অশান্ত বাংলাদেশ, বড়দিনের আগে কলকাতার নিরাপত্তা জোরদারে তৎপর সিপি মনোজ ভার্মা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:২৪: বড়দিনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। আলোয় সেজে উঠেছে পার্ক স্ট্রিট থেকে শহরের অলিগলি। উৎসবের মেজাজে তিলোত্তমাবাসী। কিন্তু উৎসবের এই আনন্দে যাতে কোনওভাবেই বিঘ্ন না ঘটে এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের অশান্তির আঁচ যাতে কলকাতায় (Kolkata) না পড়ে, তার জন্য আগেভাগেই বাহিনীকে কড়া সতর্কবার্তা দিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা।
শনিবার কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) মাসিক ক্রাইম কনফারেন্সে নগরপাল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শহরের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখাই এখন অগ্রাধিকার। বিশেষ করে ওপার বাংলায় শরিফ ওসমান হাদিকে খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রভাব যাতে এপার বাংলায়-বিশেষ করে কলকাতায় না পড়ে, সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে।
বৈঠকে সিপি মনোজ ভার্মা (Manoj Verma) নির্দেশ দেন, শহরের যে সমস্ত এলাকায় বাংলাদেশি নাগরিকদের যাতায়াত বেশি বা যেগুলি ‘বাংলাদেশি পাড়া’ হিসেবে পরিচিত, সেখানে বিশেষ নজরদারি চালাতে হবে। কোনওভাবেই যাতে কোনও গোষ্ঠী বা পক্ষ অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা না করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকে। কোনও গোলমালের আগাম আঁচ পেলেই দ্রুত এবং কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
শুধু বাংলাদেশ প্রসঙ্গই নয়, সামনেই এসআইআর (SIR) সংক্রান্ত শুনানি পর্ব রয়েছে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেও যাতে শহরে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি বা আইনি জটিলতা তৈরি না হয়, সে বিষয়ে শহরের প্রতিটি থানাকে সতর্ক করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ এলাকার পাশাপাশি শহরতলির থানাগুলিকেও সমনয় বজায় রেখে কঠোর নজরদারির কথা বলা হয়েছে।
উৎসবের মরশুম এবং বর্ষবরণের রাতে শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলির ওপরেও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিপি জানান, হোটেলগুলিতে নিয়মিত তল্লাশি বা চেকিং চালাতে হবে। পুরনো হোটেলগুলির লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হয়েছে কি না এবং নতুন হোটেলগুলির বৈধ কাগজপত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
পাশাপাশি, শহরের অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে এদিনের বৈঠকে। অতীতে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গুদামঘরগুলির বেআইনি কাঠামো এবং অপর্যাপ্ত অগ্নিলিনর্বাপণ ব্যবস্থার বিষয়টি সামনে এসেছে। তাই বড়দিনের আগেই শহরের গুদামঘরগুলির লাইসেন্স এবং ফায়ার সেফটি অডিট করার নির্দেশ দিয়েছেন নগরপাল। সব মিলিয়ে, বড়দিন ও বর্ষবরণ যাতে নির্বিঘ্নে কাটে, তার জন্য এখন থেকেই ‘জিরো টলারেন্স’ (Zero tolerance) নীতি নিয়ে প্রস্তুত কলকাতা পুলিশ।