উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে লড়তে এলে ১০-০ গোলে হারাব: অভিষেক
মোদি কী উন্নয়ন করেছেন? সেই সময় এক যুবক বলে ওঠেন, মোদি নিজের নামে স্টেডিয়াম করেছেন। ওই কথার রেশ টেনেই অভিষেক বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে ঠাকুরনগরের নামও মোদিনগর করে দেবে।

শুক্রবার বাগদা ও বারাকপুরে নির্বাচনী প্রচারে এসে ঝড় তুললেন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। দু’জায়গা থেকেই বিজেপিকে কড়া আক্রমণ করেছেন। বাগদার সভায় বলেন, উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে কেউ লড়তে আসুক। ওদের ১০-০ গোলে হারাব। মোদি কী উন্নয়ন করেছেন? সেই সময় এক যুবক বলে ওঠেন, মোদি নিজের নামে স্টেডিয়াম করেছেন। ওই কথার রেশ টেনেই অভিষেক বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে ঠাকুরনগরের নামও মোদিনগর করে দেবে।
এদিন বাগদার তৃণমূল (Trinamool) প্রার্থী পরিতোষ সাহার সমর্থনে বাগদার হেলেঞ্চা হাইস্কুল মাঠে তাঁর জনসভা ছিল। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের প্রার্থী শ্যামল রায়ও উপস্থিত ছিলেন। দুপুর ২ টোয় সভা হলেও দাবদাহ উপেক্ষা করে ভিড় উপচে পড়ে। সভাস্থলের পাশেই হরিচাঁদ মন্দিরে পুজো দিয়ে মঞ্চে আসেন তিনি। বাগদা-হেলেঞ্চা সড়কের সংস্কার, হরিচাঁদ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনস্টিটিউটের সংস্কার এবং হেলেঞ্চা ক্রসিং-এ হরিচাঁদ ঠাকুরের মূর্তি স্থাপনেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নাম না করে তিনি বলেন, লোকসভায় আপনারা বিজেপিকে জেতালেন। অথচ, সংসদে গিয়ে একবারের জন্যও বাগদার নাম করেননি।
নাগরিকত্ব নিয়ে বলেন, যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন, আপনারা আজীবন নাগরিক। নাগরিকত্ব নিয়ে ঠাকুরনগরে অমিত শাহ ভাঁওতা দিয়েছেন। ওরা আপনাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আপনারাও ওদের সাথে প্রতারণা করুন। শীতলকুচির ঘটনা প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, বাঙালির রক্তের বিনিময়ে বাংলা দখল করতে চাইছে ওরা। রোজ বাঙালি খুন করবে আর বলবে সোনার বাংলা গড়ব। বিজেপিকে ভোট দেওয়া আর খাল কেটে কুমির আনা, একই ব্যাপার। ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে মানুষের জীবনের কোন দাম নেই।
এদিন বিকেলে বারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী রাজ চক্রবর্তীর সমর্থনে চিড়িয়ামোড় থেকে ঘুষিপাড়া পর্যন্ত রোড শো করেন তিনি। জনপ্লাবনে পরিণত হয় তা। রোড শো শেষে বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, এটা রোড শো নাকি জয়ের শোভাযাত্রা, বোঝা মুশকিল। তিনি বলেন, বিজেপি বলছে, সোনার বাংলা গড়বে। রোজ পাঁচটা করে খুন করবে, আর সোনার বাংলা গড়বে? প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ সালে সভা করতে এসেছিলেন। দু’বছর বাদে আবার ২০২১ সালে এসেছেন। ৩০ মিনিট ভাষণ দিলে তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ২৯ মিনিট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাপ-বাপান্তর করছেন। আবার ২০২৪ সালে আসবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সারাবছর আপনাদের পাশে থাকেন। দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শীতুলকুচির প্রসঙ্গে টেনে বলেন, যাঁরা গুলিতে খুন হলেন তাঁদের দোষ কী? তাঁরা বাংলা মায়ের সন্তান। তাঁরা দিল্লির কাছে, কাছে মাথা নত করেননি! এটাই অপরাধ!
অভিষেক বলেন, দিলীপ ঘোষ দিল্লির চাটুকারিতা করে বলছে, মা দুর্গার চোদ্দপুরুষকে কেউ চেনে না। বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে যাঁরা মা দুর্গাকে অপমান করেন, তাদের ক্ষমা করবেন? ষষ্ঠ দফায় ছয় মারতে হবে। এদিন বক্তব্য রাখার সময় একটি অ্যাম্বুলেন্স ভিড়ের মধ্যে পার হচ্ছিল। বক্তব্য থামিয়ে তিনি কর্মীদের বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটা নির্বিঘ্নে বের করার ব্যবস্থা করে দিন। কর্মীদের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সটি বের হয়ে যাওয়ার পরে তিনি আবার বক্তব্য রাখেন। বলেন, এটাই তৃণমূল। এখানেই আমাদের সঙ্গে বিজেপির ফারাক। পূর্ব ঘোষিত হিসেবে এদিন সন্ধ্যায় ভবানীপুরে দলীয় প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধযায়ের সমর্থনে জনসভা করার কথা ছিল যুব তৃণমূল সভাপতির। নির্বাচন কমিশনের আরোপিত বিধিনিষেধের কারণে সেই সভা বাতিল করা হয়েছে।