উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গবাসীকে শান্তির বার্তা মমতার

October 25, 2021 | 2 min read

ডিভাইড অ্যান্ড রুল নয়। ভাগাভাগি নয়, বেসুর নয়। আমরা সবাই একটাই পরিবার। রবিবার শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে উত্তরবঙ্গবাসীকে এই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, কোভিড নিয়ে সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে ছট পুজোর ঘাট সংস্কার করার নির্দেশ দিয়েছেন। 


গত লোকসভা ভোটের পরই উত্তরবঙ্গের মাটিতে শক্তিবৃদ্ধি ঘটে বিজেপির। একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও এখানকার মাটিতে নিজেদের শক্তি ধরে রাখে পদ্ম শিবির। তারা বিধানসভা ভোটের পর উত্তরবঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিও তোলে। একটি জঙ্গি সংগঠনও একই দাবি তুলেছে। এই প্রেক্ষাপটে এদিন শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে উত্তরবঙ্গকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার তিনি উত্তরবঙ্গ সফরের লক্ষ্যে শিলিগুড়ি এসে পৌঁছান।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গে ভাগাভাগি নয়। বেসুর নয়। আমরা সবাই এক। আমরা একটাই পরিবার। সবাই এক হয়ে থাকলে পরিবারে সুখ, শান্তি, স্বস্তি, আসে। তাই সকলে একসঙ্গে থাকতে চাই। কিন্তু, কেউ কারও সঙ্গে ঠিকভাবে কথা বলবে না। কেউ কারও দিকে তাকাবে না। একসঙ্গে থাকবে না। এরকম চাই না। আমরা মানবিক সমাজ চাই। সংস্কৃতির সমাজ চাই। তাঁর এই বক্তব্য শেষ হতেই করতালিতে ফেটে পড়েন শ্রোতারা। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর অনেকে বলেন, উত্তরবঙ্গকে ঐক্যবদ্ধ থাকার যে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। 

এনিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যেও জোর চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, বিধানসভা ভোটের পর আলাদা রাজ্যের জিগির তুলে উত্তরবঙ্গে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেছে কিছু সংগঠন। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এদিনই প্রথম উত্তরবঙ্গে আসেন মমতা। কাজেই, এদিনের অনুষ্ঠান থেকে তিনি যে বার্তা দিয়েছেন, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে বিদ্যুৎ, ক্রীড়া ও যুব কল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, কৃষিবিপনন মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র, মন্ত্রী গোলাম রব্বানি, মন্ত্রী বুলুচিক বরাইক, শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব সহ দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পংয়ের জেলা প্রশাসন ও পুলিসের শীর্ষ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চে বিভিন্ন মন্ত্রীদের দেখিয়ে এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নাম করেও ঐক্যের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, তিনি ছট পু঩জো নিয়ে প্রশাসনের আধিকারিকদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। বলেন, আগামী ১০নভেম্বর ছট পু঩জো। ছট পু঩জোর জন্য শীঘ্রই বিভিন্ন নদীর ঘাট সংস্কার করতে হবে। ঘাটের পাড় বাধানোর পাশাপাশি লাইট লাগিয়ে দিতে হবে। এ ব্যাপারে প্রতিটি জেলার পুলিস ও প্রশাসনের আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলছি। কোভিড বিধি মেনে যাতে সর্বত্র সুষ্ঠুমতো ছট পু঩জো করা হয়। 


মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, উত্তরবঙ্গে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া দেখা দেয়। তাই বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে মশারি প্রদান করতে হবে। এজন্যও তিনি পুলিস ও প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। তিনি কোভিড মোকাবিলায় সকলকে আরও দু’মাস সতর্ক থাকতে বলেন। সকলকে মাস্ক পরারও পরামর্শও দেন।  এদিকে পাহাড় নিয়ে কার্শিয়াংয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে বিমল গুরুং নয়, রোশন গিরি ডাক পেয়েছেন। বিনয় তামাংকেও ওই বৈঠকে ডাকা হয়নি। এর পরই রোশন গিরি মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফরকে স্বাগত জানিয়েছেন। রবিবার তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে পাহাড়, তরাই, ডুয়ার্স নতুন প্যাকেজ পেতে পারে। জিটিএ’কে সাধারণ মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড় সফরে আসছেন। ফলে প্রশাসনিক বৈঠক শেষ করার পর পাহাড়বাসীর জন্য তিনি কী বার্তা দেন, তা জানতে মুখিয়ে রয়েছেন রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষ। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#North Bengal, #Mamata Banerjee, #peace

আরো দেখুন