মালদহের পর এবার শিলিগুড়ি, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে হোটেল মালিকদের কঠোর সিদ্ধান্ত
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:০০: ওপার বাংলায় ক্রমাগত বাড়ছে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন। বাংলাদেশি নেতাদের (Bangladeshi leader) একাংশের ভারত বিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিল উত্তরবঙ্গ (North Bengal)। মালদহের পর এবার শিলিগুড়িতেও বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হোটেলের দরজা কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হলো। শিলিগুড়ি হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, পুরনো বা নতুন ভিসা-যাই থাকুক না কেন, বাংলাদেশিদের আর শিলিগুড়ির হোটেলে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না।
হাসিনা সরকারের (Hasina govt) পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ওপার বাংলায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা চরমে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ। হিন্দুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, লুটপাট এবং হিন্দু যুবকদের নৃশংসভাবে পুড়িয়ে মারার মতো ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা বিশ্ব। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশি নেতাদের একাংশের লাগাতার ভারত বিরোধী উস্কানিমূলক মন্তব্য। ভারতের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেনস নেক’ করিডর এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্য বা ‘সেভেন সিস্টার্স’-কে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার মতো মন্তব্য করা হচ্ছে। দিনের পর দিন পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। বাংলাদেশি নেতাদের ভারতের অখণ্ডতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ক্ষুব্ধ শিলিগুড়ির (Siliguri) ব্যবসায়ী মহল।
শিলিগুড়ি হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (Siliguri Hoteliers Welfare Association) তরফে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত কেবল আবেগের বশবর্তী হয়ে নয়, বরং জাতীয় স্বার্থ ও দেশের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হয়েছে। ভারতের দিকে চোখ রাঙানি এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রে হিন্দুদের ওপর বর্বরোচিত অত্যাচার কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেই তাঁরা বাংলাদেশিদের হোটেলে জায়গা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক চিকিৎসা, পর্যটন ও পড়াশোনার উদ্দেশ্যে শিলিগুড়ি করিডর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তাঁদের একটি বড় অংশ শিলিগুড়িকে ‘ট্রানজিট হাব’ হিসেবে ব্যবহার করেন। হোটেল মালিকদের এই সিদ্ধান্তের ফলে তাঁরা স্বভাবতই বড় সমস্যায় পড়বেন। কিন্তু সংগঠনের দাবি, দেশের সম্মান ও নিরাপত্তার প্রশ্নে তাঁরা আপস করতে নারাজ।
উল্লেখ্য, শিলিগুড়ির আগেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলা মালদহের হোটেল ব্যবসায়ীরা একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেখানেও ওপার বাংলায় সংখ্যালঘু হিন্দু নিধনের প্রতিবাদে শহরের সমস্ত হোটেল মালিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে বাংলাদেশিদের (Bangladeshi) ঘর ভাড়া না দেওয়ার ঘোষণা করেন। এবার উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান শহর শিলিগুড়িও সেই পথেই হাঁটল।