‘বঙ্কিমদা’ বিতর্কের আবহে নামবদল না ড্যামেজ কন্ট্রোল? লোকভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম গেটের নামকরণ ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা

December 13, 2025 | 2 min read
Published by: Raj

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮.৪৫: ‘বন্দে মাতরম’ গানের সার্ধশতবর্ষ বা দেড়শো বছর উদযাপনকে ঘিরে সাম্প্রতিককালে বারংবার উঠে এসেছে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (Bankim Chandra Chatterjee) নাম। কখনও শ্রদ্ধা, আবার কখনও রাজনৈতিক বিতর্ক সব মিলিয়ে বঙ্কিম-আবেগে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। সেই আবেগে শান দিয়েই এবার বড়সড় সিদ্ধান্ত নিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C. V. Ananda Bose)। লোকভবনের (রাজভবন) একটি গেটের নামবদল করে ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নামে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

শুক্রবার লোকভবনের তরফে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, লোকভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম গেটটি এবার থেকে ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নামে পরিচিত হবে। শনিবারই আনুষ্ঠানিকভাবে এই নামবদল কার্যকর হতে চলেছে। একইসঙ্গে ‘বন্দে মাতরম’ গানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এদিন ‘নিত্যশিখা’র সূচনা করবেন রাজ্যপাল।

রাজভবন সূত্রে খবর, কেবল নামবদলই নয়, বছরভর ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র এবং তাঁর কালজয়ী সৃষ্টি ‘বন্দে মাতরম’-কে সম্মান জানাতে একগুচ্ছ কর্মসূচির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই উদ্দেশ্যে ডঃ এস কে পট্টনায়েকের নেতৃত্বে একটি বিশেষ ‘কোর কমিটি’ গঠন করেছেন রাজ্যপাল (Governor)। পরিকল্পনামাফিক বঙ্কিমচন্দ্রের কর্মস্থল, বিশেষত ব্যান্ডেল ও চুঁচুড়ায় বিশেষ উদযাপনের আয়োজন করা হবে।

বছরভর চলা এই কর্মসূচিতে সামিল হচ্ছে এশিয়াটিক সোসাইটি, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজ, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, অ্যানথ্রোপলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এবং ন্যাশনাল লাইব্রেরির মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলি। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমবেত কণ্ঠে ‘বন্দে মাতরম’ পরিবেশন এবং বঙ্কিম-যুগের ইতিহাস নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজনও থাকছে তালিকায়। সাহিত্যসম্রাটের সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা, সেমিনার এবং ‘বন্দে মাতরম’ পুরস্কার প্রদানের কথাও আগেই ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যপাল।

তবে এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের নেপথ্যে রাজনৈতিক সমীকরণও দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) বঙ্কিমচন্দ্রকে ‘বঙ্কিমদা’ বলে সম্বোধন করায় বিতর্কের ঝড় ওঠে। বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) একে বাংলার মনীষীদের প্রতি অসম্মান বলে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, সেই বিতর্কে প্রলেপ দিতে এবং বিজেপির অস্বস্তি কাটাতে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ হিসেবেই ময়দানে নেমেছেন রাজ্যপাল। শাসকশিবির বরাবরই রাজ্যপালকে বিজেপির প্রতিনিধি হিসেবে চিহ্নিত করে এসেছে। তাই লোকভবনের গেটের নামবদল এবং বঙ্কিম-স্মরণের এই আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন সেই রাজনৈতিক ক্ষতে মলম লাগানোর প্রচেষ্টা কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen