চার বছর পর এ বার ফের পৌষমেলা পূর্বপল্লির মাঠে, হোটেল-ট্রেনের টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে

চলতি বছরে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের উদ্যোগে পূর্বপল্লিতেই আয়োজিত হবে ওই মেলা। সহযোগিতায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

December 19, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
পূর্বপল্লিতে পৌষমেলা। —ফাইল চিত্র।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: চার বছর পর এ বার ফের পৌষমেলা পূর্বপল্লির মাঠে হবে। ২০১৯ সালে শেষ বারের মতো পূর্বপল্লিতে এই মেলা হয়। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী এই মেলা তার পর থেকেই বন্ধই ছিল। চলতি বছরে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের উদ্যোগে পূর্বপল্লিতেই আয়োজিত হবে ওই মেলা। সহযোগিতায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ইতিমধ্যেই সেজে উঠছে পূর্বপল্লির মাঠে। যেহেতু চার বছরের বিরতির পর মেলা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, আর এই কারণে প্রত্যাশিত দর্শকের সংখ্যা আগের যে কোন বছরের তুলনায় অনেক বেশি। বিভিন্ন মহল থেকে জানা যাচ্ছে যে, এবারের মেলাতে রেকর্ড পরিমাণ ভিড় হতে পারে। তবে, সেসব প্রস্তুতিও একেবারে ভিন্ন। হোটেল, গেস্ট হাউস এবং ট্রেনের টিকিট নিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন।

শান্তিনিকেতনের হোটেলগুলিতে বুকিংয়ের চাপ তীব্র হয়ে উঠেছে, এমনকি বেশ কিছু হোটেলের ভাড়া দুই থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বেসরকারি হোটেলগুলোতেও শুরু হয়েছে ‘প্যাকেজ যুদ্ধ’। পর্যটকরা জানাচ্ছেন, শীতকালীন এই মেলায় আসতে এখন হোটেল প্যাকেজ ছাড়া বিকল্প কিছুই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউসগুলিও এবার প্যাকেজ সিস্টেমে বুকিং নিচ্ছে, এবং এর ভাড়াও অনেক বেড়ে গেছে। ২২ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্যাকেজের ভাড়া দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেড়েছে। এর সাথে যোগ হয়েছে অতিরিক্ত জিএসটি এবং খাবারের খরচ। এর ফলে, সাধারণ পর্যটকদের কাছে শান্তিনিকেতনে থাকার খরচ অনেক বেশি হয়ে গেছে। এমনকি, টোটো ভাড়াও তিনগুণ বেড়ে গেছে। বোলপুর স্টেশন থেকে শান্তিনিকেতন যাওয়ার জন্য টোটো ভাড়া এখন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পৌঁছেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এবং হস্তশিল্পীরা খুশি, কারণ ২০১৯ সালের পর পূর্বপল্লির মাঠে পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় তাদের ব্যবসা আবার চলতে শুরু করবে। তবে, মেলার মাঠের আশপাশের হোটেলগুলিতে প্রায় সব কক্ষই বুক হয়ে গেছে। শান্তিনিকেতন, সোনাঝুড়ি, শ্যামবাটি, প্রান্তিক এলাকায় হোটেল বুকিং প্রায় শেষ। অনলাইনে বুকিংও বন্ধ হয়ে গেছে। পূর্বপল্লির মেলার মাঠ থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো হোটেলেই ঘর খালি পাওয়া যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, ট্রেনের টিকিটের পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। হাওড়া থেকে বোলপুর কিংবা শান্তিনিকেতন যাওয়ার ট্রেনের টিকিট পাওয়াও এক বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস, বিশ্বভারতী এক্সপ্রেস, তারা মা এক্সপ্রেস, ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসসহ প্রায় সব ট্রেনের ওয়েটিং লিস্ট দীর্ঘ। মেলা উপলক্ষে অধিক সংখ্যক যাত্রী আসবে বলে পূর্ব রেলওয়ে এখনও কোনো বিশেষ উদ্যোগ নেয়নি, যার ফলে ট্রেনের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব গেস্ট হাউসগুলিতেও এই তিন দিনের প্যাকেজ চালু করা হয়েছে। এই গেস্ট হাউসগুলির ভাড়াও দ্বিগুণ বেড়েছে। তবে, শান্তিনিকেতনে আসা পর্যটকদের জন্য এক সুখবর হলো, রবীন্দ্র ঐতিহ্য ও ভাবনা অনুসরণ করে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে জেলা প্রশাসন এই বছর পৌষমেলার আয়োজন করছে পূর্বপল্লির মাঠেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen