কুম্ভে মৃত্যুর দায় কার ছিল? যুবভারতীতে মেসি-বিতর্কে বিজেপিকে পাল্টা তোপ অভিষেকের

December 17, 2025 | 2 min read
Published by: Manas Modak

 

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২৩:৫৪:  যুবভারতী কান্ডে বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর), সিএএ ও এনআরসির প্রসঙ্গ‌ও। সল্টলেক স্টেডিয়ামের ঘটনায় জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্রুত ক্ষমা প্রার্থনা এবং প্রশাসনিক পদক্ষেপের পরেও লাগাতার প্রশ্ন ওঠায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।

যুবভারতী কান্ডের প্রসঙ্গ

সল্টলেক স্টেডিয়ামের ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার কড়া জবাব দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, “বিজেপি শাসিত রাজ্যে কুম্ভমেলায় বা নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয় তখন তো কেউ প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায় না কোন‌ও বিজেপি নেতাকে, প্রধানমন্ত্রীকে বা যোগী আদিত্যনাথকে? তদন্ত তো দূরের কথা। ন্যূনতম ক্ষমা পর্যন্ত কেউ চায় না। তখন তো যোগী আদিত্যনাথ বা সুকান্ত মজুমদারদের প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানো হয় না।” তিনি পাল্টা দাবি করেন, বাংলায় ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। পুলিশ কর্তা, স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ এমনকি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

অভিষেকের আর‌ও বলেন, “যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যা হয়েছে তার এক ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পুলিশকর্তা থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে। তারপরেও আমাদের কেন বারবার প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হচ্ছে? খোদ মুখ্যমন্ত্রী মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এটাই তাঁর দায়বদ্ধতা এবং সামর্থ্যের প্রতীক। তিনি ঝুঁকতেও জানেন। একটা ঘটনা ঘটেছে, তারপর রাজ্যের তরফে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিজেপি কখনও ভুল স্বীকার করে না। ওদের এই ঔদ্ধত্যের কারণেই বাংলায় ওরা বারবার পরাজিত হয়।”

বিজেপিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ

এদিন বিজেপিকে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, “তৃণমূলের ভোট শতাংশ ও আসন সংখ্যা বাড়বে। আমার চ্যালেঞ্জ, যদি আমাদের ভোট বাড়ে, তবে বিজেপিকে আটকে রাখা ২ লক্ষ কোটি টাকা মিটিয়ে দিতে হবে এবং বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর যদি তা না হয়, ওরা যা বলবে আমি তাই করতে রাজি।” তাঁর দাবি, সিবিআই-ইডি লাগিয়েও তৃণমূলকে দমানো যাবে না, আর এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে বিজেপি ভয় পাচ্ছে।

১০০ দিনের কাজ ও আইনি জয়

মনরেগা (MGNREGA) ইস্যুতে অভিষেক জানান, বিষয়টি নিয়ে সংসদে জোরদার সওয়াল করা হবে। তিনি বলেন, “সকলেই জানেন আমরা কী লড়াই লড়েছি। হাইকোর্টের নির্দেশের পর কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি (SLP) দাখিল করেছিল, যা খারিজ হয়ে গেছে। মানুষের স্বার্থে আমরা সংসদে আওয়াজ তুলবই।”

সিএএ (CAA) ও এনআরসি (NRC) প্রসঙ্গ

সিএএ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, “বিজেপি সমাজে বিভাজন চায়। নিয়ম তৈরি করতে ওদের ৫ বছর সময় লাগল। আমি জানতে চাই, ২০১৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত কতজনকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে? তার তালিকা প্রকাশ করুক বিজেপি।” তিনি আসামের এনআরসি এবং ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা করেন।

ভোটার তালিকা ও ‘মৃত’ কাউন্সিলর

ভোটার তালিকার খসড়া বা ‘এসআইআর’ (SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিষেক। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “ডানকুনি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এক জীবিত কাউন্সিলরকে নির্বাচন কমিশনের খসড়া তালিকায় ‘মৃত’ দেখানো হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, এই ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত অপরিকল্পিত। এর জেরে অনেক বিএলও (BLO) প্রবল মানসিক চাপে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন, যার দায় নির্বাচন কমিশনের।

রাজ্যপালের মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে অভিষেক তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “রাজ্যপাল একটি মনোনীত পদ, আর আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। ওঁর কথার উত্তর দিতে আমি সংসদে আসিনি।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen