টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারাল পাকিস্তান
দারুণ ছন্দে বাবর আজমের পাকিস্তান (Pakistan)। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T20 World Cup 2021) প্রথম ম্যাচে ভারতকে দুরমুশ করে হারিয়েছিল ইমরান খানের দেশ। মঙ্গলবার দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে (New Zealand) ৫ উইকেটে হারাল পাকিস্তান।মঙ্গলবার টস জিতে কিউয়িদের প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান বাবর আজম। ২০ ওভারে নিউজিল্যান্ড করে ৮ উইকেটে ১৩৪ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮.৪ ওভারে পাকিস্তান জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়। রান তাড়া করতে নেমে একসময় উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু শেষের দিকে আসিফ আলি ও শোয়েব মালিকের ব্যাট পাকিস্তানকে জয় এনে দেয়। আসিফ আলির কথা বিশেষ করে বলা দরকার। ১২ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থেকে যান তিনি। তিনটি ছক্কা ও একটি চার মারেন তিনি। টিম সাউদির বল আছড়ে পড়ে তাঁর হেলমেটে। তবুও লড়াই ছেড়ে চলে যাননি আসিফ। অন্য দিকে বহু যুদ্ধের সৈনিক শোয়েব মালিক ২০ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থেকে যান। এই দু’জনই শারজায় উৎসবের মেজাজ এনে দেন।
টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৩৪ মোটেও বড় রান নয়। দুটি ম্যাচেই পাক বোলাররা প্রতিপক্ষকে অল্প রানে আটকে রাখতে সফল। বাবর আজমরা ঠিক যত রান তাড়া করতে স্বচ্ছন্দ, শাহিন আফ্রিদিরা ঠিক সেই কাজটাই করছেন এবারের মেগা টুর্নামেন্টে। ভারতের বিরুদ্ধে শুরুতেই ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিলেন আফ্রিদি। এদিন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার মার্টিন গাপ্তিল ও ডারিল মিচেলকে বিপজ্জনক হতে দেননি পাক বোলাররা। গাপ্তিল বড় শট খেলতে দক্ষ। সেই গাপ্তিলকেও এদিন ভযংকর হতে দেননি আফ্রিদি-হাসান আলিরা। হ্যারিস রাউফের বলে বোল্ড হন গাপ্তিল (১৭)। আরেক ওপেনার ডারিল মিচেল করেন ২৭ রান। কিউয়িদের রান তখন ২ উইকেটে ৫৪। দ্রুত ফেরেন নিশামও (১)। উইকেট পরপর হারানোর ফলে নিউজিল্যান্ডের রান তোলার গতি কমে যায়।
যে কোনও ফরম্যাটের ক্রিকেটে কিউয়ি অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন দুর্দান্ত ব্যাট। ঠিক যখন তাঁর ব্যাট কথা বলতে শুরু করে দিয়েছে, ঠিক তখনই হাসান আলি রান আউট করেন উইলিয়ামসনকে (২৫)। আগের ওভারেই মহম্মদ হাফিজকে মাঠের বাইরে ফেলেছিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। তিনি ফিরে যাওয়ার পরে রান তোলার গতি আরও কমে যায়। ডেভিড কনওয়ে ২৭ রান করলেও পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা রান পাননি। উল্টে পাক বোলাররা দাপট দেখান। হ্যারিস রাউফ চারটি উইকেট নেন। শাহিন আফ্রিদি, ইমাদ ওয়াসিম ও মহম্মদ হাফিজ একটি করে উইকেট নেন।
বাবর আজম ও রিজওয়ান জুটি যে কোনও দলের বোলিং আক্রমণ ধ্বংস করতে দক্ষ। এদিন অবশ্য বাবর আজম রান পাননি। সাউদির বলে মাত্র ৯ রানে আউট হন পাক অধিনায়ক। পাকিস্তানের রান তখন ২৮। ফখর জামানকে (১১) দ্রুত ফেরান সোধি। স্যান্টনারকে মারতে গিয়ে আউট হন হাফিজ (১১)। লং অফে দুরন্ত ক্যাচ ধরেন কনওয়ে। এবারের টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা ক্যাচ এটি। ভারতের বিরুদ্ধে দুরন্ত খেলা রিজওয়ানকে (৩৩) ঠকে যান সোধির ডেলিভারিতে। পাকিস্তানের রান তখন ৪ উইকেটে ৬৯। ট্রেন্ট বোল্টের বলে আউট হন অভিজ্ঞ ইমাদ ওয়াসিম (১০)।পর পর উইকেট যাওয়ায় চাপ অনুভব করতে শুরু করে দেয় পাকিস্তান। কিন্তু ১৭ তম ওভারের সাউদিকে পর পর দুটো ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ অনেকটাই কমান আসিফ আলি। ম্যাচের রাশও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি ও অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক মাথা ঠান্ডা রেখে বাকি কাজটা সেরে ফেলেন। অন্ধকার থেকে আলোর রাস্তায় পাক ক্রিকেট।