আরিয়ানের জামিনের জন্য পণ গৌরীর! মিষ্টি ঢুকবে না মন্নতে
আরিয়ান জেলে। বাড়িতে কিছুতেই মন টিকছে না শাহরুখ-গৌরীর। মানসিকভাবেও ভেঙে পড়ছেন তাঁরা। উত্সবের মরশুমেও অন্ধকার মন্নত। ছেলের জামিনের জন্য বেশ কয়েকবার আদালতের দরজায় কড়া নেড়েছেন খান দম্পতি। কিন্তু, লাভ হয়নি। আজ, বুধবার আবার শুনানি রয়েছে। ছেলের মুক্তির জন্য নবরাত্রিতে উপোস রেখেছিলেন গৌরী। নিয়মিত প্রার্থনাও করছেন। আরিয়ান বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত মন্নতে মিষ্টি তৈরি করতেও নিষেধ করেছেন তিনি। রান্নার লোকেদেরও সেকথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এক রাধুঁনি নাকি দুপুরে খাওয়ার আগে ক্ষীর বানাতে গিয়েছিলেন। খবর পেয়েই তাঁকে বাধা দেন গৌরী। সাফ জানিয়ে দেন, আরিয়ান না ফেরা পর্যন্ত কোনও মিষ্টি তৈরি হবে না। শাহরুখও বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীদের বাড়িতে আসতে বারণ করেছেন তিনি। মাদক মামলায় গ্রেপ্তার ছেলেকে কীভাবে জেল থেকে মুক্ত করা যায় তা নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছেন। শাহরুখের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, বুধবার আরিয়ানের জামিন নিশ্চিত করতে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছেন না তিনি।
পরিবারের মধ্যেও নানা জল্পনা চলছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিনেতার কথায়, ‘শুধু জামিন নয়, আরিয়ানকে বাড়ি ফেরানো খান পরিবারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। শাহরুখকে কখনও এভাবে ভেঙে পড়তে দেখিনি। কীভাবে মাদক কাণ্ডে আরিয়ানের নাম জড়ালো তা কিছুতেই বোঝা যাচ্ছে না। পরিবারের অনেকের মতে, এটা শুধুই আইনি বিষয় নয়। এরমধ্যে অন্যকিছুও রয়েছে। ’ ‘অন্যকিছু’ বলতে কী পেশাদারি শত্রুতা নাকি রাজনীতি? সেব্যাপারে কিছুই খোলসা করেননি খান পরিবারের ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তি।
মাদক কাণ্ডে আরিয়ানের নাম জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক আকচা-আকচি শুরু হয়ে গিয়েছে। এরমধ্যে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন শিবসেনার নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী কিশোর তিওয়ারি। তিনি জানিয়েছেন, নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র এক আধিকারিকের স্ত্রী সিনেমা জগতে সাফল্য পাননি। ওই আধিকারিকই প্রতিশোধ নিতে আরিয়ানকে ফাঁসিয়েছে। এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশনও দাখিল করেছেন তিনি।
তথ্যভিজ্ঞ মহলের মতে, আরিয়ানকে মাদক পার্টি থেকে আটক করেছিলেন এনসিবি আধিকারিক সমীর ওয়াংখেড়ে। তাঁর স্ত্রী বলিউডে একটি ছবিতে কাজও করেছেন। যদিও পরে আর কোনও ছবিতে তাঁকে দেখা যায়নি। ‘এনসিবি আধিকারিক’ বলতে সমীরের কথাই উল্লেখ করেছেন শিবসেনা নেতা। পিটিশনে কিশোর জানিয়েছেন, আরিয়ানের কাছ থেকে কোনও মাদক উদ্ধার হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মেলেনি। তা সত্ত্বেও এতদিন ধরে তাঁকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। এটি একজন এনসিবি আধিকারিকের ক্ষমতার অপব্যবহারের উদাহরণ। এর জেরে একজনের জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। একই সঙ্গে কিশোরের অভিযোগ, স্ত্রী ইন্ড্রাস্ট্রিতে সাফল্য পাননি বলে এনসিবি আধিকারিক সেলিব্রিটিদের নিশানা করছেন। শিবসেনা নেতার এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি। মহারাষ্ট্র বিজেপির মুখপাত্র রাম কদমের বক্তব্য, আরিয়ান কিংবা ব্যক্তিগতভাবে আমরা কারও বিপক্ষে নই। কিন্তু, মহারাষ্ট্র সরকার কেন ড্রাগ মাফিয়াদের সমর্থন করে এনসিবিকে আক্রমণ করছে?