিন অশোকবাবু জেলা কার্যালয়ের চাবি নিয়ে নেন সুবীরবাবুর কাছ থেকে। তারপর থেকে তিনি আর চাবি ফেরত দিচ্ছেন না। চাবি চাইতে গেলে আগে ভাড়া মেটাতে বলছেন অশোকবাবু। রবিবার সুবীরবাবু সংবাদিকদের বলেন, ষষ্ঠীর দিন আশোকবাবু জামাকাপড় বিলি করার কথা বলে অফিসের চাবি নেন। তারপর তিনি আর চাবি ফেরত দিচ্ছেন না। বলছেন, ছ’মাসের বেশি ভাড়া বকেয়া রয়েছে। ওই টাকা না পেলে তিনি চাবি দেবেন না। তিনি এ নিয়ে দলে আলোচনা করতে পারতেন। প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের পর থেকে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় গোষ্ঠী কোন্দল চরম আকার নিয়েছে। দলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মানসপতি দেবের সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুব্রত ঠাকুরের অহিনকুল সম্পর্ক। তাঁদের মধ্যে মুখ দেখাদেখি কার্যত বন্ধ। এই আবহে বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ছাড়াও একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্য ও বিজেপি’র নেতা-কর্মীরা দল ছেড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে জেলা কার্যালয়ে তালা ঝোলার ঘটনা সাধারণ কর্মীদের ক্ষোভের আগুন ঘি ঢেলেছে।
তালা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে অশোকবাবু বলেন, অফিস সেক্রেটারি কেন এমন বলছেন, তা আমি জানি না। ঘরভাড়া বাকি নেই। অফিসে কে বা কারা তালা লাগিয়েছে, তা আমি জানি না। জেলা কার্যালয়ের পিছন দিকে বিধায়কের কার্যালয় রয়েছে। শুধু ওই ঘরের চাবিই আমার কাছে রয়েছে। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অশোকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল। দলে এনিয়ে আলোচনা করা হবে।