আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই হবে ১১২ পুরভোট
কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার ভোট হবে ডিসেম্বরে। রাজ্যের আরও ১১২টি পুরসভায় নির্বাচন বকেয়া। কোভিড পরিস্থিতির জন্য সেগুলি অবশ্য চলতি বছরে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সরকারি সূত্রে খবর, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়াতেই হতে পারে ওই ১১২টি পুরসভার নির্বাচন। তবে একসঙ্গে নয়, সম্ভবত দু’-তিন দফায় ভোটগ্রহণ হবে। আগামী বছর ৫ জানুয়ারি নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশিত হওয়ার কথা। সেই তালিকাতেই এই ১১২টি পুরসভায় নির্বাচন হবে। তবে কলকাতা ও হাওড়ায় ভোট হবে পুরনো ভোটার তালিকা অনুযায়ী। আগামী ১৯ ডিসেম্বর এই দুই গুরুত্বপূর্ণ পুরসভার নির্বাচন চেয়ে বুধবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে চিঠি দিয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব খলিল আহমেদ। গণনা দিন ধার্য হতে পারে আগামী ২২ ডিসেম্বর। কালীপুজো ও ছট মিটলেই সেই ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে বলে কমিশন সূত্রে খবর।
নিয়ম অনুযায়ী, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অন্তত ২৫ দিন পরে ভোটগ্রহণ হয়। অর্থাৎ, কলকাতা ও হাওড়ায় পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য একমাসেরও বেশি সময় হাতে রয়েছে। নবান্ন থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলায় সেইমতো প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে বাকি ১১২টি পুরসভায় বকেয়া নির্বাচন নতুন বছরে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্বাচিত পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ভোট আয়োজন করা যায়নি। বাকি জায়গায় প্রশাসক বোর্ড বসানো হয়েছে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে। মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভাগুলির রয়েছে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও মুর্শিদাবাদে। সেই কারণে কয়েক দফায় ভোটগ্রহণের চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
২০১৮ সালের পানিহাটি, হাবড়া সহ ১৮টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়। রাজ্য সরকার বিচ্ছিন্নভাবে পুরভোট আয়োজন করতে চায়নি। তাই প্রথমে মহকুমাশাসককে প্রশাসক নিয়োগ করে পুরসভাগুলিকে সচল রাখা হয়। কিন্তু দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতি বিপজ্জনক আকার নেওয়া স্থগিত হয়ে যায় পুরভোট। সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিতে মেয়াদ শেষ হওয়া চেয়ারম্যান বা মেয়রের নেতৃত্বে বসানো হয় প্রশাসকমণ্ডলী। কয়েকটি ক্ষেত্রে অবশ্য চেয়ারম্যানকে বদল করে নবান্ন। চলতি বছর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ধরাশায়ী করে বিপুল জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস। সম্প্রতি পরপর দুটো উপ নির্বাচন পর্বেও সেই জয়ের ধারা অব্যাহত। তার রেশ ধরে বকেয়া পুরভোট সেরে ফেলতে চাইছে নবান্ন।
তবে নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। কিন্তু জানুয়ারি মাসে স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন, সাধারণতন্ত্র দিবসের ছুটি রয়েছে। ফলে ভোটের দিন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কারণ, মনোনয়ন প্রক্রিয়া এবং প্রচারের জন্য কমপক্ষে সাতদিন করে সময় হাতে রাখতে হবে। প্রশাসনিক মহলে দাবি, সেই কারণেই ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে ১১২টি পুরসভার নির্বাচনের দিন স্থির হতে চলেছে। সে কথা মাথায় রেখে মাধ্যমিক পরীক্ষা মার্চ মাসে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।