‘অবৈধ ভোটার লিস্ট মানে সরকারও বৈধ নয়’, বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মোদী সরকারকে নিশানা অভিষেকের
অভিষেক বলেন, রবিবার বিরোধী দলের তরফে কমিশনের কাছে যে প্রশ্নগুলো রাখা হয়েছিল, ২৪ ঘণ্টা পরেও ওরা সদুত্তর দিতে পারেনি।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৪৬: কলকাতায় ফিরেই বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে ফের SIR নিয়ে সরব তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। একসঙ্গে মোদী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূলের সেনাপতি। নির্বাচন কমিশনের রবিবারের সাংবাদিক বৈঠক নিয়েও আক্রমণ শানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, “লক্ষ লক্ষ মৃত ভোটারের নাম রয়েছে ভোটার তালিকায়। ওই তালিকার ভিত্তিতেই নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাহলে যদি সত্যিই এসআইআর করতে হয়, আগে লোকসভা ভাঙো। আমরা তো মানুষকে ফেস করতে ভয় পাচ্ছি না, ভয় পাচ্ছে বিজেপি। তাই কমিশনকে দিয়ে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চাইছে।”
আরও বলেন, “মৃতদের নাম কেন তালিকায়? উত্তর মেলেনি। সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশন একটা উত্তরও ঠিকমতন দেয়নি। পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেছে। যে কথা নির্বাচন কমিশন বলছে, তর্কের খাতিরে যদি ওদের যুক্তিকে সত্যি ভেবে নিই, তাহলে একবছর আগে এই লিস্টের ভিত্তিতে যে নির্বাচন হয়েছে সেই সব সরকার ভেঙে দিয়ে SIR করে আবার নির্বাচন করুক। ভারতের মানুষের ভোট দেওয়ার মৌলিক অধিকার বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে কেড়ে নিতে চাইছে, এটা স্পষ্ট।”
অভিষেক বলেন, রবিবার বিরোধী দলের তরফে কমিশনের কাছে যে প্রশ্নগুলো রাখা হয়েছিল, ২৪ ঘণ্টা পরেও ওরা সদুত্তর দিতে পারেনি। এর থেকেই স্পষ্ট, কমিশন মুখে যা বলছে আর যা কাজ করছে, তা এক নয়। কমিশনের দেওয়া নোটিশ নিয়ে কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “কমিশন বলছে সাত দিনের মধ্যে হলফনামা না দিলে কোনও দাবির গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। আমি পাল্টা বলি, বিহারে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, কমিশন হলফনামা দিয়ে বলুক; একটা নাম ভুল থাকলে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ইস্তফা দেবেন কি?”
এরপরই তিনি হুঁশিয়ারি সুরে বলেন, “জোর করে যদি একজনের নামও বাদ যায় এক লক্ষ মানুষ নিয়ে আমরা দিল্লি যাব, দেখিয়ে দেব বাংলার ক্ষমতা। আন্দোলনের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেব বাংলা কী করতে পারে। বিজেপি একনায়কতন্ত্রের সরকার চালাচ্ছে। ওরা ভয় ভীতির পরিবেশ তৈরি করে রাজ্যকে রসাতলে পাঠাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন বিজেপির প্রতিনিধি, বিজেপির ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করছে।” বিজেপি নিশানা করে অভিষেক বলেন, “অনুরাগ ঠাকুর যা অভিযোগ করেছেন তার উত্তর আমরা দিয়েছি। আমাদের অভিযোগের উত্তর নির্বাচন কমিশন কেন দিচ্ছে না?” উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, “ইন্ডিয়া শিবিরের আজ বৈঠক আছে। আজ, কালের মধ্যে নাম ঠিক হলে জানানো হবে।”
বাংলায় একশো দিনের কাজ চালু নিয়ে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে কেন্দ্র সরকার। অভিষেক বলেন, “সরকার হাইকোর্টের নির্দেশ মানছে না, কারণ তারা চায় না বাংলার গরিব মানুষরা টাকা পাক। এই জন্যই আমরা বলি, এরা জনবিরোধী, বাংলা-বিরোধী সরকার। বিজেপি যেভাবে দেশ চালাচ্ছে তা মানুষ দেখে ফেলেছে। বাংলায় হেরে কেন্দ্র আবাস, রাস্তা-সহ একাধিক প্রকল্পে রাজ্যের ১ লক্ষ ৯৪ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। মোদীকে বলুন আগে সেই টাকা মেটাতে, তারপরে বাংলা নিয়ে কথা বলতে। এরা আগাগোড়াই জনবিরোধী।”