রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

মাত্র সাড়ে ছ’মাসে ‘১০০ দিনের কাজে’র কেন্দ্রের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করল বাংলা

October 19, 2021 | 2 min read

মাত্র সাড়ে ছ’মাসে ১০০ দিনের কাজের শ্রমদিবস তৈরির ক্ষেত্রে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করল রাজ্য সরকার। বর্তমান আর্থিক বর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল ২২ কোটি। সোমবার, ১৮ অক্টোবর সেই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলল বাংলা। ইতিমধ্যে শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে ২১ কোটি ৯৬ লক্ষ। অবিলম্বে শ্রমদিবস তথা ‘লেবার বাজেট’ বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর। এখনও পর্যন্ত শ্রমদিবস বৃদ্ধির কোনও চিঠি এসে পৌঁছয়নি। ফলে সেই প্রকল্পের কাজ চালাতে জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ১০০ দিনের কাজ নিয়ে পর্যালোচনা করেন পঞ্চায়েত দপ্তরের অফিসাররা। সেখানে ঠিক হয়, গরিব মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই প্রকল্পের কাজ যেমন চলছে, তেমনই চলবে। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পে ৭৯০৭ কোটি ১০ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রায় ৬৫ লক্ষ পরিবার এই প্রকল্পে কাজও পেয়েছে। ৯০ লক্ষ মানুষ ব্যক্তিগতভাবে কাজ পেয়েছেন। এক একটি পরিবার কাজ পেয়েছে গড়ে ৩৫ দিন।

কিন্তু এই প্রকল্পের কাজ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। ইতিমধ্যে ওই মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের অফিসারের নেতৃত্বে একটি টিম বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিদর্শন করেছেন। তারা একটি রিপোর্টও জমা দিয়েছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে। সেই রিপোর্টে কিছু জিনিসপত্রের ক্রয় (পারচেসিং) সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। উৎসব মরশুমের শেষে আবার কেন্দ্রীয় টিম আসবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। কী করে মাস ছয়েকের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা এরাজ্য অতিক্রম করে গেল, তা খতিয়ে দেখবে ওই টিম। দ্রুতগতিতে এই প্রকল্পের কাজ হওয়ায় সংশয় দেখা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের মনে। অতীতেও অবশ্য কেন্দ্রীয় টিম দফায় দফায় এসে খতিয়ে দেখেছে। অন্য রাজ্যের তুলনায় শ্রমদিবস তৈরিতে বাংলা অনেক এগিয়ে থাকায় নানা ধরনের প্রশ্ন তুলছেন বলে অভিযোগ রাজ্যের অফিসারদের।

তাঁদের মতে, আসলে ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের রাজ্যে নানা ধরনের কাজে যুক্ত করা হয়। যশ, ঘূর্ণিঝড় হওয়ার পর বাঁধ মেরামতি থেকে শুরু করে ম্যানগ্রোভ লাগানোর কাজে লাগানো হচ্ছে ১০০ দিনের শ্রমিকদের। ফলে শ্রমদিবস বেশি করে সৃষ্টি হবেই। শুধু পঞ্চায়েত দপ্তরের কাজ নয়, সেচ, বন, নগরোন্নয়ন সহ বিভিন্ন দপ্তরের কাজেও তাঁদের ব্যবহার করা হয়। তাঁরা দিন প্রতি ২০২ টাকা করে পান। এর ফলে গ্রামের গরিব মানুষের হাতে কিছুটা হলেও পয়সা যাচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, গরিব মানুষ আর্থিক দিক দিয়ে স্বনির্ভর হোন। করোনা আবহে লকডাউনের সময়েও ১০০ দিনের কাজ অনেকের মুখে অন্ন জুগিয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে তাঁদের ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় টিম এসে জব কার্ড হোল্ডারদের মাস্টার রোল খতিয়ে দেখছে। খতিয়ে দেখছে, কেনাকাটার প্রক্রিয়া সঠিক পদ্ধতিতে হচ্ছে কি না। অবশ্য বিষয়টি গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্য সরকার। রাজ্যের মতে, সমস্ত পেমেন্ট হয় সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। আর সমস্ত কেনাকাটাই হয় টেন্ডারের মাধ্যমে। এর আগেও টিম এসেছে, আবারও আসবে, অসুবিধার কিছু নেই। এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, লেবার বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে আরও দেওয়া উচিত। সেটা আমাদের অধিকার। গত বছর ৪১ কোটির বেশি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছিল। আর কেন্দ্রীয় টিম আসবে, আসুক।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #100 days Work

আরো দেখুন