SIR শুরুর আগে বিপুল সংখ্যক ভোটারের নাম বাতিল! BJP ও কমিশনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূলের

October 30, 2025 | 2 min read
Published by: Ritam

 

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি,১৪:১০: ২৬শের ভোটের আগে ফের ‘চক্রান্ত’-এর অভিযোগে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। SIR শুরুর আগে বিপুল সংখ্যক ভোটারের নাম বাতিল! কমিশনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূলের।

রাজ্যের শাসক দলের অভিযোগ, কোচবিহারের নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বুথ নম্বর ২ (কালজানি এইডেড প্রাথমিক বিদ্যালয়), যা বর্তমানে কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের খাপাইডাঙা গ্রামের বুথ নম্বর ৩০৩-এর অন্তর্ভুক্ত, সেই বুথে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ৭১৭জনের নাম ছিল। বর্তমানে অনলাইন ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে মাত্র ১৪০ জনের। এতজন তো একসঙ্গে মারা যেতে পারে না! এসআইআরের আগেই নাম কীভাবে উধাও হচ্ছে?

এছাড়াও,  মাথাভাঙা বিধানসভা কেন্দ্রের পাচাগড় গ্রামের বুথ নম্বর ১৬০ (মাথাভাঙ্গা কলেজ, রুম নম্বর-২) -এর ২০০২ সালের নির্বাচনী তালিকায় ৮৪৬ জন ভোটারের নাম ছিল। এখন ২/২৪৪ নম্বর বুথে ৪১৬ জনের নাম রয়েছে। ৪১৭ থেকে ৮৪১ পর্যন্ত নামগুলি তালিকা থেকে এক কথায় উধাও হয়ে গিয়েছে।

একইরকমভাবে, উত্তর ২৪ পরগনার আশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্রের হাবরা-২ ব্লকের গুমা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে, ২০০২ সালের বুথ নম্বর ১৫৯-এর ভোটার তালিকার কোনও ভোটারের নামই নেই। পাশাপাশি বুথ নম্বর ৬১-এর ভোটার তালিকায় ২০০২ সালে ৩৪৩ থেকে ৪১৪ নম্বর পর্যন্ত নামগুলিও নেই। আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরির ভোটার তালিকা থেকে বুথ লেভেল অফিসারের (বিএলও) বাবা, মা এবং ভাইয়ের নামও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের মুখপাত্র তথা অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, “এই ঘটনার অবিলম্বে তদন্ত দরকার।” কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তৃণমূলের প্রশ্ন, “২০০২ এর ভোটার লিস্ট যেটা অনলাইনে আপলোড করা হয়েছে তার সাথে হার্ড কপির সাথে বিস্তর ফারাক। বিপুল সংখ্যক মানুষের নাম নেই। কোথায় গেলেন তাঁরা। SIR এর আগে কী ভাবে নাম উড়ে যাচ্ছে।”

তৃণমূলের অভিযোগ, এই ঘটনা “বিরাট কেলেঙ্কারি, চুপিচুপি কারচুপি। বিজেপি নেতারা আগে থেকে বলছেন এতো জন লোক নাম বাদ যাবে। যা পরিকল্পিত চক্রান্ত।” তৃণমূলের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করে জানানো হয়েছে,  উত্তর ২৪ পরগনার অশোক নগর বিধানসভা এলাকায় গুমা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে, হাবড়া-২ ব্লক এখানে ১৫৯ নম্বর বুথে কোনও ভোটারই নেই দেখাচ্ছে কমিশনের ওয়েবসাইট, অথচ ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে সেখানে প্রায় ৯০০ ভোটারের নাম ছিল। একইভাবে কোচবিহারে কোনও বুথে ৪০০,  কোনও বুথ থেকে ৯০০ নাম বাদ দিয়েছে। ভাবুন, কোন পর্যায়ে জালিয়াতি করেছে এরা! তাদের নাম ২০০২ ভোটার লিস্ট থেকে উড়িয়ে দিয়েছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল বাবুর আহ্বান, “একজন বৈধ ভোটারের নামও বাদ দিতে দেব না। ইতিমধ্যেই কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। প্রতিটি বুথে, প্রতিটি বাড়িতে নজর রাখুন- পুরনো লিস্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্লক ধরে ধরে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে।”

বৈঠকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন,  “ভোটার তালিকায় যেভাবে কারচুপি হচ্ছে তাতে বিজেপির মধ্যেও ঝামেলা শুরু হয়েছে বলে খবর। কারণ, এসব করতে গিয়ে কিছু নিজেদের লোকের নামও বাদ দিয়ে ফেলেছে ওরা। আর এখন ফেঁসে গিয়ে বলছে, কমিশনের ওয়েবসাইট নাকি ক্র্যাশ করেছে। আমরা পুরো ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “মতুয়া শ্রেণীকে বিভ্রান্ত করছে কমিশন। তিন জন MLA ইতিমধ্যেই Whatsapp গ্রুপ ছেড়েছে‌। SIR আতঙ্কে ইলামবাজারে আরেকটি লোক মারা গিয়েছে। এর দায় কে নেবে বিজেপি নাকি কমিশন?”

অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে তৃণমূলের বক্তব্য, ” মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বলছেন অমিত শাহ। তার লাগোয়া রাজ্যগুলোতে SIR হচ্ছে না। বাংলার সাথে মায়ানমারের কোনও বর্ডার নেই। তাহলে বাংলায় SIR হচ্ছে কেন?”

 

 

 

 

 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen