বাবার শেষকৃত্য সেরেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছালেন বীরভূমের ঘনশ্যাম ও জোনাকি

রবিবার রাতে বীরভূমের বোলপুরে গীতাঞ্জলির সামনে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর হন আহত শিবশঙ্কর কিস্কু।

March 8, 2022 | < 1 min read
Published by: Drishti Bhongi

পর দিন সকালে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা, মাধ্যমিক। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে লেগে ছিল ওরা। হঠাৎই দুঃসংবাদ এল রাতে। বাবা আর নেই। মারা গিয়েছেন। শুনে দুই ছেলেমেয়ের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল। তার পরেই ছুটোছুটি। হাসপাতাল। বাবার শেষকৃত্য সেরে সকালে সময় মতো পরীক্ষকেন্দ্রে হাজির তারা।

রবিবার রাতে বীরভূমের বোলপুরে গীতাঞ্জলির সামনে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর হন আহত শিবশঙ্কর কিস্কু। ঘটনার পর তাঁকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও শেষরক্ষা হয়নি। রাতেই মৃত্যু হয় আমোদপুরের বড়োডাঙা গ্রামের বাসিন্দা শিবশঙ্করের। বাড়িতে তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই মা-কে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে চলে আসে শিবশঙ্করের ছেলে ঘনশ্যাম ও মেয়ে জোনাকি। তার পর সেখান থেকেই বাবার অন্তিম যাত্রা।

এই ঘটনার পরেও সোমবার সকালে আমোদপুর জয়দুর্গা উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পৌঁছয় ঘনশ্যাম ও জোনাকি। দু’জনেই কেসাই পুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। জোনাকি বলছে, ‘‘পড়াশোনার পর রাতে শুয়েই পড়েছিলাম আমি আর মা। ওই সময়েই খবর এল, বাবা মারা গিয়েছে। ওই কথা শুনে কী করব বুঝতে পারছিলাম না। বাবা মারা গিয়েছে! আর এ দিকে মাধ্যমিকের টেনশন! মনে হচ্ছিল পরীক্ষাই হয়তো দেওয়া হবে না। পরে ভেবে দেখলাম, না, বাড়িতে বসে থাকলে হবে না। চলে এলাম আমি আর দাদা।’’

ঘনশ্যাম আর জোনাকির এই মনোবল দেখে আপ্লুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কেসাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রণবকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতেও যে ওরা পরীক্ষা দিতে এসেছে, সেটাই অনেক বড়ো বিষয়। আমরা চাই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা ওরা ভাল করে দিক। জীবনে অনেক উন্নতি করুক ওরা। আমরা সবাই ওদের সাহায্য করব।’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen