যাত্রী-ভোগান্তি দূর করতে উদ্যোগী পরিবহণ দপ্তর, চাইল বেসরকারি বাসের হিসেব
পুজো মিটতেই কলকাতা ও শহরতলিতে বেসরকারি বাস-মিনিবাসের সংখ্যা কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন পরিবহণ দপ্তর। যাত্রী স্বার্থে এবার তার কারণ অনুসন্ধানে নামল প্রশাসন। বৃহত্তর কলকাতার সুনির্দিষ্ট সবক’টি রুটে বর্তমানে কতগুলি বাস চলছে, তার হিসেব চাইল রাজ্য সরকার। পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘যাত্রীদের কাছ থেকে রাস্তায় বাস কম থাকার অভিযোগ আসছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বাস মালিকদের চিঠি পাঠানো হয়েছে।’ এই মর্মে বৃহস্পতিবার কলকাতার আঞ্চলিক পরিবহণ বিভাগের সচিব সাতটি বাস মালিক সংগঠনকে চিঠি দিয়েছেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেন, যাত্রী পরিষেবায় রুটগুলিতে সন্তোষজনক বাস-মিনিবাস থাকছে না। দপ্তরের কাছে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট রয়েছে। সেই সূত্রে গণ পরিবহণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তার আশু সমাধান করতে অবিলম্বে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলিকে চালু গাড়ির প্রকৃত সংখ্যা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, শহর ও শহরতলিতে কোন রুটে কত সংখ্যক বাস মিনিবাস চলবে, তা স্থির করে পরিবহণ দপ্তর। সেই মতো আবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট রুটে বাসের অনুমোদন দেওয়া হয়। একটি নির্দিষ্ট রুটে সর্বোচ্চ কত বাস-মিনিবাস চলবে পোশাকি ভাষায় তাকে ‘ফ্রিট স্ট্রেইন্থ’ বলা হয়। সরকারি খাতায় নথিভুক্ত এই ‘ফ্রিট স্ট্রেইন্থ’ অনুযায়ী বাস রাস্তায় নামছে না, চিঠিতে তারও উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, সরকারি চিঠি পেয়েছি। এর থেকে স্পষ্ট, রাজ্য সরকার স্বীকার করে নিল রাস্তায় বাস-মিনিবাসের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। বেসরকারি এই বাস পরিবহণের সঙ্গে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যুক্ত। স্বভাবতই এই ক্ষেত্রটি দুর্বল হয়ে পড়লে বিরাট অংশের মানুষ কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়বেন। যার আর্থিক দায় এসে পড়বে সরকারের ঘাড়ে। রাহুলবাবুর আবেদন, গণ পরিবহণের হাল ফেরাতে সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ করা উচিত। তিনি আরও বলেন, পরিবহণ দপ্তরের কাছেই সমস্ত রুটের ‘ফ্রিট স্ট্রেইন্থ’ সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। এই চিঠি দেওয়ার প্রকৃত কারণ সম্পর্কেও সন্ধিহান তিনি।
অন্যদিকে, বাস মালিক সংগঠনের বর্ষীয়ান নেতা তথা এন্টালির বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমি বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের যাবতীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ১০০ টাকা লিটার দরে ডিজেল কিনে গাড়ি চালানো সত্যিই সমস্যার। স্বর্ণকমলবাবুর প্রশ্ন, কোনও ব্যবসায়ী ঘরের টাকা লাগিয়ে লাভ তুলতে না পারলে কেন বাস চালাবে? পুরনো ভাড়ায় গাড়ি রাস্তায় নামানো মালিকদের পক্ষে রীতিমতো কষ্টকর বলেও মনে করেন রাজ্যের শাসকদলের এই প্রবীন বিধায়ক।