নারদ মামলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং

এই চিঠির প্রেক্ষিতে অন্য আদালতের জামিনের নির্দেশ কীভাবে নাকচ হতে পারে?

May 19, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

আবেদন নয়। এফিডেভিট নয়। শুধুমাত্র একটি ইমেলের ভিত্তিতে কীভাবে নিম্ন আদালতের জামিনের আদেশ নাকচ হয়ে গেল কলকাতা হাইকোর্টে? নিম্ন আদালতে পাওয়া জামিনের পর ঠিক কখন ওই চিঠি লেখা হল? প্রক্রিয়াগত আইনকে এভাবে উপেক্ষা করা হলে তাকে কী বলা হয়? আইনের শাসনের মৃত্যু?

রাজ্যের চার নেতা-মন্ত্রীর জামিন হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেই জামিনকে স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ইন্দিরা জয়সিং। ‘দ্য লিফলেট’ পত্রিকায় একটি দীর্ঘ নিবন্ধে সোমবার দিনভর হওয়া সিবিআই এবং আদালত কাণ্ড নিয়ে একঝাঁক প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘আমি অত্যন্ত বিস্মিত… সিবিআই ইমেলে হাইকোর্টে একটি চিঠি পাঠিয়েছে এবং সেখানে বলা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী নাকি ২ থেকে ৩ হাজার সমর্থক নিয়ে সিবিআই দপ্তরের প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে সিবিআইয়ের কাজে বাধা দিয়েছে! এই চিঠির প্রেক্ষিতে অন্য আদালতের জামিনের নির্দেশ কীভাবে নাকচ হতে পারে? ওই চিঠির সঙ্গে হলফনামা দেওয়াই আইনগত পদ্ধতি।’ পাশাপাশি ইন্দিরা জয়সিংয়ের বক্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রী নিজাম প্যালেসে গিয়েছেন, ডিআইজির সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন। সিবিআই দপ্তরের মধ্যে তাঁর সঙ্গে ২ হাজার ৩ হাজার সমর্থক ছিল না। আর তারপর তিনি বেরিয়েও গিয়েছেন।’ ইন্দিরার প্রশ্ন, ‘সিবিআই জামিন সংক্রান্ত নির্দেশের বিরোধিতার কারণ হিসেবে বলেছেন, এই চারজন নাকি তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। নথিপত্রকে উধাও করে দিতে পারেন? কারণ তাঁরা প্রভাবশালী! আশ্চর্যের বিষয় হল, তাঁরা ২০১৭ সালেও প্রভাবশালী ছিলেন। এতদিন ধরে তাঁরা কোনও নথিপত্র উধাও করলেন না। এতদিন তাঁরা প্রভাব খাটিয়ে তদন্তে বাধা দিলেন না। আর এঁরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদ। তাঁরা অবশ্যই বিচারব্যবস্থা থেকে পালাতেন না? সবথেকে বড় প্রশ্ন, সিবিআই কোর্ট এবং হাইকোর্টে শুনানি একইসঙ্গে চলছিল।

তদন্ত সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে। তাই সিবিআই এই চারজনের হেফাজত পর্যন্ত চায়নি। তারা চেয়েছে জেল হেফাজত। কেন? সুপ্রিম কোর্ট যেখানে বলেছে, কোভিড-কালে জেলবন্দির সংখ্যা যথাসম্ভব কমাতে, সেখানে এই মামলায় তাঁদের জেলে আটকে রাখার এত তৎপরতা কেন?’ ইন্দিরা লিখেছেন, ‘সংবিধানের ২১ নং ধারা অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠিত আইন ছাড়া আর কোনওভাবেই ব্যক্তির জীবন ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা যায় না। কলকাতা হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠিত আইনের প্রক্রিয়া নয়। সিবিআই সম্ভবত ভুলে গিয়েছে যে, ১৯৯৬ সালের বিনীত নারায়ণ বনাম কেন্দ্রীয় সরকারের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সেই বিখ্যাত রায়, কেউ যতই উচ্চস্থানে আরোহন করুক না কেন, আইন থাকবে তার থেকেও উঁচুতে।’ 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen