বিহারের পরে এবার টার্গেট বাংলা, ছাব্বিশে ১৬০-র বেশি আসন জিততে কী কৌশল বিজেপির?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৩৭: বঙ্গে আগামী মার্চ-এপ্রিলেই হতে পারে ভোট। সদ্য বিহার জয়ের (Bihar Election) উল্লাস সবে থিতু হয়েছে। তার মধ্যেই গেরুয়া শিবিরের দৃষ্টি এখন বঙ্গে। দলীয় সূত্রের খবর, এবার বিজেপির (BJP) টার্গেট ১৬০-১৭০ আসন দখল। তবে লড়াইয়ে কৌশল বদলেছে। বিজেপির নিশানায় সরাসরি মমতা (Mamata Banerjee) নন, বরং তৃণমূলের (TMC) জনভিত্তি ও গ্রাউন্ড-লেভেল কর্মীরা।
বিজেপি (BJP) মনে করছে, তৃণমূলের গ্রামীণ কর্মীদের বড় অংশ নির্বিকার। তাঁদের অনেকেরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) প্রতি আনুগত্য নেই। তাই এই স্তর থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠকে টেনে নেওয়াই এ বার বিজেপির প্রধান লক্ষ্য। দলীয় এক নেতার ভাষায়, “বাংলায় পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি ছিল না। মমতার পরে অভিষেককে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা- এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র।”
গত নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) মতো কয়েক জন তৃণমূল নেতাকে দলে টেনে নিয়েছিল বিজেপি। তার পরিণামে নন্দীগ্রামে মমতাকে হারিয়ে ইতিহাস লেখেন শুভেন্দু। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন। বিজেপির স্পষ্ট অবস্থান- দলবদল নয়। কারণ, এতে ভোটশেয়ার খুব বাড়ে না বলে তাদের ধারণা। কর্মীভিত্তি দখল করাই বেশি সুফল দেবে।
বিহারে জাতপাতের সমীকরণ মিলিয়ে এনডিএ (NDA) মোট ২০০-রও বেশি আসনে জয় পায়। পর্যবেক্ষকদের মতে বাংলায় সেই ফর্মুলা চলবে না। এখানে জাতভিত্তিক ভোটের প্রবণতা কম। তাই বিজেপি লক্ষ্য রাখছে ধর্মীয় ও আঞ্চলিক মেরুকরণের সমীকরণে।
বাংলায় প্রায় ৩০% ভোটার মুসলিম। কিন্তু তাদের প্রভাবশালী আসন মাত্র ৩০-৪০টি। বিজেপির বিশ্লেষণ, “তৃণমূল মুসলিম ভোট পেলেও তা আসন-গণিতে খুব বড় প্রভাব ফেলে না।” অন্যদিকে, হিন্দু ভোট ভাগাভাগি হলে বিজেপির সুযোগ কম। তাই হিন্দু মেরুকরণ বাড়াতে বিজেপি তৎপর।
গত দুই লোকসভা ও বিধানসভা মিলে বাংলায় বিজেপি ১০০-র বেশি আসন পেয়েছে। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে তাদের সেরা ফল, ১৮টি আসন, ভোটশেয়ার ৪০.২৫%। ২০২১-এ বিধানসভায় পায় ৭৭টি আসন। ২০২৪-এ লোকসভায় কিছু ক্ষতি হলেও উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বহু এলাকায় তাদের জনভিত্তি বেড়েছে।
তৃণমূলের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ৪৮% ভোটশেয়ার। বিজেপির স্বীকারোক্তি, আরও ৬% ভোট না বাড়ালে লক্ষ্য ধরা অসম্ভব। এই অতিরিক্ত ভোট তুলতে হবে সুবিবেচিত প্রার্থী বাছাই, কর্মীভিত্তি দখল এবং শক্তিশালী বুথ সংগঠনের জোরে। এখানেই বিজেপির সাংগঠনিক দক্ষতার পরীক্ষা।