বৈধ নথি থাকতেও সীমান্তে হেনস্থার শিকার বহরমপুরের আফরিনা! বাতিল বাংলাদেশ যাত্রা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:৩১: বাংলায় ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন ( SIR- Special Intensive Revision)) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই আবহে বহরমপুরের (Berhampore) গোরাবাজারের বাসিন্দা আফরিনা হাসনাত (Afrina Hasnat) নামে এক তরুণী অভিযোগ করেছেন, বৈধ পাসপোর্ট ও পর্যটক ভিসা থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বাংলাদেশে যেতে দেওয়া হয়নি।
আফরিনা গত ২৯ অক্টোবর ঢাকায় (Dhaka) আত্মীয়দের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে কলকাতা (Kolkata) থেকে বাসে রওনা দেন। তাঁর দাবি, পেট্রাপোল সীমান্তে চেকিংয়ের সময় পাসপোর্ট ও ভিসা দেখানোর পরও ইমিগ্রেশন আধিকারিকরা তাঁর কাছে ২০০২ সালের আগে ভোটার তালিকায় নাম থাকা নথি, জমি বা বাড়ির দলিল এবং মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড দেখতে চান।
তাঁর কাছে ওই মুহূর্তে এসব নথি না থাকায়, পাসপোর্ট ও ভিসা দেখিয়েও তিনি সীমান্ত পার হতে পারেননি। বাধ্য হয়ে তাঁকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং বাংলাদেশ যাত্রা বাতিল করতে হয়।
আফরিনা আরও বলেন, “আমি আধার কার্ড, প্যান কার্ডের ছবি দেখাই। কিন্তু কোনওটাই গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমি বলি, পাসপোর্ট তো নাগরিকত্বের প্রমাণ- তা হলে এর কোনও মূল্য নেই?”। আফরিনা জানান, ইমিগ্রেশন অফিসার প্রথমেই জানতে চান, তিনি প্রথমবার বিদেশে যাচ্ছেন কি না। ‘হ্যাঁ’ বলার পরই শুরু হয় অতিরিক্ত নথির দাবি।
আফরিনা জানান, বাংলাদেশ (Bangladesh) সফরের জন্য বাসভাড়া, ভিসা, কলকাতায় হোটেল খরচ মিলিয়ে ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে। “সব প্রস্তুতি নিয়েও শেষমেশ যেতে পারলাম না। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি,” বলেন তিনি।
সীমান্তে তাঁকে আটকে দেওয়ার ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন তাঁর বাবা, প্রবীণ হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসক মীর হাসনত। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে ফোন করে সব জানায়। আমি ওই আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। পাসপোর্ট যাচাইয়ের জন্য পোর্টাল ব্যবহার না করে কেন এমন আচরণ?”
ক্ষোভ প্রকাশ করে আফরিনার বাবা বলেন, ‘যাঁরা বেআইনি ভাবে যাতায়াত করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। পরিবর্তে সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, “আমার বয়স ৭৩। জন্ম থেকে ভারতে আছি। ৫০ বছর ধরে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছি। কোনও দিন কেউ আমার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। আজ মেয়েকে নিয়ে এমন প্রশ্ন উঠছে!” এই বিষয়ে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তর ও মুর্শিদাবাদ জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন।