আমেরিকার পর এবার মেক্সিকোর চোখরাঙানি! ৫০% শুল্কের হুমকিতে পাল্টা হুঁশিয়ারি ভারতের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৪৮: আমেরিকার নবনির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) প্রশাসনের দেখানো পথেই হাঁটল প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকো (Mexico)। ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চড়া শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেক্সিকো সরকার (Government of Mexico)। তবে এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে চুপ করে বসে নেই ভারতও। নয়াদিল্লির তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আলোচনার টেবিলে জট না কাটলে ভারতও উপযুক্ত পাল্টা পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে।
সম্প্রতি মেক্সিকোর সেনেট একটি নতুন শুল্ক নীতিতে সম্মতি দিয়েছে। এই নীতি অনুযায়ী, যে সমস্ত দেশের সঙ্গে মেক্সিকোর ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ (Free Trade Agreement) নেই, সেই সব দেশের পণ্যে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপানো হবে। ভারতের পাশাপাশি এই তালিকায় রয়েছে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলিও।
সূত্রের খবর, এই বিলটি মেক্সিকোর পার্লামেন্টে পেশ হওয়ার পর থেকেই ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রক মেক্সিকোর অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছিল। ভারতকে যাতে এই চড়া শুল্ক নীতির আওতার বাইরে রাখা হয়, সেই অনুরোধও করা হয়েছিল নয়াদিল্লির তরফে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) নিয়ম মেনে উভয় দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে-এমন একটি সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করেছিল ভারত। কিন্তু মেক্সিকো সরকার সেই অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, “মেক্সিকোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে ভারত গুরুত্ব দেয়, কিন্তু সরকার ভারতীয় রপ্তানিকারকদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে বদ্ধপরিকর। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হলে ভারতও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।” জানা গিয়েছে, পূর্ব-আলোচনা ছাড়াই মেক্সিকো একতরফাভাবে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নয়াদিল্লি বেশ অসন্তুষ্ট।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারত ও মেক্সিকোর মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক যথেষ্ট গভীর। ভারত মূলত গাড়ির যন্ত্রাংশ, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, জৈব রাসায়নিক, ওষুধ, পোশাক এবং প্লাস্টিক পণ্য মেক্সিকোতে রপ্তানি করে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারত মেক্সিকোতে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করেছে। বিপরীতে, মেক্সিকো থেকে ভারতে আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মেক্সিকোর এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বড় ধাক্কা খেতে পারেন। তবে ভারত সরকার যে পাল্টা শুল্ক চাপানোর বা অন্য কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে, তা মেক্সিকোকে আলোচনার টেবিলে নমনীয় করে কি না, সেটাই এখন দেখার।