দলবদলুদের হাতে আলিপুরদুয়ারের রথের দায়িত্ব, আদি বিজেপিতে ক্ষোভ
বিজেপির আসন্ন রথযাত্রা নিয়ে জেলায় কোনওরকম উন্মাদনাই নেই।

আলিপুরদুয়ারে(Alipurduar) বিজেপির রথযাত্রার(BJP Rath Jatra) দিন ধার্য করা হয়েছে ১৪ এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি। রথ যাওয়ার রুটম্যাপ ঠিক করে তার ছাড়পত্রের জন্য আবেদন ইতিমধ্যেই বিজেপির(BJP) পক্ষ থেকে পুলিসের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুয়ারে সরকার কর্মসূচি ও সদ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) জেলা সফরের জেরে বিজেপির রথের চাকা আগেই মাটিতে বসে গিয়েছে। এমনটাই দাবি ঘাসফুল শিবিরের।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সেই জন্যই দলের পক্ষে জেলায় হাওয়া তুলতে বিজেপি এখানে দু’দিন ধরে রথযাত্রার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বিজেপির আসন্ন রথযাত্রা নিয়ে জেলায় কোনওরকম উন্মাদনাই নেই। তারউপর তৃণমূল থেকে আসা দলবদলুরা রথযাত্রার দায়িত্ব পাওয়ায় গেরুয়া শিবিরের পুরনো কর্মীদের গোঁসা হয়েছে। জেলা বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, জেলায় রথ এলেই হাওয়া পাল্টে যাবে।
প্রসঙ্গত, রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে জেলায় বিধানসভা ভিত্তিক সভা করারও উদ্যোগ নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। কুমারগ্রামের কামাখ্যাগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের বাবুরহাট, ফালাকাটার ছ’মাইল ও মাদারিহাটে এই সভার স্থান ঠিক হয়েছে। দলের রথযাত্রা কমিটির উত্তরবঙ্গের সহ সংযোজক পদে রাখা হয়েছে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া দশরথ তিরকিকে। বাবুরহাটে দলের রথযাত্রার সভা প্রমূখের দায়িত্বে আছেন আর এক দলবদলু আলিপুরদুয়ার পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের চেয়ারম্যান আশিস দত্ত। জেলায় বিজেপির পুরনো মুখ বলে পরিচিত দলের জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য হেমন্ত রায়। তিনি ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ফালাকাটা কেন্দ্র থেকে দলের টিকিটে লড়েছিলেন। সেই হেমন্তবাবু বলেন, রথযাত্রা সহ দলের যেকোনও কর্মসূচিতে নব্যদের দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সেখানে পুরনোদেরও সঙ্গে রাখা উচিত। শুধুই নব্যরা দায়িত্ব পেলে পুরনো কর্মীরা হতাশ তো হবেনই।
আলিপুরদুয়ার বিধানসভার বাসিন্দা বিজেপির আর এক পুরনো দিনের নেতা বলেন, চোখের সামনে নব্যদের বাড়বাড়ন্ত ও জামাই আদর সহ্য করতে হচ্ছে। তবে এখনই এসব নিয়ে মুখ খুলছি না। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আমরা জোটবদ্ধ হয়ে মিডিয়ার সামনে নিজেদের বক্তব্য জানাব।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, জেলায় বিজেপির পালে কোনওরকম হাওয়া নেই। ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে জেলায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করতেই বিজেপি এই রথযাত্রা বের করছে।
বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার বক্তব্য, কোচবিহার থেকে জেলায় দলের রথ ঢুকলেই দলের পক্ষে হাওয়া উঠে যাবে। রথযাত্রার সভা প্রমুখের দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে দলে কারও কোনও ক্ষোভ নেই। এসব অপপ্রচার।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ তারিখ কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে রথ কুমারগ্রামের দেবেনবাবুর চৌপথি দিয়ে জেলায় ঢুকবে। ১৪ থেকে ১৬ তারিখ জেলায় থেকে ১৭ তারিখ জলপাইগুড়িতে যাবে।