শুল্কের ছোবলে বিপন্ন ভারতের রপ্তানি ও কর্মসংস্থান! মোদী ও ট্রাম্পকে একযোগে আক্রমণ অমিত মিত্রের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:৩০: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি ও ধারাবাহিক শুল্কবৃদ্ধি (tariffs) নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করলেন বাংলার সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ডঃ অমিত মিত্র (Dr. Amit Mitra)। শুক্রবার এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি সরাসরি অভিযোগ তোলেন যে, নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) সরকারের কূটনৈতিক কৌশল ব্যর্থ হয়েছে এবং এর ফল ভুগছে ভারতের রপ্তানি ব্যবসা, বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং শ্রমনির্ভর ক্ষেত্র।
ডঃ মিত্র তাঁর পোস্টে জন মেনার্ড কিনসকে (John Maynard Keynes) উল্লেখ করে বলেন, “ভারতীয় ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন ঝুঁকি (Risk) নিয়ে কাজ করেন, কিন্তু এখন তাঁরা পড়েছেন অনিশ্চয়তার (Uncertainty) মধ্যে।” তাঁর বক্তব্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের ৮৬.৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি এখন বিপদের মুখে।
তিনি ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করেন, প্রথমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) Emergency Powers Act ব্যবহার করে ২৫% ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ চাপান। তারপর রাশিয়ার তেল কেনার জন্য শাস্তি স্বরূপ আরও ২৫% শুল্ক চাপানো হয় ভারতের ওপর।
US Trade Expansion Act, 1962-এর সেকশন ২৩২ অনুযায়ী ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০% শুল্ক বসানো হয়। সর্বশেষে, জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ভারত থেকে রপ্তানি হওয়া ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টযুক্ত ওষুধের ওপর ১০০% শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে ডঃ মিত্র জানান, বিশ্বব্যাপী ফার্মাসিউটিক্যাল ফাইজার (Pfizer), যারা ভারতে পেটেন্ট ওষুধ তৈরি করে আমেরিকায় রপ্তানি করে, তারাও এই সিদ্ধান্তের চাপে নতিস্বীকার করেছে। তারা এখন ডিসকাউন্টেড ওষুধ মার্কিন সরকারের একটি বিশেষ পোর্টালে (TrumpRx.gov) সরবরাহ করছে।
ডঃ মিত্র প্রশ্ন তোলেন, “তাহলে এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অন্যান্য ভারতীয় রপ্তানির ক্ষেত্রে কী করবেন? আবারও অনিশ্চয়তা!”
তাঁর অভিযোগ, “‘নমস্তে ট্রাম্প’, ‘হাউডি মোদী’ বা ‘ইস বার ট্রাম্প সরকার’ ধরণের নাটক ব্যর্থ হয়েছে। ভারতের রপ্তানি ব্যবসা, সাপ্লাই চেইন, MSME খাত এবং কোটি-কোটি শ্রমিকের চাকরি আজ অনিশ্চয়তায়। অথচ কেন্দ্র সরকার এখনও ‘স্কিম’ নিয়ে আলোচনা করছে, তারপর আসবে নিয়ম, আর সেই ফাঁকে আসল সমস্যা থেকে দৃষ্টি ঘোরানো হচ্ছে।” শেষে ডঃ মিত্র মন্তব্য করেন, এটি কেন্দ্রীয় সরকারের নেতৃত্বের “বহুমাত্রিক ব্যর্থতার এক করুণ উদাহরণ।”