রাজ্যের জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র এবার অনলাইনে
জানুয়ারি থেকে রাজ্যের যে কোনও নতুন জন্ম ও মৃত্যুর সরকারি শংসাপত্র ডাউনলোড করে নিতে পারবেন সাধারণ মানুষ। সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল থেকে শংসাপত্র সংক্রান্ত আবেদন জমা পড়লে মোবাইলে এসএমএস মারফত সেকথা জানানো হবে (যে মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত থাকবে)। শংসাপত্র তৈরি হলেও জানানো হবে সেকথা। বলা হবে, এবার অনলাইনেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন আপনার সার্টিফিকেট। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে একাধিকবার ডাউনলোড করা যাবে শংসাপত্র। অর্থাৎ, হারিয়ে গেলে প্রতিলিপি পেতে আর পুরসভাগুলির দরজায় দরজায় কড়া নাড়তে হবে না। প্রতিলিপি পিছু ১০০ টাকা দেওয়ারও প্রয়োজন পড়বে না। এই সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের দায়িত্ব রাজ্য সরকার তুলে দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তরকে। চালু হয়েছে নয়া পোর্টাল ‘স্টেট রেজিস্ট্রি পোর্টাল ফর বার্থ অ্যান্ড ডেথ’।
ওয়াকিবহাল মহল সূত্রের খবর, দালালরাজ ভাঙা, মানুষের ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি এই একটি সিদ্ধান্ত নিয়েই সরকার ভবিষ্যতের অনেকগুলি লক্ষ্যপূরণ করতে চাইছে। এক, প্রকল্পে যুক্ত করে দেওয়া হবে খাদ্যসাথীকে। সরকারি তথ্যই বলছে, প্রায় ১৬ লক্ষ মৃত মানুষের রেশন কার্ড এখনও বাতিল হয়নি। কিন্তু এই পদ্ধতিতে নতুন জন্ম বা মৃত্যুর ক্ষেত্রে ব্যক্তির আধার কার্ড সংক্রান্ত তথ্য হাসপাতাল বা শ্মশানের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে জানানো মাত্র সেটি চলে যাবে রাজ্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প রূপায়ণে জড়িত বিভিন্ন দপ্তরে। ফলে প্রতিটি নতুন জন্মে স্বাভাবিক নিয়মেই সেই শিশু রাজ্যের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে যুক্ত হবে। একইভাবে মৃত্যু হলে, খাদ্যসাথী সহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বাদ চলে যাবে তাঁর নাম। ফলে সেই নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন আর্থিক ও অন্য সরকারি সুবিধা অন্যায়ভাবে ভোগ করার চক্রও ভাঙবে। এমনকী, নয়া কর্মসূচিতে নির্ধারিত সময়ে শংসাপত্র না পেলে সেই ব্যক্তি নিজেই অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। সরকারের শীর্ষ মহল সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী প্রকল্প রূপায়ণের কাজে বিশেষ নজর দিয়েছেন। খতিয়ে দেখছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম সহ স্বাস্থ্যভবনের পদস্থ আধিকারিকরাও। ‘দূরদর্শী’ প্রকল্পটির নামকরণ করার কথা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।ইতিমধ্যে মালদহ ও হাওড়ায় এর পাইলট প্রজেক্ট সম্পূর্ণ। স্বাস্থ্যদপ্তরের ওয়েবসাইট www.wbhealth.gov.in-এর বাঁদিকে নীচে গিয়ে ‘বার্থ অ্যান্ড ডেথ রেজিস্ট্রেশন’ অংশে গিয়ে ক্লিক করলে খুলে যাবে প্রকল্প সংক্রান্ত জরুরি খুঁটিনাটি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রকল্পটি নিয়ে গত তিন মাস ধরে দপ্তরের আধিকারিকরা পরিশ্রম করছেন।’ স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘সরকারের শীর্ষ মহল বিষয়টি দেখছে। আমরা রূপায়ণের চেষ্টা করছি মাত্র।’