ট্রাইয়ের পরীক্ষায় পাশ, গ্রাহকদের হয়রানি বহাল! প্রশ্নের মুখে মোবাইল সংস্থাগুলি
গ্রাহকরাই বলছেন, মোবাইলে কথা বলতে বলতে বারবার ফোন কেটে যাচ্ছে। ফের নতুন করে ফোন করতে হচ্ছে। আবার কাউকে ফোন করলে সহজে সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়িতেই হোক, বা বাড়ির বাইরে— মোবাইলে কথা বলাই এখন সমস্যার। মোবাইল সংস্থাগুলির পরিষেবায় এখন তিতিবিরক্ত অনেকেই। মানুষের অভিজ্ঞতা একরকম হলেও টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থার দাবি, মোটের উপর সব কিছুই ঠিকঠাক চলছে। তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, কলকাতা হোক বা জেলা, বেশিরভাগ মোবাইল সংস্থার পরিষেবায় তেমন কোনও ত্রুটি নেই।
এরাজ্যে টেলিকমের দু’টি সার্কেল রয়েছে। কলকাতা ও শহরতলির জন্য কলকাতা সার্কেল এবং রাজ্যের বাদবাকি অংশের জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেল। এই সার্কেল দু’টিতে টেলিকম সংস্থাগুলি কে কেমন পরিষেবা দিচ্ছে, সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করেই রিপোর্ট পেশ করেছে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা ট্রাই। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাস, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে তারা মোবাইল পরিষেবা সংক্রান্ত যে সমীক্ষা চালিয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষায় একমাত্র পিছিয়ে রয়েছে বিএসএনএলের ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেল। কতটা পিছিয়ে তারা?
কথা বলার সময় বারবার ফোন কেটে যাওয়াকে বলা হয় কল ড্রপ। কথা বলার ক্ষেত্রে সামান্য কল ড্রপ হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু তা মাত্রা ছাড়ালে, তাকে মোবাইল সংস্থার পরিষেবার গাফিলতি হিসেবে ধরা হয়। এক্ষেত্রে কোনও একটি নির্দিষ্ট জায়গায় যদি ১০০টি ফোন কলের মধ্যে দু’টি কল কথা বলতে বলতে কেটে যায়, তাহলে তা স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই ধরা হয়। অর্থাৎ স্বাভাবিক কল ড্রপের হার এক্ষেত্রে দুই শতাংশ। বিএসএনএল বেঙ্গল সার্কেলে সেই হার ছিল ৬.১২ শতাংশ। কোনও একটি নির্দিষ্ট সময়ে বা দিনে যদি কল ড্রপ হয়, সেক্ষেত্রে ৩ শতাংশ কল ড্রপকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়। এক্ষেত্রেও বিএসএনএল বেঙ্গল সার্কেলের হার ৮.৩৩ শতাংশ। ফোন কল ঢোকার ক্ষেত্রে সমস্যা হলে, ২ শতাংশ ক্ষেত্রে তা স্বাভাবিক হিসেবে মনে করা হয়। বিএসএনএলের বেঙ্গল সার্কেলে এই হার ২.০৩ শতাংশ। ট্রাইয়ের সমীক্ষা বলছে, এর বাইরে কোনও মোবাইল পরিষেবা সংস্থার কলকাতা বা ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেলে ফোন কল সংক্রান্ত কোনও সমস্যা নেই!
পরিষেবায় সন্তুষ্ট না হলে বা অন্য কোনও কারণে কাস্টমার কেয়ারে ফোন করেন গ্রাহকরা। সেক্ষেত্রেও কি ঠিকঠাক পরিষেবা পাওয়া যায়? বহু গ্রাহকের অভিজ্ঞতাই এক্ষেত্রে ভালো নয়। কিন্তু তা মানতে নারাজ ট্রাই। গ্রাহক ফোন করার পর, ৯০ সেকেন্ড বা তার কম সময়ে অপারেটরের তরফে ফোন ধরার বিষয়ে সমীক্ষা করেছে ট্রাই। তারা বলছে, ১০০টি কল এলে, তার মধ্যে যদি ৯৫টি বা তার বেশি ফোন ওই সময়ের মধ্যে অপারেটর ধরে, তাহলে তাকে স্বাভাবিক পরিষেবা হিসেবে ধরা হয়। এয়ারটেলের কলকাতা সার্কেলে সেই হার ৮৭ শতাংশ। বেঙ্গল সার্কেলে তা ৮৩ শতাংশ। বাদবাকি সব সংস্থার পরিষেবা এক্ষেত্রে স্বাভাবিক, এমনটাই দাবি করেছে ট্রাই।