দিল্লির দাদাগিরি আর চলবে না গোয়ায়, সাফ জানিয়ে দিলেন মমতা
ফের একবার বিজেপির বিরুদ্ধে ঐকবদ্ধভাবে লড়ার জন্য আঞ্চলিক দলগুলিকে আহ্বান জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বর্তমানে তিনদিনের সফরে সৈকত-রাজ্যে রয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। এদিন সকালে গোয়ার ডোনা পাওলার ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে বক্তব্য রাখেন তিনি। বলেন, ‘আমরা গোয়ার মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। আগে আমাদের নেতারা এসেছেন এবার আমি এলাম।
তাঁর দাবি, ‘আমরা চাই না ভোট ভাগাভাগি হোক। বিজেপি-কংগ্রেস একে অপরের সঙ্গে সমঝোতা করছে।’ তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘গোয়ার সঙ্গে বাংলার মিল ফুটবলে। বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যথেষ্ট উন্নত, গোয়ারও তাই।’
মমতা আরও বলেন, ‘আঞ্চলিক দলগুলিকে একজোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। দেশের সর্বত্র যাওয়ার সবার অধিকার আছে। কিন্তু আমাকে, আমার দলকে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’ তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘গোয়ার মানুষের বহু সমস্যা রয়েছে। আমরা গোয়ার মানুষের জন্য লড়াই করব।’
জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে বেকারত্ব ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এদিন ফের একবার সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘প্রতিদিন পেট্রল, ডিজেলের দাম বাড়ছে। সারা দেশেই বেকারত্ব মাত্রা ছাড়িয়েছে।’
মমতা বলেন, ‘দেশের জন্য বিজেপি চিন্তিত নয়। কৃষকরা একবছর ধরে রাস্তায় বসে আছেন। তাদের কথা কেন্দ্রীয় সরকার ভাবছেই না।’ তিনি যোগ করেন, ‘পিএম কেয়ারস্ ফান্ড নিয়ে কেন কোনও তথ্য নেই। কেউ কোনও প্রশ্ন করলেই তাকে কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে।’
নেত্রীর অভিযোগ, ‘কংগ্রেসের জন্যই বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি হচ্ছে। আমরা বিজেপির সামনে মাথা নীচু করব না।’
মমতা এদিন বলেন, ”প্রশান্ত কিশোরের মন্তব্যের ভুল ব্যাখা করা হচ্ছে। ও বলতে চেয়েছে বিজেপি-কে হটাতে একজোটে লড়তে হবে। যেভাবে কংগ্রেস লড়াই করছে, সেভাবে হবে না।’
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গোয়ার সঙ্গে বাংলার সাদৃশ্যের কথা বারবার তুলে ধরেছেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, ”বাংলার সঙ্গে গোয়ায় অনেক মিল। আপনারা ফুটবল ভালোবাসেন, আমরা বাংলার মানুষও ফুটবল ভালোবাসি। আপানারা মাছ পছন্দ করেন খুব, আর আমরা বাঙালিরাও মাছ পছন্দ করি। আপনাদের পছন্দ লোকসংগীত, আমাদেরও তাই। শুধু বাংলার সঙ্গে গোয়ার একটাই তফাৎ। এখানে বিজেপি মানুষের মনে বিষ ঢুকিয়ে দিচ্ছে। সেটাই গোয়ার মানুষকে রুখে দিতে হবে।”
মমতার সংযোজন, ‘বাংলা এখন অত্যন্ত শক্তিশালী একটি রাজ্য৷ আমরা চাই গোয়াও সেরকম শক্তিশালী হয়ে উঠুক, গোয়ায় নতুন ভোর আসুক৷’ বিজেপি-কে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘আমি গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হতে আসিনি৷ কিন্তু দিল্লির দাদাগিরি আর চলবে না গোয়ায়৷”
তিনদিনের গোয়া সফর শেষে আজই রাজ্যে ফিরছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন আঞ্চলিক দল গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির সভাপতি বিজয় সারদেশাই।
সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ওল্ড গোয়ার বম জেসাস চার্চে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে যান মাপুসায়। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূলনেত্রী। এরপর তাঁর কলকাতায় ফেরার পালা।