উপনির্বাচনে ভবানীপুরে প্রত্যেক ওয়ার্ডে লিড আনতে জোর দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস

বাসিন্দাদের বোঝানো হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের গুরুত্ব।

September 13, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ভবানীপুরের উপনির্বাচনে (Bhabanipur By Election) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) জেতাতে কোমর বেঁধেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। সব ওয়ার্ডেই চাই লিড। সেই লক্ষ্যেই ঝাঁপিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। যে ৭০ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল তুলনায় দুর্বল, অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে পিছিয়ে ছিল, সেই ওয়ার্ড দু’টি থেকেও এবার জয়ের আশায় তৎপরতা বাড়িয়েছে ঘাসফুল শিবির। এই দু’টি ওয়ার্ডে কার্যত অগ্নিপরীক্ষার সামনে জনপ্রতিনিধিরা।


এই বিধানসভা কেন্দ্রে মোট আটটি ওয়ার্ড রয়েছে। ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪, ৭৭ এবং ৮২। এর মধ্যে দু’টি ওয়ার্ড ছাড়া গত বিধানসভা নির্বাচনে সবকটিতেই লিড পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিশেষ করে ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ের ব্যবধান ছিল ২১ হাজারেরও বেশি। অন্যদিকে, কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের খাসতালুক ৮২ নম্বর ওয়ার্ডও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে পাঁচ হাজারেরও বেশি ভোটে লিড দিয়েছিল। কিন্তু শাসকদলের চিন্তা ৭০ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডকে ঘিরে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই দু’টি ওয়ার্ডে যথাক্রমে ৪ হাজার ৮০০ ও পাঁচ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল ঘাসফুল। গত বিধানসভা ভোটে অবশ্য সেই মার্জিন কমেছে। বিজেপি ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ৯২ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৫৩৭ ভোটে এগিয়ে ছিল। 


তৃণমূলের বেশি চিন্তা ৭০ নম্বর ওয়ার্ডকে নিয়ে। কারণ, এই ওয়ার্ডে প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ ভোটারই অবাঙালি। ভোটের ইতিহাস বলছে, এই ওয়ার্ড বরাবরই বিজেপি’র দিকেই ঝুঁকে রয়েছে। গত পুরসভা ভোটে এই ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন বিজেপি’র অসীম বসু। আদ্যোপান্ত এই কংগ্রেস নেতা অবশ্য পরে তৃণমূলে যোগদান করেন। অসীম বসুর কথায়, আমরা প্রতিনিয়ত জনসংযোগ করি। সেই যোগাযোগকেই আরও দৃঢ় করার চেষ্টা করছি। ‘দিদি’ এবার নিজেই প্রার্থী। যা দলের কাছে অবশ্যই বাড়তি ডিভিডেন্ট। তাছাড়া, যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের দৈনন্দিন সমস্যায় পাশে থাকে, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, তাতে আশা করছি এবার এই ওয়ার্ডের মানুষ আশাহত করবেন না। অন্যদিকে, ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে হিন্দি ভাষাভাষী মানুষের আধিক্য থাকলেও এটি নিয়ে ততটা চিন্তা নেই শাসকদলের। ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর দেবলীনা বিশ্বাসের বক্তব্য, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট। তিনি ভবানীপুরের ঘরের মেয়ে। তাঁর নিজস্ব ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। ফলে যতটুকু মাইনাস রয়েছে, তা এবার প্লাস হয়ে যাবে।  দক্ষিণ কলকাতার দলের সভাপতি দেবাশিস কুমার সব ওয়ার্ডে জয়ের ব্যাপারে একশো শতাংশ নিশ্চিত। তিনি বলেন, দিদি জিতবেন, এ নিয়ে সন্দেহ নেই। আমাদের কাজ রেকর্ড মার্জিনে তাঁকে জেতানো। তবে যে সব জায়গায় আমরা দুর্বল, সেখানে বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিশ্চিত হলেও বিজেপিকে ‘যোগ্য’ জবাব দিতে সব ওয়ার্ডেই লিড চাইছে তৃণমূল। বিশেষ নজর থাকছে আবাসন ও ফ্ল্যাটবাড়িতে। বাসিন্দাদের বোঝানো হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের গুরুত্ব। স্ট্রিট কর্নার, চার-পাঁচ জনের টিম তৈরি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে। বস্তিতেও চলছে জোর প্রচার। তৃণমূলের দাবি, দুয়ারে সরকার প্রকল্পে মানুষ সুবিধা পেয়েছেন। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মত ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সবই উপনির্বাচনের ইউএসপি, প্রচারের মূল হাতিয়ার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen